অভিমত

কী আনন্দ ! কী আনন্দ ! লকডাউন গেছে খুলে, উন্মাদনায় ছুটে বেড়াই, করোনার অস্তিত্ব ভুলে !

খোকন কুমার রায়:

এতোটা উল্লসিত হবার বোধ হয় কিছু নেই, আছে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা। দুই মাসের বেশি সময় ধরে যে ভাইরাসটির কারণে গৃহবন্দী থাকার জন্য ছুটি ছিল তা শেষ হয়ে যাওয়ায় আমাদের অনেকের মধ্যে ব্যাপক পুলক ভাব দেখছি। তবে ভাইরাসটি কিন্তু ব্যাপকভাবে বিস্তার ঘটিয়ে চলেছে এবং সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এ অবস্থায় সীমিত পরিসরে গণপরিবহনসহ অফিস-আদালত খুলছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ছুটি বাড়িয়েও কোনো লাভ হতো না, কারণ, বাঁচতে হলে আমাদের কাজ করতে হবে। আর ভাইরাসটি যে সহসাই নির্মূল হয়ে যাবে সে রকম কোনো সম্ভাবনাও নেই এবং কবে নাগাদ নির্মূল হবে সে নিশ্চয়তাও বোধ হয় পৃথিবীর কেউ দিতে পারবে না। কাজেই, ভাইরাসটিকে সাথী করেই মনে হয় আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের সতর্ক হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

আরও পড়ুন: সুড়ঙ্গ শেষের আলো

বিগত প্রায় ছয় মাস যাবৎ বিশ্বব্যাপী ভাইরাস সংক্রমণ হতে মুক্ত থাকার উপায়গুলো প্রচারিত হচ্ছে। আমাদের দেশেও ব্যাপক প্রচারণা হচ্ছে। কিন্তু অবাক হবার বিষয় এই যে, সর্ব শ্রেণীর জনগণ এসব প্রচারণা ও সতর্কীকরণে কর্ণপাত করছে না। তারা আগের মতই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় অবাধে চলাফেরা করছে এবং অতীতের বদ অভ্যাসগুলোও বদলাচ্ছে না। এর মাশুল হয়তো সামনে দিতে হবে আমাদের ব্যাপক ভোগান্তির মাধ্যমে এবং আরো প্রাণের বিনিময়ে। আমরা যদি সচেতন না হই তাহলে কাউকে দোষারোপ করে লাভ নেই।

বিশ্বের কোনো দেশই এ রোগের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করতে পারেনি। সংক্রমণটি বাড়তে থাকলে আমাদের দেশেও সম্ভব হবে না এবং আরো অনেক প্রাণ অকালে চলে যেতে পারে। আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হলেও অনেক ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, যেসব করুণ কাহিনী অভিজ্ঞজনদের অনেকের বর্ণনায় শুনেছি।

কাজেই, আসুন আমরা যেন নিজের ও পরিবারের প্রিয় সদস্যদের কিংবা অন্যান্য সকলের বিপদের কারণ না হই। কাজ করি সতর্কতার সাথে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে- এটাই প্রত্যাশা।

লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক, ধূমকেতু.কম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *