স্বাস্থ্য

দেশের করোনা পরিস্থিতি ‍উন্নতির দিকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: টানা ১৫ দিন দৈনিক করোনা রোগী শনাক্তের হার হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে একটানা দৈনিক করোনা রোগী শনাক্তের হার হ্রাস নিঃসন্দেহে করোনা পরিস্থিতির উন্নতির লক্ষণ। দৈনিক নতুন রোগী শনাক্তের হার যতই হ্রাস পাবে, করোনা পরিস্থিতির ততই উন্নতি ঘটবে। উন্নতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, পরীক্ষিত নমুনা সংখ্যার বিপরীতে করোনা রোগী শনাক্তের হার ছিল ১৩ আগস্ট ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশ, ১২ আগস্ট ২২ দশমিক ৪৬ শতাংশ, ১১ আগস্ট ২৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ, ১০ আগস্ট ২৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ, ৯ আগস্ট ২৪ দশমিক ২৮ শতাংশ, ৮ আগস্ট ২৪ দশমিক ৫২ শতাংশ, ৭ আগস্ট ২৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ, ৬ আগস্ট ২৬ দশমিক ২৫ শতাংশ, ৫ আগস্ট ২৭ দশমিক ১২ শতাংশ, ৪ আগস্ট ২৭ দশমিক ৯১ শতাংশ, ৩ আগস্ট ২৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ, ২ আগস্ট ২৯ দশমিক ৯১ শতাংশ ও পহেলা আগস্ট ২৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আর পরীক্ষিত নমুনা সংখ্যার বিপরীতে করোনা রোগী শনাক্তের হার ছিল ৩১ জুলাই ৩০ দশমিক ২৪ শতাংশ ও  ৩০ জুলাই ৩০ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

অন্যদিকে, ২০২০ সালে করোনায় দৈনিক রোগী শনাক্তের হার প্রতি মাসের প্রথম ও শেষ সপ্তাহে যথাক্রমে এপ্রিলে ৯ ও ১৩ শতাংশ, মে মাসে ১০ ও ২২ শতাংশ, জুনে ২১ ও ২০ শতাংশ, জুলাইয়ে ২১ ও ২১ শতাংশ, আগস্টে ২৫ ও ১৮ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ১৬ ও ১১ শতাংশ, অক্টোবরে ১৩ ও ১২ শতাংশ, নভেম্বরে ১৩ ও ১৭ শতাংশ এবং ডিসেম্বরে ১৫ ও ৮ শতাংশ। এভাবে শনাক্তের হার ২০২১ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ৮ শতাংশ ও শেষ সপ্তাহে তা হ্রাস পেয়ে নেমে আসে ৩ শতাংশে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডীন, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ ধূমকেতু ডটকমকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির প্রকৃত চিত্র জানার বড় পরিমাপক হলো ‘শনাক্তের হার’। পরীক্ষিত নমুনা সংখ্যার বিপরীতে করোনা রোগী শনাক্তের হার বৃদ্ধি পেলে অবনতি এবং হ্রাস পেলে উন্নতির চিত্র। তবে পরীক্ষিত নমুনার সংখ্যা অবশ্যই প্রত্যাশিত সংখ্যায় থাকতে হবে। বর্তমানে দেশে করোনা শনাক্তের জন্য ল্যাবরেটরীর সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরীক্ষিত নমুনার সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে রোগী শনাক্তের হার হ্রাসের ধারাবাহিকতা অবশ্যই আমাদের জন্য ধূমকেতু।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, সার্বিক করোনা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। সবাই টিকা নিলে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আমরা আরো সুফল পাব।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে একটানা দৈনিক করোনা রোগী শনাক্তের হার হ্রাস নিঃসন্দেহে করোনা পরিস্থিতির উন্নতির লক্ষণ। দৈনিক নতুন রোগী শনাক্তের হার যতই হ্রাস পাবে, করোনা পরিস্থিতি ততই উন্নতি লাভ করবে। করোনা নির্মূল করতে হলে টিকা নিতে হবে, মাস্ক পরতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তাহলে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *