কৃষি-মৎস্য

বারি জাতের তরমুজের ভালো ফলনে খুশি পটুয়াখালীর চাষিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: পটুয়াখালীতে এখন অসময়ের তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পটুয়াখালীর আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র উদ্ভাবিত তরমুজের বারি-১ ও বারি-২ জাত কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের পরামর্শে মালচিং পদ্ধতিতে অসময়ের চাষে ভালো ফলন পেয়ে খুশি তরমুজচাষিরা।

গত জুন মাসে জেলার পাঁচটি উপজেলায় ২০ একর জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। নিজস্ব জাতের লাল ও হলুদ তরমুজ চাষে সফলতায় আশপাশের গ্রামের কৃষকেরা বারি-১ ও বারি-২ জাতের তরমুজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কম খরচ ও সারা বছরই আবাদ করা যায় এই জাতের সঙ্গে মালচিং পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

জেলার দশমিনার লক্ষ্মীপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রিপন মণ্ডল (৪৫) নামের এক কৃষকের খেতে বড় বড় আকারের তরমুজ ঝুলছে। উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের পরামর্শে তাঁদের উদ্ভাবিত তরমুজ বীজের ৮০০টি চারা পেয়ে ৪০ শতাংশ জমিতে মালচিং পদ্ধতিকে চাষ করেছেন তিনি। সব মিলিয়ে ২০ হাজার টাকা খরচ হলেও ইতিমধ্যে ৪০০টি তরমুজ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।

রিপন মণ্ডল বলেন, এর আগে শুধু মৌসুমি তরমুজ আবাদ করতেন। কিন্তু এখন তিনি দেশীয় বীজ দিয়ে বছরে তিনবার তরমুজের আবাদ করতে পারবেন। এতে তিনি বারো মাস তরমুজ বাজারে সরবরাহ করতে পারবেন।

কলাপাড়ার কুমিরমারা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করেছেন কৃষক। জমিতে তৈরি করেছেন মাচা। সেই মাচায় এখন থোকায় থোকায় ঝুলছে বিভিন্ন রঙের তরমুজ। তরমুজগুলো জালের থলে দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।

গ্রামের ওমর ফারুক (৩৫) ৬৬ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। তিনি জানান, বিদেশ থেকে দেশে ফিরে বসে না থেকে কৃষিতে নেমেছেন। শুরুতেই উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের পরামর্শে মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ শুরু করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘সাধারণ পদ্ধতির চেয়ে নতুন এই পদ্ধতিতে গাছগুলো তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে। জুন মাসের শুরুতেই আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র থেকে এক হাজার বারি-১ ও বারি-২ জাতের চারা পেয়ে রোপণ করেছি। এখন জমি থেকে আমি তরমুজ সংগ্রহ করছি। অসময়ের এ তরমুজ অত্যন্ত সুস্বাদু। ৪ থেকে ৫ কেজি ওজনের ১৪০০টি তরমুজ ইতিমধ্যে খেত থেকে তোলা হয়েছে। এখনো ১৩০০টি তরমুজ খেতে আছে। ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে খেত থেকেই ক্রেতারা তরমুজ কিনে নিচ্ছেন।’

পটুয়াখালী আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী হাওলাদার বলেন, ‘বারি–১ ও বারি–২ জাতের তরমুজ এ বছর আমরা জেলার বাউফল, কলাপাড়া, দশমিনা ও গলাচিপা উপজেলার কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করেছি। এর আগে কৃষক হাইব্রিড জাতের তরমুজের চাষ করেছেন। কিন্তু আমাদের উদ্ভাবিত জাতের তরমুজ চাষ করে ভালো ফলন পেয়ে কৃষক খুশি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *