ক্যারিয়ার ও চাকরিশিক্ষা ও সাহিত্য

শুধু চাকরির চিন্তা করলে চলবে না, উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তাও থাকতে হবে: শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: করোনা মহামারির সময়ে শিক্ষার্থীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ ও উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশ যাওয়ার পথ সহজ করতে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের চতুর্থ সমাবর্তন অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার আয়োজিত এ সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এ সময় তিনি দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, শুধু চাকরির চিন্তা করলে চলবে না। নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চিন্তাও রাখতে হবে।
সমাবর্তনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর। অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মেসবাহউদ্দিন আহমেদ।
এছাড়া বক্তব্য দেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন, উপাচার্য মো. গোলাম সামদানী ফকির, সহ-উপাচার্য মো. আবদুর রাজ্জাক ও কোষাধ্যক্ষ মো. ফায়জুর রহমান।
সমাবর্তনে ১ হাজার ৪৬৪ জনকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ছয়জনকে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল এবং ১৩ জনকে ভাইস চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল দেওয়া হয়।
সভাপতির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। তারাই আগামী দিনে বাংলাদেশকে উত্তরোত্তর সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। প্রযুক্তিগত দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ইতিমধ্যে আমাদের শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশে সফলতার প্রমাণ রেখেছে, যা সব সময় আমাদের অনুপ্রাণিত করে আসছে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দক্ষ মানবশক্তি তৈরিতে বিশ্বাসী এবং এ জন্য উচ্চশিক্ষার বিকল্প নেই। বর্তমান সরকারও শিক্ষার এই গুরুত্ব উপলব্ধি করে ‘সবার জন্য শিক্ষা’ লক্ষ্যের ওপর জোর দিয়ে আসছে। ইতিমধ্যেই সরকার বিভিন্ন স্থানে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছে। ভবিষ্যতে সব জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে। অনেক সন্দেহ ও সংশয় নিয়ে বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইতিমধ্যেই তারা সেই সংশয় মিথ্যা প্রমাণিত করে নিজেদের প্রমাণ দিয়েছে। আগামীতে তারাও বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে স্থান পাবে- সেই বিশ্বাস আমাদের আছে।’
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, রূপকল্প ২০৪১ ছাড়াও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের নতুন নতুন দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই। অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা তাতে নিঃসন্দেহে বড় সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। এ সময় আগামীতেও ব্লেন্ডিং মুডের শিক্ষাব্যবস্থা চালু রাখার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শুধু চাকরির চিন্তা করলে চলবে না। নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চিন্তাও রাখতে হবে। দীপু মনি বলেন, জ্ঞানার্জনের পথ কখনো শেষ হয় না। নিজের জানার পথ সব সময় খোলা রাখতে হবে। পরিস্থিতি ভালো কিংবা খারাপ হোক, নিজের শিক্ষার দ্বার সব সময় চালু রাখতে হবে। কারণ, মানুষের শিক্ষার সিংহভাগই প্রতিষ্ঠানের বাইরে থেকে অর্জিত হয়।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থীর জীবনে যতগুলো স্মরণীয় দিন আসে, তার মধ্যে অন্যতম হলো সমাবর্তন। তিনি বলেন, ডিগ্রিপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীরা আমাদের ভবিষ্যতের কান্ডারি। তবে প্রত্যেক গ্রাজুয়েটকে মনে রাখতে হবে, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ হলেও জীবনের পাঠশালা তোমাদের প্রতিনিয়ত শেখাবে। তোমাদের নতুন নতুন চিন্তাধারাই সমাজ ও দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
সমাবর্তন বক্তা মেসবাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সমাবর্তনের মাধ্যমে শুধু গ্রাজুয়েশন পর্বের সমাপ্তি ঘটছে না, বরং আজ থেকে জীবনের আরও একটি পর্বের সূচনা হচ্ছে। আর তা হলো ব্যবহারিক জীবন, নতুন চ্যালেঞ্জ নেওয়া ও নিজের অবস্থান তৈরি করার জীবন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *