লাইফস্টাইল

তেল-মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার পর কী করবেন, জেনে নিন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: কোরবানির ঈদে কব্জি ডুবিয়ে মাংস খেতে বাঙালি ভোজন রসিকরা খুব পছন্দ করেন। গরু কিংবা খাসির মুখরোচক রেসিপিগুলো তৈরি করতে তেল-চর্বি-মসলার যে মিশ্রণ থাকে তাতে ডায়েটের ঠাঁই থাকে না খাবার প্লেটে। ওজন বৃদ্ধি, পেটের সমস্যা, হার্টের অসুখসহ শরীরের যে কতো ক্ষতি করে তা বলে শেষ করা যাবে না। তাই বলে কি কোরবানি ঈদে মাংস খাওয়া যাবে না? হ্যাঁ খাওয়া যাবে, তবে পরিমিত। তাহলে জেনে নিন, তেল-মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার পর কী করবেন।

খাওয়ার পর হাঁটাহাঁটি

যেমন গরম তার উপর তেল-মসলাযুক্ত মাংসের খাবার! শরীরের ক্ষতি তো হবেই। তাই খাওয়ার পর অন্তত মিনিট পনের হাঁটুন। দেখবেন শরীর কেমন ঝরঝরে লাগছে। এতে একদিকে যেমন খাবারটা ভালো পরিপাক হয় তেমনি ফ্যাটটা শরীরে জমতে পারে না। তৈলাক্ত খাবারের ফ্যাট তলপেটে জমে। তাই খাওয়ার পর সব সময় ১৫ বা ১০ মিনিটি হাঁটুন। যদি তাও না পারেন, অন্তত ১৫০ কদম তো হাঁটুন। আর ভুল করেও কিন্তু খাওয়ার পর পরই ঘুমাতে যাবেন না। এতে হজমের সমস্যা হয়। শরীরে চর্বি জমে যাওয়ার তীব্র সম্ভাবনা থাকে।

ডেজার্টে থাকুক দই

তৈলাক্ত-মসালাযুক্ত খাবার খাওয়ার পর দই খেলে পেটের আরাম হয়। খাবার সহজে হজম করতে সহায়তা করে দই। দইয়ে রয়েছে অসংখ্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া। এ ব্যাকটেরিয়াগুলো দেহের ক্ষতি করে না বরং হজমে সহায়তা করে। পাশাপাশি দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে দইয়ের ব্যাকটেরিয়া। দইয়ে থাকা পটাসিয়াম রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। পাকস্থলীর নানা সমস্যা দূর করতে ভূমিকা রাখে দই। বিশেষ করে ল্যাকটোজের প্রতি সংবেদনশীলতা, কোষ্টকাঠিন্য, ডায়রিয়া, কোলন ক্যান্সার ও অন্ত্রের সমস্যা দূর করতে কার্যকর দই। আর দেহের চর্বি কমাতে এবং সার্বিকভাবে ওজন কমাতে সহায়তা করে দই।

হালকা গরম পানি পান করুন

হালকা গরম পানি পান করলে পাকস্থলীর কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। কোষ্ঠকাঠিন্য বা শরীর কড়া থেকে রক্ষা করে। হালকা গরম পানি খেলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। ফলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমার সুযোগ থাকে না। এর ফলে তেল-মসলাযুক্ত খাবার শরীরের কম ক্ষতি করতে পারে।

টক ফল খান

অধিকাংশ টক জাতীয় ফলই পেটের গ্যাস কমায় ও বদহজম দূর করতে সহায়তা করে। যেমন লেবুতে আছে সাইট্রিক অ্যাসিড। যা পাকস্থলীর সোডিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি লবণের সঙ্গে বিক্রিয়া করে সোডিয়াম সাইট্রেইট, পটাশিয়াম সাইট্রেইট ইত্যাদি যৌগ তৈরি করে। ক্ষারধর্মী সোডিয়াম সাইট্রেইট যৌগটি বাড়তি হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে তা প্রতিরোধ করে। ফলে বদহজম হয় না। তাই মাংস খাওয়ার পর তেল-মসলা-চর্বির ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে লেবু, কমলালেবু, বাতাবিলেবুর মতো টক স্বাদের ফলগুলো খেতে পারেন। কিংবা বা অন্যান্য ফলের সঙ্গে মিশিয়ে ফ্রুট সালাদ হিসেবে খেলে উপকার পাবেন।

শসা খেতে পারেন

শরীরের বাড়তি চর্বিকে কমিয়ে রাখতে শসা বেশ উপকারী। এরেপসিন নামক অ্যানজাইম থাকার কারণে শসা হজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা সমাধান করে থাকে। শসার রস আলসার, গ্যাস্ট্রাইটিস, অ্যাসিডিটির ক্ষেত্রেও উপকারী। তৈলাক্ত খাবার খাওয়ার এক থেকে দুই ঘণ্টা পর পর কচি শসা খেতে পারেন। এতে উপকার পাবেন। এছাড়া চাইলে পানি, লেবুর রস ও শসার রস একসঙ্গে পরিমাণমতো মিশিয়ে ডিটক্স ওয়াটার তৈরি করে পান করতে পারেন। ডিটক্স ওয়াটার পানে শরীরের ভেতরের টক্সিন ও ক্ষতিকর উপাদান বের হয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *