দিনাজপুর রাজবাড়ি বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের দিনাজপুর জেলার সদর উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত। ‘রাজবাটী’ গ্রামের সন্নিকটে এই স্থানটি “রাজ বাটিকা” নামে বিশেষভাবে পরিচিত। উল্লেখ্য যে, প্রাচীন এই রাজ বাড়িটির নামেই গ্রামের নামকরণ হয়েছে। এটি দিনাজপুর কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল এর দক্ষিনে অবস্থিত।

দিনাজপুর রাজবাড়ি ও রাজ্য রাজা দিনরাজ ঘোষ স্থাপন করেন। কিন্তু অনেকের মতামত পঞ্চদশ শতকের প্রথমার্ধে ইলিয়াস শাহীর শাসনামলে সুপরিচিত “রাজা গণেশ” এই বাড়ির স্থপতি। রাজা দিনরাজ ঘোষ গৌড়েশ্বর গণেশনারায়ণের (১৪১৪-১৪১৮ খ্রি:) অন্যতম রাজকর্মচারী। তিনি ছিলেন উত্তর রাঢ়ের কুলীন কায়স্থ । রাজা দিনরাজের নাম থেকেই রাজ্যের নাম হয় ‘দিনরাজপুর’, যা বারেন্দ্র বঙ্গীয় উপভাষায় পরিবর্তিত হয়ে হয় দিনাজপুর ।

১৬০৮ হতে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত রাজবাড়ীটি ছিল বৃহৎ দিনাজপুর জেলার ঐশ্বর্যের প্রতীক। শুরুর দিকে রাজবাড়ীর অবয়ব এমন না থাকলেও ধীরে ধীরে রাজবাড়ী গড়ে ওঠে তিলোত্তমা হিসেবে। ১৯৫১সালে জমিদারী অধিগ্রহণ এবং প্রজাস্বত্ব আইন বাস্তবায়নের ফলে জমিদারী প্রথার উচ্ছেদ হয়।তখন হতে রাজবাড়ীটি পরিত্যাক্ত হতে শুরু করে। সর্বশেষ জমিদার জগদীশনাথ ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে ভারতের কলকাতায় মৃত্যু বরণ করেন। জমিদারী প্রথা উচ্ছেদের পর হতে রাজবাড়ীর জৌলুস কমতে থাকে। এটি বর্তমানে বিলুপ্ত জমিদারী কীর্তির ধ্বংসাবশেষ মাত্র। রাজবাড়ীর বিভিন্ন স্থাপনাসমূহ হলোঃ

আয়নামহল, রাণী মহল, কুমার মহল, আটচালা ঘর, লক্ষ্মী ঘর, আতুর ঘর, রাণী পুকুর, চাঁপা তলার দিঘী, ঠাকুর বাড়ী, কালীয়া জিউ মন্দির।

কিভাবে যাওয়া যায়:

দিনাজপুর রাজবাড়ী দিনাজপুর শহরের উত্তর-পশ্চিম দিকে ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড মোড় হতে পঞ্চগড় ঠাকুরগাওগামী মহাসড়কের চিরিরবন্দর সংযোগ সড়কের মোড় হতে ১ কিঃমিঃ অটোরিকশায় চড়ে যেতে পারবেন।

ঢাকা থেকে বাস, ট্রেন অথবা আকাশ পথে দিনাজপুর রাজবাড়ি যেতে পারবেন। বাসে বা ট্রেনে গেলে সবচেয়ে সহজ হয়। বাস বা ত্রেন থেকে নেমে ৩০-৫০টাকায় অটোরিক্সায় চড়ে সরাসরি রাজবাড়ি যেতে পারবেন।

আকাশ পথে গেলে, সৈয়দপুর এয়ারপোর্ট থেকে দিনাজপুর শহর পর্যন্ত বাসে বা অটোরিক্সা চড়ে যেতে পারবেন, তবে সেক্ষেত্রে ২০০-৫০০টাকা বেশি খরচ হবে।

রাজবাড়ি গেলে অবশ্যই কান্তজী মন্দির, সুখসাগর, মাতাসাগর ও রামসাগর দীঘি ঘুরে আস্তে ভুলবেন না যেন

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *