ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: পাকিস্তানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন দেশের কূটনীতিক ও বিশিষ্ট নাগরিকরা। এ বক্তব্যের মাধ্যমে একাত্তরে পাকিস্তানের নৃশংস ভূমিকার জন্য বাংলাদেশ সরকার দেশটিকে ক্ষমা চাওয়ার বার্তা দিয়েছে বলেও মনে করছেন তারা। এছাড়া বাংলাদেশে পাকিস্তানের গণহত্যার বিচারের দাবি তোলার এখনই সময় বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

শোষণের চরম অধ্যায়ে পৌঁছে নারকীয় কায়দায় ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানের মাটি দখল করতে, নিরস্ত্র বাঙালির ওপর নৃশংস হামলা চালিয়েছিল বর্বর পাকিস্তানের শাসকরা। যা এখনও বিশ্বে নজিরবিহীন।

রক্তার্জিত স্বাধীনতার ৫০ বছরে পা রাখতে যাচ্ছে সেদিনের সেই পরাধীন ভূমি। উন্নয়ন, আর্থ-সামাজিক বাস্তবতা, জ্ঞান-বিজ্ঞান এমনকি স্বনির্ভরতার নানা সূচকে বাংলাদেশ আজ ছাড়িয়ে গেছে পাকিস্তানকে। বিশ্ব পরিমণ্ডলে মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার এ ‘এমার্জিং টাইগার’।

বৃহস্পতিবার (০৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের নতুন হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী। এ সময় পাকিস্তানের নারকীয় অত্যাচার বাংলাদেশ এখনও ভোলেনি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা দূতকে জানান, পাকিস্তানকে কখনো ক্ষমা করা সম্ভব নয়।

শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তান যে নৃশংসতা চালিয়েছিল, বাংলাদেশ তা ভুলে যেতে পারে না। তিনি বলেন, ‘একাত্তরের ঘটনাগুলো ভোলা যায় না। সেই ক্ষত চিরদিন রয়ে যাবে।’

পরাজিত শক্তির প্রতি শেখ হাসিনার এমন দৃঢ় মন্তব্যের পর নানা মহলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। কূটনৈতিক মহল ও সুশীল সমাজ মনে করছে, তার এ বক্তব্যে মাথা না নোয়ানোর অনুপ্রেরণা পাবে জাতি।

সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. ওয়ালিউর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার প্রতি সম্মান দেখিয়েছেন। সম্মান দেখিয়ে বলেছেন ‘আপনি আসছেন, আপনি আমাদের অতিথি। কিন্তু আপনারা ভুল করেছেন। বাঙালিরা কখনো ভুলবে না এটা।’ এর অর্থ হচ্ছে আপনারা ক্ষমা চান।

তারা বলছেন, এখন উচিত পাকিস্তানিদের গণহত্যার বিচার চাওয়ার জন্য সরকারের আন্তর্জাতিকভাবে মতামত সৃষ্টি করা।

ইতিহাসবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের গবেষক প্রফেসর মেজবাহ কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ বক্তব্য হচ্ছে গোটা দেশের সতেরো কোটি মানুষের প্রাণের কথা।

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, বিভিন্ন দেশের সাথে যোগাযোগ করেছি, তারা কিন্তু এই বিষয়ের সাথে একমত। একাত্তরে গণহত্যাটা পাকিস্তানিরাই করেছিল। কিন্তু সেই গণহত্যা স্বীকৃতির জন্য তো সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেসব দেশের কাছে চিঠি দিতে হবে।

এক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দেশি-বিদেশি শক্তিগুলোকে কাজে লাগানোর পরামর্শ তাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *