মাতৃভূমি

বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ


ব্যারিস্টার সৌমিত্র সরদার :

বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রিয়তম নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলাদেশে শুভাগমন করেছিলেন। ’৭৫-এর ট্রাজেডির পর এটাই ছিল তাঁর প্রথম বাংলাদেশে আগমন। এর পূর্বে তাঁকে দেশে আসতে দেয়া হয়নি।

বাংলাদেশ ধন্য তাদের একজন শেখ হাসিনা আছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনার ৪০ বছর চলছে, যা পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরলতম ঘটনা। তিনি নিজেই নিজের তুলনা।

জননেত্রী শেখ হাসিনা কতটা সাহসী ও আত্মপ্রত্যয়ী তা আমরা প্রতিদিন অনুভব করি। এর মধ্যে দুটো ঘটনা আন্তজার্তিকভাবে স্বীকৃত।

১. ইউনূস সাহেবরা হিলারী পর্যন্ত গেলেন যাতে পদ্মা সেতু না হয়, অনুদান বন্ধ থাকে, কিন্তু তিনি যে বঙ্গবন্ধু কন্যা তা ভুলে বসে আছেন ইউনূস সাহেবরা। বঙ্গবন্ধু কন্যা পদ্মাসেতু নির্মাণ করে প্রমাণ করলেন তিনি লবিংয়ে নয়, কার্য সম্পাদনে বিশ্বাসী। পদ্মা সেতু আজ আমাদের অহংকার। পদ্মার ওপারে ভাংগা ইন্টারসেকশন তো জি-সেভেন পর্যায়ের স্থাপনা!

২. দেশবিরোধী রাজাকারগুলো বাংলার বুকে আস্ফালন করে বলেছিল তাদের কিছু হবে না। কী হয়েছে সবাই জানে। ৩০ লক্ষ বীর শহীদ আর ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে যে বাংলাদেশ, তাতে কিছুটা হলেও আমাদের দায়মোচন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা ছাড়া আর কেউ একাজ করেনি।

৩. বিবিসি ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশের ভয়াবহ বন্যা নিয়ে বলেছিল- বাংলাদেশে খাদ্যাভাবে ২ কোটি লোক মারা যাবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা তা মিথ্যা প্রমাণ করেছেন। ২ জন লোকও মারা যায়নি।

৪. বাংলাদেশ আজ খাদ্যে, মাছে, মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

৫. রেডিমেড গার্মেন্টস রপ্তানিতে আমরা শীর্ষস্থানীয়।

৬. কর্ণফুলী নদীর নীচ দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ শেষ পর্যায়ে।

৭. বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু নির্মাণ।

৮. অচিরেই চালু হবে ঢাকা মেট্রোরেল।

৯. বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ। নিজের উদাহরণ দিই, ১৯৯৬ সালে আমি কলেজে পড়ি। তখন দেখতাম মোবাইল ফোন মন্ত্রীদের হাতে বা বড় কোনো শিল্পপতির হাতে। আমি মোবাইল দেখার জন্য একদিন গিয়েছিলাম!! বিএনপি শুধুমাত্র সিটিসেলকে লাইসেন্স দিয়ে তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানকে দিয়ে মোবাইলের মনোপলি বিজনেস করেছে!! বঙ্গবন্ধু কন্যা ১৯৯৭ সালে গ্রামীণফোনকে লাইসেন্স দিয়ে মোবাইল আমাদের সাধ্যের মধ্যে আনলেন। ২০০১ এর প্রথম দিকে আমারও একটি মোবাইল হলো। সে কি আনন্দ!
আর আজ আমার অতি পরিচিত মাছ বিক্রেতা ফোন দিয়ে বলে, “স্যার হোয়াটসআপ দেখেন। ৬ কেজি দেশী রুইয়ের ছবি দিছি, আহন লাগবো না, লোক দিয়া পাঠাইতেছি, মাছ খাইয়া বিকাশ বা নগদ করবেন”!!

১০. বিদ্যুতে আজ বাংলাদেশ উন্নতির শিখরে। ৯৮ ভাগ বাংলাদেশ আজ বিদ্যুৎ পাচ্ছে।

১১. ভূমিহীনদের জন্য হাজার হাজার ঘর নির্মাণ।

১২. ১৯৯৭ সালের পার্বত্য শান্তি চুক্তি।

১৩. গঙ্গার পানির নায্য হিস্যা প্রাপ্তি।

১৪. প্রায় ৭০ বছর পর ভারতের সাথে শান্তিপূর্ণভাবে ছিটমহল সমস্যার সমাধান। ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশ ফিরে পায়। যা ১৭ হাজার একরের বেশি।

আরো কতশত, লিস্ট শেষ হবার নয়।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ। আসুন তাঁর জন্য প্রাণখুলে দোয়া করি। পরিশেষে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “আকাশ প্রদীপ” কবিতার দুই লাইনের উদ্ধৃতি দিয়ে যবনিকা টানছি।

“অন্ধকারের সিন্ধুতীরে একলাটি ঐ মেয়ে
আলোর নৌকা ভাসিয়ে দিল আকাশপানে চেয়ে।”

লেখক: এ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট ও সদস্য, তথ্য ও গবেষণা উপকমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *