ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, করোনার কারণে দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি তেমনভাবে থমকে যায়নি। কিছুটা স্থবিরতা ছিল, যা ইতিমধ্যে কেটে গেছে। সরকার কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার কাজ করছে। বিশেষ করে মিরসরাইতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর, আড়াইহাজারে জাপান ইকোনমিক জোন ও মাতারবাড়িতে পুরোদমে উন্নয়ন কাজ চলছে। এসব ইকোনমিক জোনে কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে। আমরা সব সময় কর্মসংস্থান নিয়ে কথা বলি। কিন্তু আমি মনে করি না, যে বাংলাদেশে সেরকম হারে বেকারত্ব আছে। কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে বলি, কৃষিখাতে ধান কাটার সময় শ্রমিক পাওয়া যায় না। বেকারত্ব বেশি থাকলে তো অনেক শ্রমিক পাওয়ার কথা। ইন্ডাস্ট্রিতেও দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যায় না। এখনও গার্মেন্টস সেক্টরে দক্ষ শ্রমিকের সংকট রয়েছে। ওষুধ সেক্টরে তেমন দক্ষ শ্রমিকের অভাব আছে। লোক নিয়োগ দেওয়ার পর তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে নিতে হয়। তাই ইন্ডাস্ট্রিতে গভীর বেকারত্ব আছে বলে আমি মনে করি না।

সরকার ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি তৈরি করেছে। এখন আমাদের যেটা করতে হবে, সেখান থেকে ভোকেশনাল ট্রেনিং, ক্যারিয়ার প্লানিং এবং ক্যারিয়ার চয়েস নির্ণয় করতে হবে। গ্রাজুয়েট হওয়ার আগেই এসব চিন্তা করতে হবে। এজন্য গ্রাজুয়েট হওয়ার আগে তার গাইডেন্স দরকার। স্কিল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি সেক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কার আনা দরকার। ইউনিভার্সিটির সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির সমন্বয় দরকার। ইতিমধ্যে অনেক ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বয় শুরু হয়েছে। এটা আরও বাড়ানো দরকার এবং ইন্সটিটিউশনালাইজ করা দরকার।

গ্রাজুয়েট বেকারদের জন্য ভালো একটি কর্মসংস্থানের উপায় হতে পারে ফ্রিল্যান্সিং। সরকার ফ্রিল্যান্সারদের আইডেনটিটি দিয়েছে, রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করেছে। এখন দেশে ১০ লাখ ফ্রিল্যান্সার আছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে গ্রামের বাড়িতে বসেই তারা কাজ করতে পারছে। গ্রাজুয়েট হয়ে যারা চাকরি পাচ্ছে না, তাদের অনেকে কম্পিউটার ট্রেনিং করে ফ্রিল্যান্সার হচ্ছে। তাদের জন্য আইসিটি মন্ত্রণালয় থেকে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাসহ অনেকগুলো উদ্যোগ রয়েছে। ফ্রিল্যান্সারদের ব্যাংক একাউন্ট খোলার সমস্যা দূর হয়েছে। এ পেশায় অনেকে সম্পৃক্ত হচ্ছে। আরেকটা ধূমকেতু হলো, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) সারাদেশে জেলা পর্যায়ে এন্ট্রাপ্রেনারশিপ ট্রেনিং দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলায় প্রায় ২৫ হাজার জনকে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে চার হাজার ইতিমধ্যে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছেন। এরা প্রায় সবাই গ্রাজুয়েট। নতুন উদ্যোক্তা হওয়া এই চার হাজারের প্রত্যেকে যদি দুই জন করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে, তাহলে আরও ৮ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তাদের দেখে অন্যরাও উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ পাবে। এভাবে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির পাশাপাশি যারা ইতিমধ্যে উদ্যোক্তা হয়ে গেছেন, তাদের কিভাবে কাজে লাগানো যায়, সেজন্য কাজ করছে সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *