তথ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমাতৃভূমি

‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ কোনো স্বপ্ন নয়, এটি এখন দিনবদলের গল্প 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: কয়েক বছর আগেও ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ শব্দটা কেমন স্বপ্নের মতো মনে হতো। কিন্তু আজ তা আর শুধু স্বপ্ন নয় বরং পূরণ হওয়া স্বপ্নের স্বাক্ষ্য দেওয়া এবং তারই সাথে দিনবদলের সনদের নাম। আজ শুধু বড় বড় নগর, বন্দরেই নয় ডিজিটাল সেবা পৌঁছে গেছে দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলেও। আজ প্রত্যান্ত গ্রামের মানুষও পাচ্ছে এই ডিজিটাল সেবা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রত্যান্ত অঞ্চলসহ দেশের নানা প্রান্তে পোঁছে দিচ্ছে ডিজিটাল সেবা। ডিজিটাল সেবা কার্যকর করার জন্য সারাদেশে প্রায় ৮ হাজার ডিজিটাল সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে। এইসব ডিজিটাল সেন্টারে ৩শ’র বেশি সেবা পাচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ।

সবুজ পাতায় ছাওয়া বাংলার গ্রামগুলো সোলালি রোদের পরশে যেমন হেসে ওঠে তেমন হাসি যেন ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামবাংলার মানুষগুলোর মুখেও। আর এই হাসিই যেন শোনাচ্ছে দিনবদলের গল্প। গ্রামের মানুষগুলো সহজ-সরল হলেও তাদের জীবনযাপন মোটেও সহজ-সরল ছিলো না। সামান্য কাজের জন্য ছুটে যেতে হতো মাইলকে মাইলে দূরের শহরে। কিন্তু আজ যেন সেই হয়রানির শেষ হয়েছে। ডিজিটাল সেবা বদলে দিয়েছে তাদের জটিল জীবন। এখন তারা গ্রামে বসেই পাচ্ছে শহরের মতো সুযোগ সুবিধা।

এমনই একটি গ্রাম রাজশাহীর হরিয়ান পূর্বপাড়া। এই গ্রামের দিনবদলের গল্পে যুক্ত হয়েছে হরিয়ান ইউনিয়ন পরিষদ। এখানকার ডিজিটাল সেন্টার থেকে প্রায় বিশ ধরণের সেবা পাচ্ছেন গ্রামের মানুষ। গ্রামের মানুষ জানায়- যারা ডিজিটাল সেন্টারে সেবা দিচ্ছেন তারা সবাই দক্ষ। তারা বেশ তাড়াতাড়ি কাজগুলো করে দেন। গ্রামের মানুষ জন্ম-মৃত্যুর সনদ, জমির পর্চা, পাসপোর্টের ফর্ম পূরণ থেকে শুরু করে করোনা টিকার রেজিস্ট্রেশন পর্যন্ত করতে পারেন এই ডিজিটাল সেন্টারে। এমনকি কর্মীরা নিজ হাতে ফর্মগুলো পূরণও করেন দেন বিশেষ করে ইংরেজি ফর্ম।

এখানকার ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে কর্মরত এক কর্মী জানান- কাজগুলোর গতি আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে এবং গ্রামের মানুষও স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে সেবা নিতে আসছেন।

হরিয়ান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মফিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন-“ অনলাইনে যে যে কাজ হয় তার প্রায় সবই আমরা এই ডিজিটাল সেন্টারে করে থাকি”।

তিনি আরো বলেন – “গ্রামের লোকজন আজকাল ডিজিটাল শব্দের মানে আসলে কি সেটাও বুঝতে পারছে এবং তারা এই সেবা নিয়ে উপকৃত হচ্ছে”।

শুধু হরিয়ান ইউনিয়ন নয় একই ভাবে তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ ও এ-২আই’র সমন্বিত উদ্যোগে সারা দেশে প্রায় ৮ হাজার ডিজিটাল সেন্টার গড়ে উঠেছে। এবং ডিজিটাল সেবা মানুষের আরো কাছাকাছি পৌঁছে দিতে সারাদেশে প্রতি দুই কিলোমিটারে একটি করে ডিজিটাল সেন্টার করার কথা ভাবছে তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ।

এর আগে এক অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্রী, জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন- “আপনার বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটারের মধ্যে যাতে সরকারের একটা ডিজিটাল সেন্টার আপনি পান সেটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি”।

এই ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে সারাদেশের মানুষ পাচ্ছে ডিজিটাল সুবিধা। ডিজিটাল সেন্টারের পাশাপাশি ব্রডব্র্যান্ড কানেকশনও আজকাল গ্রামে পৌঁছে গেছে। ফলে কমেছে অনলাইনে কাজ করার নানা হয়রানি। তাই বলাই যায়, “গ্রাম হবে শহর” কথাটি যেন আর স্বপ্ন নয় এখন বাস্তব। তারই সাথে দিনবদলের গল্পে দেশও হাঁটছে পরিপূর্ণ ডিজিটাল হওয়ার পথে।

আরো পড়ুন:

একটি অভিভাবক পোর্টাল তৈরি করা হবে: পলক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *