মাতৃভূমি

বাড়ছে পাটের নানামুখী ব্যবহার, নতুন সংযোজন পাটপাতার চা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: দিনে দিনে বাড়ছে পাটের নানামুখী ব্যবহার। এরই নতুন সংযোজন পাটপাতার চা। সরকারি কয়েকটি উদ্যোগ কাজে না এলেও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের কেউ কেউ পুরোপুরি অর্গানিক পদ্ধতিতে পাটপাতার চায়ের উৎপাদন করছে। আধুনিক টি-ব্যাগ পদ্ধতিতে তা বাজারজাতও করা হচ্ছে। পাটপাতার চায়ের বহুমুখী উপকারের কারণে এটি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কয়েক বছর ধরে নানা উদ্যোগের ফসল পাটপাতার চা।

পাটপাতার চা নিয়ে আট বছর ধরে কাজ করছে খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ক কোম্পানি মহিমা প্রোডাক্টস। জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারে (জেডিপিসি) কোম্পানিটির পাটপাতার চা বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি লাজফার্মা ও কয়েকটি বিপণিবিতানেও তা বিক্রি হচ্ছে। পাটপাতার চা সরকারি প্রতিষ্ঠানও কিনছে। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলনে অতিথিদের জন্য উপহার হিসাবে বাংলাদেশ মহিমা প্রোডাক্টসের পাটপাতার চা পাঠিয়েছে বলে জেডিপিসির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। মহিমা প্রোডাক্টসের উদ্যোক্তা জাকির হোসেন তপু বলেন, দেশীয় পাটের পাতা থেকে শতভাগ অর্গানিকভাবে আমরা পাটপাতার পানীয় বা চা প্রস্তুত করে আসছি। গুঁড়ো পাতা নয় একেবারে স্বাস্থ্যসম্মত টি-ব্যাগ আকারে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, উপকারী এ পানীয়ের ব্যবহার বৃদ্ধি পেলে স্বাস্থ্যগত দিক থেকে মানুষ যেমন উপকৃত হবেন। একইভাবে পাটের ব্যবহারও আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে। এতে আমাদের অর্থনৈতিক সাফল্য আসবে। বিদেশেও আমরা পাটপাতার চা রপ্তানি করতে পারব।

মহিমা প্রোডাক্টসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সংগীতশিল্পী আদনান বাবু বলেন, সরকারিভাবে উদ্যোগগুলোর কি হয়েছে বা হয়নি সেটা আমাদের কাছে কোনো মুখ্য বিষয় নয়। পাটের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিতের কথা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। সেটি আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। পাটপাতার চায়ের উদ্যোগটি সম্প্রসারণ ও প্রসারের জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহযোগিতার আবেদন করেছি। আমরা সরকারের সব ধরনের সহযোগিতা চাই। প্রচারের মাধ্যমে পাটপাতার চা ছড়িয়ে যাক সারা দেশে সেটাই আমাদের উদ্দেশ্য।

জানা গেছে, পাটপাতার পানীয় বা চা বিভিন্ন অফিসে পরিবেশন ও পানীয় হিসাবে জনপ্রিয় করে গড়ে তুলতে গত কয়েক বছর ধরে পাট দিবসের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলে আসছেন। এ বিষয়ে সরকারিভাবে বেশ কিছু প্রকল্প নেওয়া হলেও তাতে খুব একটা সফলতা আসেনি। তবে বেসরকারি উদ্যোক্তারা ইতোমধ্যে সফলতা পেয়েছেন।

পাটপাতার চা পানের উপকারিতা নিয়ে ব্রিটিশ জার্নালে নানা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পাটপাতার চা অ্যান্টি অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ। এটি সেবনে ডায়াবেটিস রোগের বিশেষ উপকার হয়। শরীর ইনফ্লামেশন কমিয়ে ওজন কমায়, ক্যানসার, পেটের বিভিন্ন পীড়া, আলসার, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলস্টেরল নিয়ন্ত্রণে এটি কাজ করে। পাশাপাশি ভালো ঘুম হতে সহায়তা করে। জ্বর, ঠাণ্ডা, ফ্লু নিয়ন্ত্রণ, দৃষ্টিশক্তির প্রখরতা বৃদ্ধি, দাঁতের সুরক্ষা, পায়ের অসাড়তা দূর, অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে এটি অদ্বিতীয়।

আরো পড়ুন:

‘ডাকাতিয়া মডেল’ এখন মাছ চাষের জনপ্রিয় পদ্ধতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *