প্রচ্ছদ

ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে যুক্তরাজ্য

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু বাংলা: দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনা চলার মধ্যেই ফ্রান্সকে সবচেয়ে ভালো, পুরোনো ও ঘনিষ্ঠ মিত্র বলে উল্লেখ করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে আসন্ন বৈঠকে উত্তেজনা হ্রাসের চেষ্টা চালাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

গতকাল শুক্রবার জি টোয়েন্টি সম্মেলনের উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর উড়োজাহাজে বসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন জনসন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রেক্সিট-পরবর্তী জলসীমায় মাছ ধরার অধিকার নিয়ে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই বিরোধ চলছে। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা চুক্তি নিয়েও প্যারিসের ক্ষোভ রয়েছে। দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যকার টানাপোড়েন আরও জোরালো হওয়ার আভাস দিয়ে গত বৃহস্পতিবার একটি ব্রিটিশ মাছ ধরার ট্রলার আটক করে ফ্রান্স সরকার। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে তলবও করে যুক্তরাজ্য।

এর মধ্যেই রোমে আয়োজিত জি টোয়েন্টি সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন জনসন ও মাখোঁ। সম্মেলনের ফাঁকে তাদের দুজনের মধ্যে পূর্বনির্ধারিত একটি বৈঠকও হওয়ার কথা রয়েছে। গতকাল উড়োজাহাজে বসে সাংবাদিকদের দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ বৈঠক নিয়ে কথা বলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ফ্রান্স হলো আমাদের সবচেয়ে ভালো, পুরোনো ও ঘনিষ্ঠ মিত্র বন্ধু ও সহযোগী দেশগুলোর একটি। যে বন্ধন আমাদের ঐক্যবদ্ধ করেছে, এক সুতায় বেঁধে রেখেছে—তা চলমান সম্পর্কগত টানাপোড়েনের তুলনায় অনেক বেশি মজবুত। আর এ কথাগুলোই আমি মাখোঁকে বলব। তিনি অনেক বছর ধরেই আমার বন্ধু।’

এর আগে গতকাল মাখোঁর সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকেও একই ধরনের কথা বলতে দেখা গেছে। বাইডেন বলেন, মাখোঁর মতো এত পুরোনো ও বিশ্বস্ত বন্ধু যুক্তরাষ্ট্রের নেই।

বৃহস্পতিবার এক বন্দরে তল্লাশি চালিয়ে ব্রিটিশ ট্রলারটিকে আটক করে ফ্রান্স। আরেকটি ট্রলারকে জরিমানা করা হয়। ফরাসি কর্তৃপক্ষের দাবি, আটক করা ট্রলারের লাইসেন্স ছিল না। এ দিকে ট্রলারটির মালিক কোম্পানির দাবি, এটি ফরাসি জলসীমায় বৈধভাবে মাছ ধরছিল। ব্রেক্সিট-পরবর্তী যুক্তরাজ্য-ফ্রান্স বিরোধের অংশ হিসেবে ট্রলারটি আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।

ট্রলার আটকের জবাবে বাণিজ্যসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে থাকা জটিলতা নিয়ে আবার এগোনোর হুমকি দিয়েছে যুক্তরাজ্য। বরিস জনসন বলেন, ‘নির্দিষ্ট ইস্যুগুলো নিয়ে কী হচ্ছে, তা নিয়ে আমরা হতভম্ব। যা ঘটছে এবং যা কিছু বলা হচ্ছে, তার ভিত্তিতে আমরা আশঙ্কা করছি যে বাণিজ্য ও সহযোগিতা চুক্তির (ব্রেক্সিট বাণিজ্য চুক্তি) শর্তাবলি লঙ্ঘন হতে পারে। অবশ্যই আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি।’

তবে বরিস জনসন আশা প্রকাশ করেন, চলতি বছরের শুরুর দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যেভাবে সসেজ আমদানি নিয়ে বিরোধ হয়েছিল, তেমন করে মাছ ধরা নিয়ে নতুন দ্বন্দ্ব শুরু হবে না।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জনসন মনে করেন, মাছ ধরাসংক্রান্ত বিরোধের চেয়েও বড় বড় ইস্যু রয়েছে। সেগুলোর দিকে সবার দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, চলতি শতাব্দীতে উষ্ণতা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখার প্রশ্নে দেশগুলো কতটা অগ্রগতি করতে পেরেছে, সেটাই এখন মূল ইস্যু হওয়া উচিত।

আরো পড়ুন:

সোমবার যুক্তরাজ্যের লাল তালিকা থেকে বের হচ্ছে সব দেশ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *