বাংলাদেশে বসবাসরত ৪৫টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবনযাপনে যেমন রয়েছে বৈচিত্র্য, তেমনি রয়েছে স্বকীয়তা। তাদের উৎসব, ধর্ম, শিক্ষা, ভাষা প্রভৃতি নিয়ে ধারাবাহিকভাবে লিখছেন ধূমকেতু ডটকম-এর বিশেষ প্রতিবেদক নিখিল মানখিন। প্রকাশিত হচ্ছে প্রতি শনিবার। আজ প্রকাশিত হলো [৮ম পর্ব]। চোখ রাখুন ধূমকেতু ডটকম-এ।

নিখিল মানখিন, ধূমকেতু ডটকম: বাংলাদেশের সিলেট বিভাগে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী মণিপুরী সম্প্রদায়ের বসবাস। মণিপুরীরা ভাষার দিক থেকে ‘বিষ্ণুপ্রিয়া’ ও ‘মৈতৈ’ প্রধান দুটি শাখায় বিভক্ত। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতির উন্নতি ও প্রযুক্তির ছোঁয়ায় দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে তাদের জীবন-জীবিকা। আধুনিকতার স্রোতে বদলে যাচ্ছে তাদের ধ্যান-ধারণা দৃষ্টিভঙ্গিও। উন্নত সংস্কৃতির এই জনগোষ্ঠী এখন কর্মসংস্থান, কৃষি, শিল্প, বাণিজ্যেও এগিয়ে। নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। সিলেট বিভাগের চারটি জেলা সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলায় মণিপুরী সম্প্রদায়ের অধিকাংশেরই বাস। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ও ভাষা আন্দোলনসহ এ দেশের সব আন্দোলন-সংগ্রামে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাদের প্রধান উৎসব রাসপূর্ণিমা বা রাস উৎসব।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং ধূমকেতু ডটকমকে জানান, ভারত ও বাংলাদেশের একটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ জনগোষ্ঠীর নাম মণিপুরী। তাদের আদি নিবাস ভারতের মণিপুর রাজ্যে। মণিপুরীদের নিজস্ব ভাষা, বর্ণমালা, সাহিত্য এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতি রয়েছে। ভারতের মণিপুর রাজ্যে ও বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় মণিপুরী সম্প্রদায়ের লোক বাস করে।

ভাষা:

মনিপুরী ভাষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ইবুংহাল শ্যামল ধূমকেতু ডটকমকে বলেন, মণিপুরীদের ভাষা খুবই সমৃদ্ধ। ভাষাতাত্ত্বিক দিক থেকে বাংলাদেশের মণিপুরীরা দুটি শাখায় বিভক্ত- মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়া ও মণিপুরী মৈতৈ। মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়া ভাষা ইন্দো-আর্য শ্রেণীভুক্ত আর মণিপুরী মৈতৈ ভাষা তিব্বত-বর্মা শ্রেণীভুক্ত। দুটি আলাদা উৎস থেকে উৎপন্ন হলেও মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়া ও মণিপুরী মৈতৈ ভাষার মধ্যে গভীর মিল রয়েছে।

বিষ্ণুপ্রিয়া ও মৈতৈ ভাষাভাষি জনগণ শতাব্দীর পর শতাব্দী পাশাপাশি সহাবস্থান, পরবর্তীতে একই ধর্ম ও সমাজ সভ্যতার উত্থান তাদের মধ্যে এক অবিমিশ্র সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। কীর্তন, রাসলীলা ও অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি নৃত্য তাল মান লয় একই ধারায় চালিত হয়। তাই মণিপুরী সংস্কৃতি বিভিন্ন স্বতন্ত্র জাতির নিজ নিজ বিশেষ সংস্কৃতির সমন্বয়ের ফল। উভয় ভাষাই মণিপুরের মাটিতে সৃষ্টি হয়।

ইবুংহাল শ্যামল বলেন, মণিপুরী ভাষা হাজার বছর ধরে ভারতের মণিপুর রাজ্যের সরকারি ও রাজ্যভাষা এবং সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ পর্যন্ত শিক্ষাদানের মাধ্যম হিসেবে প্রচলিত হয়ে এসেছে।

এছাড়াও ‘মণিপুরী ভাষা’ মণিপুর বিশ্ববিদ্যালয়, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, নয়াদিল্লীর সাহিত্য একাডেমী এবং মণিপুর, আসাম, দিল্লী, পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত। বাংলাদেশ বেতার, সিলেট কেন্দ্র থেকেও গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে মৈতৈ লোন বা মণিপুরী ভাষায় মণিপুরী অনুষ্ঠান প্রচারিত হচ্ছে।

তাছাড়া ১৯৯২ সালে ভারত সরকার মণিপুরী ভাষাকে ভারতীয় সংবিধানের অষ্টম তফশীলে অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

সংস্কৃতি:

মনিপুরী নেতা নির্মল সিংহ বলেন,মণিপুরীদের সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী। মণিপুরী ছেলেরা বাদ্যযন্ত্র শিক্ষায় অনুরাগী। মণিপুরী সংস্কৃতির উজ্জ্বলতম দিক হলো মণিপুরী নৃত্য যা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত।

মণিপুরীদের মধ্যে ঋতুভিত্তিক আচার অনুষ্ঠান বেশি। বছরের শুরুতে হয় মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়াদের বিষু এবং মৈতৈদের চৈরাউবা উৎসব। আষাঢ় মাসে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা ও কাঙ উৎসবের সময় প্রতিরাত্রে মণিপুরী উপাসনালয় ও মন্ডপগুলোতে বৈষ্ণব কবি জয়দেবের গীতগোবিন্দ নাচ ও গানের তালে পরিবেশন করা হয়।

কার্ত্তিক মাসে মাসব্যাপী চলে ধর্মীয় নানান গ্রন্থের পঠন-শ্রবণ। এরপর আসে মণিপুরীদের বৃহত্তম উৎসব রাসপূর্ণিমা। রাসপূর্ণিমা নামের মণিপুরীদের সর্ববৃহৎ অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশে প্রায় দেড়শত বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে। কার্ত্তিকের পুর্ণিমা তিথিতে দূরদূরান্তের লাখো ভক্ত-দর্শক সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের মাধবপুর জোড়ামন্ডবের এই বিশাল ও বর্ণাঢ্য উৎসবের আকর্ষণে ছুটে যায়। বসন্তে দোলপূর্ণিমায় মণিপুরীরা আবির উৎসবে মেতে উঠে। এসময় পালাকীর্ত্তনের জনপ্রিয় ধারা “হোলি” পরিবেশনের মাধ্যমে মণিপুরী তরুণ-তরুণীরা ঘরে ঘরে ভিক্ষা সংগ্রহ করে।

এছাড়া খরার সময় বৃষ্টি কামনা করে মণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়ারা তাদের ঐতিহ্যবাহী বৃষ্টি ডাকার গান পরিবেশন করে থাকে।

বিয়ে:

সিলেটের মনিপুরী সমাজকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সংগ্রাম সিংহ বলেন, মণিপুরী বিয়ে  নিজস্ব সংস্কৃতি ধারণ ও চর্চার মধ্যে অন্যতম। নিজেদের তৈরী পোশাক, খাবার, নৃত্য শৈলী ও স্বতন্ত্র পারিবারিক ধারা তাদেরকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করেছে। মণিপুরীরা ক্ষত্রিয় এবং সামবেদের অনুসারী। অমণিপুরী ক্ষত্রিয়ের বিবাহ ও শ্রাদ্ধে যেসব মন্ত্র উচ্চারিত হয়, মণিপুরীদের বিবাহ ও শ্রাদ্ধে সেসব উচ্চারিত হয়। পার্থক্য শুধু মণিপুরীদের বিবাহ শ্রাদ্ধে সংকীর্তন অঙ্গীভূত করা হয়েছে, বিবাহে সংকীর্তন সংযোজন বিতর্ক হলেও।

মণিপুরী বিয়েতে কেউ চেয়ারে বসে না, আসন পেতে মাটিতে বসে। বিয়েতে সবার জন্য আলাদা বসার জায়গা থাকে। বিয়েতে কুঞ্জ উভয় সম্প্রদায়েরই  থাকতে হবে। দিনব্যাপী কীর্তন হয় সেখানে। কীর্তনের সময় নাচ হয় এবং সেই তালে নাচে মেয়েরা। মেয়েদের পায়ের তাল দেখে নেন অভিভাবকরা।

আজও মণিপুরী বিয়েতে শ্রীকৃষ্ণের ভজন বাধ্যতামূলক। এর অন্যথা হলে বা অন্য সম্প্রদায়ের কাউকে বিয়ে করলে সমাজচ্যুত হতে হয়। বিয়ের ক্ষেত্রে খুবই কঠোর মণিপুরীদের অনুশাসন।নভেম্বর মাসে এই উৎসবের মূল আকর্ষণ মেয়েরা নিজেদের বাপের বাড়িতে আসেন সপরিবারে।

মণিপুরী নৃত্য :

আদিবাসী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক উজ্জ্বল আজিম বলেন, মণিপুরী নৃত্য নৃত্যশেলীর একটি প্রাচীন ধারা। মণিপুরের সাঙ্গীতিক ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। এই নৃত্যকে মণিপুরের সুপ্রাচীন নৃত্যধারা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি মূলত একটি নৃত্য-উৎসব হিসেবে মণিপুরে পালিত হয়।মণিপুরি লাই শব্দের অর্থ হলো− দেবতা, হারাউবা’ শব্দের অর্থ হলো− আনন্দ-নৃত্য। মণিপুরে বৈষ্ণব ধর্ম প্রাধান্যলাভের আগে, শৈবমতের ব্যাপক প্রভাব ছিল।

বর্তমানে লাইহারাউবা নৃত্য দুই ভাবধারায় পরিবেশিত হয়। এই ভাবধারা দুটি হলো মৈরাঙ লাইহারাউবা ও উমঙ লাইহারাউবা। এই দুটি ধারাতেই পরিবশিত হয় নানা ধরনের কাহিনি নির্ভর নৃত্যগীত। এই নাচে তাণ্ডব ও লাস্য উভয় ধারাই ব্যবহৃত হয়। এই নৃত্য শৈব নৃত্যধারার হলেও, এতে পরবর্তী সময়ে রাসনৃত্যের ভঙ্গীপারেঙ-এর প্রভাব পড়ে এই নৃত্যধারার সঙ্গে জড়িয়ে আছে, মণিপুরের সনাতন ধর্মে বর্ণিত সৃষ্টিতত্ত্ব।

পোশাক হস্তশিল্প:

মনিপুরী ভাষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ইবুংহাল শ্যামল বলেন, মণিপুরীদের পোশাকের বাহার বেশ আকর্ষণীয় ও সুপরিচিত। তাদের নারীদের সুখ্যাতি রয়েছে হাতে বোনা তাঁতের কাপড়ের জন্য।

শ্রীমঙ্গল ও বিশেষ করে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের অনেক গ্রাম মণিপুরী তাঁতশিল্পের জন্য বিখ্যাত। বাংলাদেশের প্রাচীন হস্তশিল্পগুলোর মধ্যে মনিপুরী হস্তশিল্প সু-প্রসিদ্ধ। মনিপুরী হস্তশিল্প অনেকটা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত।

তাঁত শিল্পের সঙ্গে মনিপুরীদের রয়েছে যুগযুগান্তরের সম্পর্ক। মনিপুরী সমাজে মেয়েদের তাঁত শিল্পের অভিজ্ঞতাকে বিয়ের ক্ষেত্রে পূর্বযোগ্যতা হিসেবে দেখা হয়। এমনকি মেয়েরা যখন জন্ম নেয়, একটু বড় হলেই মায়েরা মেয়েদেরকে তাতে বুনন কাজ শেখায় এই উদ্দেশ্যে যে, এই কাজ শিখলে তাদের বিয়ের সময় এটা যৌতুকের একটা অংশ হিসেবে কাজ করবে।

মনিপুরীদের বস্ত্র তৈরির তাঁতকল বা মেশিন প্রধানত তিন প্রকার যেমন, কোমরে বাঁধা তাঁত, হ্যান্ডলুম তাঁত ও থোয়াং। এই তাঁতগুলো দিয়ে সাধারণত টেবিল ক্লথ, স্কার্ফ, লেডিস চাদর, শাড়ি, তোয়ালে, মাফলার, গামছা, মশারী, ইত্যাদি ছোট কাপড় তৈরি হয়। প্রধানত নিজেদের তৈরি পোশাক দ্বারা নিজেদের প্রয়োজন মেটাতেই মনিপুরী সম্প্রদায়ের মধ্যে তাঁত শিল্প গড়ে উঠেছিল। পরবর্তীকালে তাঁত শিল্পে নির্মিত সামগ্রী বাঙালি সমাজে নন্দিত ও ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে নকশা করা ১২ হাত মনিপুরী শাড়ি, নকশি ওড়না, মনোহারী ডিজাইনের শীতের চাদর বাঙালি মহিলাদের সৌখিন পরিধেয়।

ধর্ম: 

মণিপুরী চেরাউবা উৎসব কমিটির সভাপতি সনাতন হামোম বলেন, মণিপুরীরা একদিকে জাঁকজমকভাবে সনাতন ধর্মের বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদি, যেমন রথযাত্রা, রাসপূর্ণিমা, ঝুলনযাত্রা ইত্যাদি পালন করে, একইসঙ্গে তারা পূর্বের ধর্মীয় অনুষ্ঠান লাইহারাওবা, সাজিবু চেইরাওবা ইত্যাদিও পালন করে। তারা সানামাহি, পাকাংবা এবং লেইমারেন প্রভৃতি গৃহ দেবদেবীর পূজাও করে থাকে।

এছাড়া অনেক মণিপুরী আছে যারা একইসঙ্গে আগের বিশ্বাস এবং ইসলাম ধর্ম পালন করে। এদের বলা হয় মেইতেই পানগন বা মণিপুরী মুসলমান। মণিপুরীদের দৈনন্দিন জীবনযাপনে ধর্মবিশ্বাস, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

শিক্ষা :

বাংলাদেশ মণিপুরী সমাজকল্যাণ সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আনন্দমোহন সিংহ বলেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মণিপুরীরা। শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতির উন্নতি ও প্রযুক্তির ছোঁয়ায় দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে তাদের জীবন-জীবিকা। আধুনিকতার স্রোতে বদলে যাচ্ছে তাদের ধ্যানধারণা দৃষ্টিভঙ্গিও। উন্নত সংস্কৃতির এই জনগোষ্ঠী এখন কর্মসংস্থান, কৃষি, শিল্প, বাণিজ্যেও এগিয়ে। নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় ক্রমোন্নতির দিকে তাদের জীবনমান। পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষায় যোগ্যতা ও প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জনের পর সরকারি বেসরকারি অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে সুযোগ হয়েছে মণিপুরীদের। নিকট অতীতে বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ আসনের দায়িত্বেও ছিলেন একজন মণিপুরী।

অতীতে কৃষি ও বুনন শিল্পের ওপর নির্ভরশীল ছিল মণিপুরীদের জীবিকা। তখন লেখাপড়াকে গুরুত্ব দিলেও নানা কুসংস্কারের কারণে চাকরির ক্ষেত্রে অনেক বাধা নিষেধ ছিল। অভাব, দারিদ্র্য থাকলেও একাধিক জরিপে দেখা গেছে, তাদের সমাজে ভিক্ষুক নেই।

মণিপুরী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ধীরেন্দ্র কুমার সিংহ জানান, সময়ের ব্যবধানে মণিপুরীদের স্বাক্ষরতার হার এখন শতভাগ। শিক্ষার হারও আশি শতাংশের ওপরে। প্রত্যন্ত এলাকায় অধিকাংশের বসতি হলেও শিক্ষা অর্জনের লক্ষ্যে তারা এখন শহর-নগরমুখী। বিদেশেও ছুটছেন উচ্চশিক্ষার লক্ষ্যে। মণিপুরী সাহিত্য সংসদের সভাপতি কবি ও লেখক এ কে শেরামের মতে, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে বেশ এগিয়েছে মণিপুরীরা।

আরো পড়ুন:

ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে ‘সাঁওতাল বিদ্রোহ’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *