শিক্ষা ও সাহিত্যশিল্প ও বাণিজ্য

স্কুল-কলেজ খোলায় বেড়েছে পাঠ্যবই বিক্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য খাত পুস্তক প্রকাশ ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রয় সংঘ-এর তথ্য মতে, করোনাকালের গত ১১ মাসে এই শিল্পে ১১ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। পরিস্থিতি বদলালে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পাঁচ বছরের বেশি সময় লাগবে বলে মনে করেন তারা। স্কুল খোলার পর বই বিক্রি শুরু হলেও খুব একটা বেশি নয় বলে মন্তব্য তাদের। নগরীর বই বিক্রয়কেন্দ্র বাংলাবাজার ঘুরে জানা গেল বছরের শেষ দিকে স্কুল খোলায় অনেক পাঠকই আর এ বছর বই কিনছেন না। নতুন বছরে ক্ষতি কিছুটা সামলে ওঠার আশায় বুক বাঁধছেন প্রকাশক ও বিক্রেতারা।

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাবাজারের এক দোকানে কেনাকাটারত এক গৃহিণী জানান, স্কুল খোলার পর শিক্ষকরা কিছু জিনিস কেনার তালিকা দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী কেনাকাটা করছেন তারা। শিক্ষার্থী জানায়, এতদিন বাসায় পড়াশোনার সময়ও তার কিছু বইখাতা কিনতে হয়েছে। তবে তা খুব কম। স্কুল খোলায় বেশ কিছু বইসহ অন্য সামগ্রীও তার কিনতে হলো। প্রায় ২ হাজার টাকার পণ্য কেনেন তারা। অষ্টম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, স্কুল খুললেও তা ঢাকার বাইরে হওয়ায় তার মেয়ে স্কুলে যায়নি। এখন তার জন্য কিছু বইখাতা কেনাকাটা করতে হবে।

এক দোকানি বলেন, ‘আমরা একদম লোকশানের মধ্যে ছিলাম। এখন যে খুব একটা লাভ হচ্ছে তাও না; তবে খরচ আর আয় সমান হচ্ছে বলে চলছে। আরেক দোকানি বলেন, খুব একটা বই বিক্রি হচ্ছে, তা নয়। তবে বেচাকেনা হচ্ছে এই যা। বই খাতা-কলম আর পড়াশোনার অনুষঙ্গ মিলে প্রতিদিন ২০ শতাংশ ক্রেতা হচ্ছে তাদের। বই কিনতে আসছে আরো কমসংখ্যক পাঠক। করোনাকালে যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে পাঁচ বছর সময় লাগবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিক্রেতারা। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পুস্তক বিক্রেতা একটি প্রতিষ্ঠানের এক বিক্রয়কর্মী বলেন, স্কুল খুললেও আগের মতো বই কিনছে না ক্রেতা। আরেক প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি ২০ শতাংশ ক্রেতা লকডাউনের সময়ও বই কিনেছেন। তারা সচেতন অভিভাবক। আর ৪০ শতাংশ মধ্যবিত্ত ও আর ৪০ শতাংশ নিম্নবিত্ত বই কেনেননি। ফলে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে ২০ শতাংশ বই বিক্রি হয়েছে। যেহেতু গত দেড় বছর ধরে স্কুল বন্ধ, এক বছর তারা বই কেনেননি। তাই বছরের শেষ সময় স্কুল খুলেও তারা বই কিনছেন না।’

বাংলাদেশ প্রকাশক এবং বিক্রেতা সংঘের সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন বলেন, ‘এখন ২ থেকে ৩ শতাংশ ক্রেতা বই কিনছেন। স্কুল খোলার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাবাজারে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে কিন্তু তার মধ্যে কত সংখ্যক স্কুল-কলেজের বই কিনতে আসছে তা একটু লক্ষ্য করলেই আপনারা বুঝতে পারবেন। আমাদের ব্যবসায়ীরা বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। আমরা জরিপ করে দেখেছি, করোনার ১১ মাসে আমাদের ১১ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। আর এখনো সম্পূর্ণ রূপে স্কুল খোলেনি। ক্লাসও হচ্ছে কম। সবকিছুর প্রভাব পড়ছে বাংলাবাজারের বিক্রেতাদের ওপর। আমরা প্রধানমন্ত্রীঘোষিত প্রণোদনার টাকাও পাইনি। ক্ষতিগ্রস্তও আমরা বেশি। এখন পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার অপেক্ষা করছি আমরা। নতুন বছরে করোনা কাটিয়ে সম্পূর্ণ রূপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আশায় আছি।’

আরো পড়ুন:

মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রীরা পাবে আয়রন ফলিক এসিড ট্যাবলেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *