মাতৃভূমি

বাংলাদেশকে ভারতের কূটনৈতিক স্বীকৃতির দিনে পালিত হবে ‘মৈত্রী দিবস’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: ঠিক পঞ্চাশ বছর আগে মুক্তিযুদ্ধের ঘনঘটার মধ্যেই, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দিয়েছিল ভারত। এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় ভূটান– আর এর ঠিক পর পরই আসে দিল্লির স্বীকৃতির বার্তা, যেটাকে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর একটি ‘কূটনৈতিক মাস্টারস্ট্রোক’ বলেই গণ্য করা হয়। 

চলতি বছরে মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে সেই ৬ ডিসেম্বর তারিখেই দুই দেশ একযোগে ‘মৈত্রী দিবস’ পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুটো দেশের ঐতিহাসিক মিত্রতা ও বন্ধুত্বকে স্মরণ করে দিনটিতে যাতে ঢাকা ও দিল্লিতে একযোগে বিভিন্ন কর্মসূচী নেওয়া হয়, তারও প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে।

একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাদের কাছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের দিনটিকে গত অর্ধশতাব্দী ধরেই পালন করা হয়ে আসছে ‘বিজয় দিবস’ হিসেবে। এখন থেকে ৬ ডিসেম্বর মৈত্রী দিবস উদযাপনের মাধ্যমে ডিসেম্বর মাসে মুক্তিযুদ্ধের ক্যালেন্ডারে যুক্ত হতে যাচ্ছে আর একটি গৌরবময় মাইলফলক। 

বস্তুত ৬ ডিসেম্বরকে যে মৈত্রী দিবস হিসেবে পালন করা হবে, নীতিগতভাবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল গত মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময়েই। 

২৭ মার্চ ঢাকায় দুই প্রধানমন্ত্রী, শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে শীর্ষ সম্মেলনের পর যে যৌথ বিবৃতি জারি করা হয়, এই সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল তাতেও।

কিন্তু এর পরই ভারতে কোভিড মহামারির বিধ্বংসী দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে – কিছুদিন পর বাংলাদেশেও পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হতে থাকে,  যে কারণে মৈত্রী দিবস কীভাবে, কোথায় উদযাপিত হবে তা নিয়ে বিশদে আলোচনার কোনও অবকাশ পায়নি দুই দেশ। এখন বেশ কয়েক মাসের ব্যবধানে ‘মৈত্রী দিবস’ উদযাপনের উদ্যোগ আবার জোরেশোরে শুরু হয়েছে। 

চলতি মাসের গোড়ার দিকে বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দিল্লি সফরে যান, তখন ভারতে তার কাউন্টারপার্ট অনুরাগ ঠাকুরের সঙ্গে তার বৈঠকেও মৈত্রী দিবস পালনের বিষয়ে দুজনের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। 

আগামী ৬ ডিসেম্বর মৈত্রী দিবসকে স্মরণীয় করে রাখতে ভারত কী কী করতে চায়, তথ্যমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর তার একটা প্রাথমিক রূপরেখা দিয়েছেন এবং হাছান মাহমুদও বাংলাদেশের ভাবনাগুলো তুলে ধরেছেন। এখন সেই সব প্রস্তাব নিয়ে দুদেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে।

দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ‘প্রথম মৈত্রী দিবস পালনের আগে আমাদের হাতে আর খুব বেশি সময় নেই। আড়াই মাস বাদেই এই স্মরণীয় দিনটি উদযাপিত হবে, ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ের কাছেই যার গুরুত্ব অপরিসীম। প্রথমবারের মতো সেই দিবসের উদযাপন যাতে দুদেশের মানুষ বহুদিন মনে রাখেন, দুই দেশ মিলে এখন তারই চেষ্টা চালাচ্ছে।’ 

আরো পড়ুন:

জন্মদিনে মোদিকে ৭১টি লাল গোলাপ পাঠিয়েছেন শেখ হাসিনা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *