আন্তর্জাতিক

দিল্লিতে গড়ে তোলা হচ্ছে বায়োডাইভারসিটি পার্ক

ভারতের রাজধানী দিল্লি ও তার আশেপাশের এলাকা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে পড়ে৷ দিল্লির পাশে গাজিয়াবাদে একটি বায়োডাইভারসিটি পার্ক গড়ে তুলে সেখানকার বাতাসের মান বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে৷

পরিবেশকর্মী বিক্রান্ত তোংগাড় জানান, গাজিয়াবাদের বাতাসের মান খুব খারাপ৷ পানিরও তাই৷ এক টুকরো মাটি পরীক্ষা করলেই দূষণ পাওয়া যাবে৷ পরিবেশ নিয়ে কাজ করা একটি এনজিওর কর্মী হিসেবে আমাদের দায়িত্ব, বাতাস বিশুদ্ধ করার জন্য কিছু একটা করা এবং মাটির গুণ ফিরিয়ে এনে ও প্লাস্টিকের স্তূপ সরিয়ে এখানে বন গড়ে তোলা৷ তাই আমরা এখানে একটা ছোট্ট বায়োডাইভারসিটি পার্ক গড়ে তুলছি।

শুধু ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর একটি গাজিয়াবাদ৷ গাজিয়াবাদের কাছে অবস্থিত দিল্লির নাম প্রায়ই বিশ্বের অন্যতম সবচেয়ে দূষিত রাজধানীর একটি হিসেবে উচ্চারিত হয়৷ তবে দিল্লির কিছু অংশে আপনি প্রকৃতির দেখা পাবেন৷ যমুনা বায়োডাইভারসিটি পার্ক তেমনই একটি জায়গা৷ ৪৫৭ একর এলাকা জুড়ে গড়ে ওঠা এই পার্কে অনেক প্রজাতির গাছ ও বন্যপ্রাণী আছে৷

দিল্লি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বায়োডাইভারসিটি পার্ক প্রকল্পের প্রধান ড. ফায়াজ খুদাসার৷ তিনি বলেন, শহর যত প্রসারিত হবে আমাদের তত বেশি শহুরে বন প্রয়োজন৷

ড. খুদাসার বলেন, আপনি যদি শহরগুলোর দিকে তাকান, যে হারে জনসংখ্যার ঘনত্ব বাড়ছে, মানুষের জন্য দুটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ প্রথমত, শ্বাস নেওয়ার জন্য বিশুদ্ধ বাতাস৷ আর দ্বিতীয়টি, পানযোগ্য পানি৷ দুটিই পর্যাক্রমে অপরিষ্কার হয়ে উঠছে৷ এর কারণ একটাই, জীববৈচিত্র্য কমে যাওয়া৷

যমুনা বায়োডাইভারসিটি পার্কের তুলনায় গাজিয়াবাদে প্রস্তাবিত বায়োডাইভারসিটি পার্ক একটি ছোট প্রকল্প৷ তবে শহরের বিভিন্ন অংশে এমন ছোট প্রকল্প বাস্তবায়ন করা গেলে বড় পরিবর্তন আসতে পারে৷ পরিবেশ রক্ষায় স্থানীয়দের অংশগ্রহণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ৷ এই শিশুরা অনুর্বর এই জমি সবুজ হয়ে উঠতে দেখছে ও এর গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারছে৷

স্থানীয় বাসিন্দা অভিষেক সিং বলছেন, পার্কের কারণে এলাকায় সবুজ আসবে৷ এই গাছগুলো বাতাস বিশুদ্ধ করবে৷ এখানে যে সমস্যা আছে, তা দূর হবে৷ আমরা অক্সিজেন পাব, গাছ থেকে ফলও পাব৷ অনেক লাভ হবে৷

আরেক স্থানীয় বাসিন্দা সাগর বলেন, গাছ লাগানো ও সেগুলো দেখাশোনা করে রাখার কর্মসূচি মাঝেমধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে৷ এখন পর্যন্ত মানুষ শুধু গাছ লাগিয়ে চলে যাচ্ছেন৷ আর এমনও মানুষ আছেন যারা তাদের ছাগল ও ভেড়াকে এসব জায়গায় চরে বেড়াতে পাঠান৷ তারা খেয়াল করেন না, এখানে কী আছে৷ তারা গবাদি পশুদের ছেড়ে দেন৷ সেগুলো গাছ খেয়ে ফেলে৷ মানুষকে উপলব্ধি করতে হবে যে, আমাদের ভালোর জন্যই এখানে গাছ লাগানো হয়েছে৷ গাছ লাগানো ও তা রক্ষায় মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে৷ যত রক্ষা করা যাবে তত ভালো৷

গাছগুলো এখনও ছোট আছে৷ এগুলোকে রক্ষা করে যথাযথ পরিচর্যা করা গেলে ভবিষ্যতে শহরের বাতাস পরিশুদ্ধ করতে সহায়ক হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *