ধর্ম ও জীবন ডেস্ক, সুখবর ডটকম: রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজান। রমজানের তিন দশককে স্বতন্ত্র তিনটি বৈশিষ্ট দ্বারা বিন্যাস করা হয়েছে। গতকাল শেষ হয়েছে রহমতের দশক। রহমতের দশকে মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় ধন্য হয়েছে পৃথিবীবাসী।  পবিত্র রমজানের এগারোতম দিবস আজ সোমবার (৩ এপ্রিল)। রহমতের দশক অতিবাহিত হয়ে শুরু হয়েছে মাগফিরাতের দশক। মাগফিরাত অর্থ মাফ, মার্জনা, আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা ও গোনাহ থেকে নিষ্কৃতি লাভ।

রোজাকে আরবি ভাষায় সওম বা সিয়াম বলা হয়। সিয়ামের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে দহন, জ্বলন। সিয়ামের আরেক অর্থ কোনো কিছু থেকে বিরত থাকা বা বেঁচে থাকা বা পরিত্যাগ করা। শরীয়তের পরিভাষায় খাওয়া, পান করা এবং স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকার নাম সওম।

সুবেহ সাদেক হওয়ার আগমুহূর্ত থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজার নিয়তে একাধারে এভাবে পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকলেই তা রোজা হিসেবে পরিগণিত হয়।

রমজানের তিন দশককে স্বতন্ত্র তিনটি বৈশিষ্ট দ্বারা বিন্যাস করা হয়েছে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রমজানের প্রথম ১০ দিন রহমতের, দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাত লাভের এবং তৃতীয় ১০ দিন নাজাত প্রাপ্তির।

রহমতের দশক শেষ হয়েছে রোববার (২ এপ্রিল)। এ সময় মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় ধন্য হয়েছে পৃথিবীবাসী। এবার রমজানের দ্বিতীয় দশক মাগফিরাত শুরু হলো।

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, ‘আল্লাহতায়ালা বলেছেন, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা রাতদিন অপরাধ করে থাকো। আর আমিই সব অপরাধ ক্ষমা করি। সুতরাং তোমরা আমার কাছে মাগফিরাত প্রার্থনা করো, আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেব। সহিহ মুসলিম ৬৪৬।

মাহে রমজানে সিয়াম সাধনা ইসলামের অন্যতম ব্যতিক্রমী এক ইবাদত; যা কল্যাণে, সওয়াবে ও বিবিধ উপকারিতায় স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে ভাস্বর। ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, আল্লাহ হলেন পরম ক্ষমাশীল। আল্লাহ ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। তাই গোনাহগার বান্দা অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহতায়ালা ক্ষমা করে দেবেন।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করেন- ‘বলুন, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের ওপর জুলুম (গুনাহ) করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হইও না,  নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা আয- যুমার ৫৩)

এই আয়াত দ্বারা মহান আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের যেন আশ্বস্ত করেছেন যে রমজানের রহমতের দশক শেষ হয়েছে তো কী হয়েছে, আল্লাহর রহমত তো ফুরিয়ে যায়নি।

অন্য আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন- ‘তারা আল্লাহর কাছে তওবা করে না কেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে না কেন?  আল্লাহ যে ক্ষমাশীল, দয়ালু।’ (সুরা মায়িদা- ৭৪)

ইসলামি চিন্তাবিদরা বলছেন, তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা দ্বারা আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক মজবুত হয়। তাই প্রত্যেক মুমিনেরই উচিত মাগফিরাতের এই দশকে বেশি বেশি করে আল্লাহর দরবারে তওবা করা এবং গোনাহ মাফের জন্য চোখের পানি ফেলে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা।

এম/

আরো পড়ুন:

ইফতারের যেসব আমল নবিজির (সা.) সুন্নত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *