হাত সাজুক বাহারি চুরিতে
উৎসবে, উপলক্ষে শাড়ির সাথে মিলিয়ে চুড়ি পরাটাই অলিখিত নিয়ম। একদিনে তৈরি হয়নি শাড়ি-চুড়ির এ সংবিধান। নৈমিত্তিক শরীরাবরণ থেকে এখন শাড়ির ডাক পড়ে উৎসবে; পার্বণে। কিন্তু চুড়ির আবেদন ঠিকই রয়ে গেছে। তা সে সালওয়ার-কামিজ, জিন্স-ফতুয়া বা পেলাজো-টপ্স যাই হোক চুড়ি কিন্তু ঠিকই ‘হাতে’ রয়ে গেছে। তাছাড়া সেকেলে মুরুব্বিরা তো বলতেনই হাত খালি থাকলে নাকি ঘরে অলক্ষ্মী আসে। তবু বাধ্য হয়ে নয় সজ্জার অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে চুড়ির আবেদন আজও সবার উপরে।
চুড়ি পছন্দ করে না এমন বাঙালি মেয়ে খুঁজে ভার। তাছাড়া আমাদের উৎসবেরও কি শেষ আছে? পহেলা বৈশাখ, চৈত্র সংক্রান্তি, ঈদ, পূজা, পহেলা ফাল্গুন, একুশে ফেব্রুয়ারি, ভালবাসা দিবস, সরস্বতী পূজার মত উৎসবে চুড়ি ছাড়া একদমই চলে না।
কাঁচের আর রেশমি চুড়ির যুগ পেরিয়ে বাজারে হাজির হাজারো রকমের চুড়ি। ভিন্নতে এসেছে নকশায়, রঙে-ঢং-এ এমনকি উপকরণেও। মেটালের চুড়ি, মাটির চুড়ি, সুতার চুড়ি, জরির চুড়ি , খাঁজকাটা চুড়ি , পাথরের চুড়ি , প্লাস্টিকের চুড়ি, পুঁথির চুড়ি, মুক্তার চুড়ি, স্টিলের চুড়ির চলই বেশি। বিশেষ করে কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়ারাই এসবের ক্রেতা।
এমন মনোহারি দোকান নেই যে সেখানে চুড়ি পাওয়া যায় না। তবে সবচেয়ে সাশ্রয়ে পাওয়া যাবে চকবাজারে।এছাড়াও শাহবাগ, নিউমার্কেট, গাউছিয়া তো আছেই।
সময়ের সাথে যেমন জীবন যাপনের ধরণে পরিবর্তন হয় তেমনি পরিবর্তন হয় তাদের পছন্দের। যেমন কাঁচের আর রেশমি চুড়ির পাশাপাশি তরুণীরা মাটি, মেটালের চুড়িও পরছে সমান তালে। পার্টি বা যেকোনো জমকালো অনুষ্ঠানে মেটালের বা বিভিন্ন ধরনের পাথরের বা মুক্তার চুড়িই প্রথম পছন্দ মেয়েদের। তবে বাঙ্গালিপনায় রেশমি কাঁচের চুড়ি ছাড়া যেন মেয়েদের সাজই থেকে যায় অসম্পূর্ণ। আর প্রাত্যহিক ব্যবহারের জন্য সিটি গোল্ডের চুড়িও বেছে নেন গৃহিণীরা।
তবে ইদানিং আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের বাহারি নকশা করা মাটি ও অন্যান্য আনঅর্থডক্স ম্যাটেরিয়ালের চুড়ি পাওয়া যাচ্ছে। এসব চুড়ি একেবারেই বঙ্গদেশীয়। মাটির চুড়ি গুলো মূলত পাওয়া যায় আড়ং, গ্রামীণ চেক, বিবিয়ানার মত দেশি কিছু ফ্যাশন হাউজে। তবে এসব জায়গায় দামে না পোশালে হেটে আসতে পারেন শাহবাগ, টিএসসি অথবা আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে দিয়ে। চাই কি মনে মনে গানের কলি ভাজতে পারেন, “চুড়ির তালে নুড়ির মালা রিনিঝিনি বাজেলো…”।