ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: ক্রিপ্টোকারেন্সি-বিষয়ক যেকোনো কর্মকাণ্ড অবৈধ ঘোষণা করেছে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে বিটকয়েনের মতো হাজারো ভার্চ্যুয়াল মুদ্রা কার্যত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো দেশটিতে।

পিপলস ব্যাংক অব চায়না এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভার্চ্যুয়াল মুদ্রাসংক্রান্ত ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড হলো অবৈধ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। এতে জনগণের সম্পত্তির নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়।

বিশ্বের বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারগুলোর একটি চীন। দেশটির বড় কোনো ঘটনা ক্রিপ্টোকারেন্সির বৈশ্বিক দরে প্রভাব ফেলে। যেমন নিষিদ্ধকরণের ঘোষণায় বিটকয়েনের দাম এক ধাক্কায় কমেছে দুই হাজার ডলারের বেশি।

ক্রিপ্টোকারেন্সিকে অবৈধভাবে অর্থ পাচারের মাধ্যম মনে করে চীন। দীর্ঘদিন ধরে এমন মুদ্রার ওপর খড়গহস্ত দেশটি। গতকালের ঘোষণা সেটিরই অংশ।

২০১৯ সালে চীনে ক্রিপ্টোকারেন্সির কেনাবেচা সরকারিভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে অনলাইনে বৈদেশিক অর্থ লেনদেনের মাধ্যমগুলোতে তা চালু ছিল। তবে চলতি বছর চীন সরকারকে বেশ কঠোর হতে দেখা গেছে।

অনলাইনে বিটকয়েন ও অন্যান্য ভার্চ্যুয়াল মুদ্রা কেনাবেচায় কোনো ধরনের সুরক্ষা নেই বলে গত মে মাসে সতর্ক করেছিল চীনের রাষ্ট্র পরিচালিত সংস্থা। সরকারি কর্মকর্তারা এ খাতের ওপর ক্রমাগত চাপ বাড়ানোর কথাও বলেছেন।

জুনে ব্যাংক এবং লেনদেনের প্ল্যাটফর্মগুলোকে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লেনদেন পরিচালনা বন্ধ করতে বলে চীন। পাশাপাশি নতুন ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিংয়ে (নতুন মুদ্রা পাওয়ার প্রক্রিয়া) নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

শুক্রবারের ঘোষণায় পরিষ্কার হলো সব ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন বন্ধ করতে চায় চীন। সে ঘোষণায় বলা হয়েছে, যাঁরা অবৈধ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকবেন, তাঁরা অপরাধ করছেন, তাঁদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। বিদেশি ওয়েবসাইটগুলোর অনলাইনে চীনা নাগরিকদের এমন সেবা দেওয়াও অবৈধ কর্মকাণ্ড বলে জানানো হয়।

বিটকয়েনসহ অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মূলে রয়েছে ব্লকচেইন প্রযুক্তি। এ প্রযুক্তিতে যেকোনো লেনদেন অনেক কম্পিউটারে যাচাই হয়ে ডিজিটাল খতিয়ানে লিপিবদ্ধ হয়। এ যাচাই প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার বিনিময়ে নতুন ক্রিপ্টোকারেন্সি মিলতে পারে, যা মাইনিং হিসেবে পরিচিত।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যুতের তুলনামূলক কম দাম এবং সস্তা কম্পিউটার যন্ত্রাংশ প্রাপ্তির কারণে দীর্ঘদিন ধরে চীন ক্রিপ্টো মাইনিংয়ের কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছিল।

চীনে এ মাইনিং এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে ভিডিও গেম খেলোয়াড়েরা মাঝেমধ্যে শক্তিশালী গ্রাফিকস কার্ড সংকটের জন্য মাইনিংকে দায়ী করতেন। ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রসেসিংয়ের জন্য সচরাচর গ্রাফিকস কার্ড ব্যবহার করা হয়।

ক্রিপ্টোকারেন্সির ওপর চীনের খড়গহস্ত হওয়ার প্রভাব এরই মধ্যে দেখা যাচ্ছে। ২০১৯ সালে বিটকয়েন মাইনিংয়ে বৈশ্বিক বিদ্যুৎ খরচের ৭৫ শতাংশ চীনে হতো। চলতি বছরের এপ্রিলে তা কমে ৪৬ শতাংশে নেমেছে।

আরো পড়ুন:

বিদেশে আর নতুন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে না চীন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *