পারফেক্ট হেয়ার স্টাইল ছাড়া আপনার লুক বা সাজসজ্জা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। নিজের ব্যক্তিত্বকে পুরোপুরিভাবে ফুটিয়ে তুলতে মানানসই হেয়ার স্টাইলি প্রয়োজন। মুখের গড়নের সাথে চুলের কাটিং একটি যোগসূত্র রয়েছে।
হালের ফ্যাশনে স্টাইলে নিজেকে প্রেজেন্ট করতে, যেটাই আপনার করতে ইচ্ছা হোক না কেন; সেটা হওয়া উচিত ফেইস শেইপের সাথে মিলিয়ে! কেননা চেহারা অনুযায়ী চুলের কাটিং ও সেটিং ঠিক না থাকলে কোনো স্টাইলই ফুটে উঠবে না। এর জন্য প্রথমেই আপনাকে বুঝতে হবে আপনার মুখের গড়ন কেমন।
ফেইস শেইপ বুঝবেন কি করে?
প্রথমেই আপনার সমস্ত চুল মুখের উপর থেকে সরিয়ে আঁচড়ে বেঁধে নিন। এবার আয়নার সামনে সোজা হয়ে দাঁড়ান, আর খেয়াল করুন আপনার মুখের আকৃতি কেমন। পারফেক্ট হেয়ার স্টাইল পাওয়ার প্রথম শর্তই হচ্ছে মানানসই হেয়ার কাট করানো। চুলের ভলিউম এবং লেন্থ কেমন, সেটার উপরও হেয়ার কাট নির্ভর করে।
রাউন্ড শেইপের জন্য
রাউন্ড বা গোল শেইপের ফেইসের সাথে মিডিয়াম টু লং লেন্থের হেয়ার সবথেকে ভালো মানায়। এমন হেয়ার কাট সিলেক্ট করুন যাতে মুখের দুই পাশের অংশ কম ফোলা লাগবে। আপনার যদি রাউন্ড শেইপের ফেইস কাটিং হয় তাহলে লং বব কাট, সাইড লেয়ার, ব্যাংস কাট খুব ভালো মানাবে।
ওভাল শেইপের জন্
ওভাল বা ডিম্বাকৃতির ফেইস শেইপে প্রায় সব ধরনের হেয়ার কাট স্যুট করে। আপনার চুল যদি স্ট্রেইট হয়, সেক্ষেত্রে বব কাট, ভলিউম লেয়ার, ফ্রন্ট ব্যাংস বা ফুল লেয়ার কাট দিতে পারেন। আর যদি কার্লি হেয়ার হয়, তাহলে পেছনের দিকে স্টেপ কাট বা ইউ শেইপে চুল ছেঁটে নিতে পারেন।
স্কয়ার শেইপের জন্য
স্কয়ার শেইপের ফেইসে চুল একদম ছোট করে ফেললে মুখ আরও বেশি চওড়া দেখাবে। শোল্ডার লেন্থ যেকোনো কাটের সাথে সাইড ব্যাংস কাট দিন। এটা আপনার জ-লাইনকে ঢেকে দিতে সাহায্য করবে। লং লেয়ার বা ব্লান্ট কাট ইজিলি ক্যারি করতে পারেন, এতে মুখের স্কয়ার ভাবটা কম দেখাবে।
লম্বাটে ফেইসের জন্য
লম্বাটে মুখ এমনিতেই একটু শুকনো দেখায়, গালে ফোলাভাব থাকে না। সেজন্য হেয়ার কাটিং এমন হতে হবে যাতে করে মুখ কিছুটা ভারী লাগে। এক ছাটের লম্বা চুলে এই ধরনের ফেইস আরও বেশি ফ্ল্যাট লাগবে। সাইড সোয়েপ্ট লং হেয়ার এড়িয়ে চলুন। আপনার চুল শোল্ডার লেন্থে রেখে সাথে লেয়ার বা স্টেপ কাট দিয়ে নিতে পারেন।
হেয়ার স্টাইলের কিছু টিপস
আপনার রুচি ও আভিজাত্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটে আপনি নিজেকে কীভাবে উপস্থাপন করেছেন সেটার মাধ্যমে। পার্সোনালিটিকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে এমন হেয়ার স্টাইল বেছে নিতে হবে। স্টাইলিংটা এমন হওয়া উচিত যেটা আপনার পারসোনালিটিকেও পুরোপুরি কমপ্লিমেন্ট করবে।
আপনি কোন পেশায় আছেন, আপনার রেগুলার সিডিউল কেমন, আপনার আশেপাশের পরিবেশ সবকিছুই বিবেচনায় রাখবেন।
ইউনিভার্সিটি বা অফিসে যাওয়ার জন্য পনিটেল ও ফ্রন্ট পাফ অনেকেই প্রিফার করতে পারেন। একটু ক্যাজুয়াল থাকতে চাইলে মেসি বান বা সাইড ব্রেইড করে নিতে পারেন। আবার ছোট চুল থাকলে ছেড়েও রাখতে পারেন। আপনি যেই স্টাইলই করুণ না কেন, সেটা যেন আপনার কাজে বাঁধা সৃষ্টি না করে, বরং আপনার নিজস্ব স্টাইল ও ব্যক্তিত্বকে যাতে ফুটিয়ে তোলে এবং আপনি যেন কমফোর্ট ফিল করেন।
হেয়ার সেটিং করার সময় আপনার বয়সকে সবসময়ই প্রাধান্য দিতে হবে। টিনেজের হেয়ার স্টাইলের সাথে মধ্যবয়সী একজনের হেয়ার সেটিং কিছুটা হলেও আলাদা হওয়া উচিত।
পোশাকের সাথে মানানসই হেয়ার স্টাইল সিলেক্ট করতে হবে। শাড়ীর সাথে বা ট্র্যাডিশনাল লুকের সাথে খোঁপা, ব্রেইড হেয়ার স্টাইল খুব ভালো মানায় অথবা চুল স্ট্রেইট করে ছেড়েও রাখতে পারেন।
কামিজ ও ওয়েস্টার্ন আউটফিটের সাথে লুজ কার্ল, সাইড বান, ফ্রেঞ্জ বেনি করতে পারেন কিংবা সুন্দর একটা হেয়ার কাট দেওয়া থাকলে খোলা চুলেই ভালো লাগে দেখতে।
অনুষ্ঠানের ধরণ বুঝে হেয়ার স্টাইল ঠিক করতে হবে। কোনো গর্জিয়াস পার্টি হলে হেয়ার স্টাইলে আপনি আপন বৈটিত্র আনতে পারেন। আপনার যদি স্টেইট হেয়ার হয়, তাহলে কার্ল করে নিয়ে স্টাইলিং করতে পারেন। আর যদি এমনিতেই আপনার চুল কোঁকড়া হয়, তাহলে স্টেইটনার দিয়ে একটু টেনে নিন, চটজলদি লুকে একটা চেঞ্জ চলে আসবে।
ফ্রন্ট হেয়ার স্টাইল কিন্তু খুবই ইম্পরট্যান্ট। সময় কম থাকলে পাফ করে নিয়ে ছেড়ে রাখুন বা ব্লো ড্রাই করে নিন। নানা ধরনের স্টাইলিশ হেয়ার ব্যান্ড বা অ্যাকসেসরিজ দিয়ে চুলের সাজে ভিন্নতা আনা যেতে পারে। তবে ফেইস শেইপ অনুযায়ী ফ্রন্ট হেয়ার সেটিং ঠিক করতে হবে। যেমন রাউন্ড শেইপের ফেইস হলে সামনের চুল পাফ করে বাঁধলে, এতে মুখ আরও গোল লাগবে। সেক্ষেত্রে এক সাইডে সিঁথি করে চিরুনি দিয়ে সামনের চুল সেট করে নিতে পারেন।