নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: লকডাউনের মধ্যেই খোলা রয়েছে ব্যাংক বিমাসহ জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এ ছাড়া গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন দোকানপাটও খোলা রয়েছে। বলা ছিল এসব অফিস কর্তৃপক্ষ কর্মীদের নিজস্ব পরিবহন সার্ভিসের মাধ্যমে আনা নেওয়া করবে। কিন্তু বাস্তবে তার কিছুই দেখা যায়নি। পরিবহন না থাকায় উল্টো এসব কর্মীরা পড়েছেন ভোগান্তিতে। রিকশাও নিচ্ছে তিন থেকে চারগুণ ভাড়া। তাই একমাত্র ভরসা ভ্যান। ভ্যান গাড়িতে করেই সকালের অফিস সময়ে অনেকেই গন্তব্যে যাত্রা দিয়েছেন। এতে ভোগান্তিও কম পোহাতে হয়নি।
বুধবার (৭ জুলাই) সকাল থেকে নগরীর ফকিরাপুল, রাজারবাগ, মালিবাগ, চৌধুরী পাড়া, বাড্ডা, দৈনিক বাংলা, বাংলা মোটর, কাওরান বাজার, মগবাজার, মিরপুর, কুড়িল, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে। এসব এলাকায় ভ্যান সার্ভিসের পাশাপাশি ব্যক্তিগত বাহনের উপস্থিতিও অনেক বেশি দেখা গেছে। তারা জানিয়েছেন, অফিস যাওয়ার জন্যই বাসা থেকে বের হয়েছে। গণপরিবহন না পেয়ে হেঁটে কিংবা ভ্যান সার্ভিসে করেই তাদের এই যাত্রা।
খিলগাঁও রেলগেট এলাকা দেখা গেছে খালি রিকশা পাচ্ছেন না অনেকেই। অন্য দিনের তুলনায় আজ যাত্রীর সংখ্যাও অনেক বেশি। রিকশা ভাড়া চায় দ্বিগুণ। এসময় বেশ কিছু ভ্যান যাত্রী পরিবহন করছে। প্রতিটি ভ্যানে ৬-৭ জন যাত্রী নিচ্ছে। খিলগাঁও রেলগেট থেকে রাজউক ভবন পর্যন্ত ভাড়া নিচ্ছে জনপ্রতি ৪০ টাকা। আর এই পথ কিছুটা ফাঁকা থাকলেও রিকশা ভাড়া চাচ্ছে ১০০ টাকা। তায় বাধ্য হয়েই ভ্যান গাড়িতে করে অফিসে যাত্রা দেন কর্মজীবী মানুষ।
মতিঝিলের একটি ব্যাংকে চাকরি করেন ইসরাফিল আলম। তিনি বলেন, রিকশা অনেক বেশি ভাড়া চায়। তাই দৈনিক বাংলা পর্যন্ত ভ্যানে করে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি। এই পথের ভাড়া ৩০ টাকা। এর পরেও কিছুটা সাশ্রয় হবে। এতো টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে দিলে তো চলে না। প্রতি মাসেই যাতায়াত ভাড়া অনেক বেশি চলে যায়।
আফরিনা আক্তার নামে এক নারী বলেন, এক সময় ভ্যানে ওঠতে লজ্জা পেতাম। এখন আর লজ্জা হয় না। কারণ করোনা এখন মধ্যবিত্তদের লজ্জাও তুলে দিচ্ছে। কোনও উপায় নেই। যে টাকা বেতন পাই তার অর্ধেক চলে যায় রিকশা ভাড়া। এখন ভাবতেছি প্রতিদিন যদি এই দামে ভ্যান সার্ভিস পেতাম তাহলে ভ্যানে করেই অফিসে যেতাম।
এদিকে লকডাউনের সপ্তম দিনে রাজধানী ঢাকার সড়কগুলোতে মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে। গত ছয় দিনের তুলনায় আজ কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা কিছুটা বেশি দেখা গেছে। ট্রাফিক সিগন্যালগুলোতেও বেশি ভিড় রয়েছে। পুলিশের সিগন্যাল ছাড়া অতিক্রম করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া নগরীর দু’চারটি চেকপোস্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারী কিছুটা কম দেখা গেছে। তবে বিশেষ বিশেষ পোস্টে কড়কড়ি ছিলো চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রাজারবাগে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য মামুন বলেন, অনেক ধরণের অফিস খোলা। রিকশা বেশি ভাড়া চায়। সে কারণে অনেক স্মার্ট মানুষকেও ভ্যানে করে অফিসে যেতে দেখছি।