ফেসিয়াল করা নেই বলে হঠাৎ কোন পার্টি, অথবা কোনো বিয়ের দাওয়াতে আমরা যেতে চাই না এবং এই ধরনের সমস্যাগুলো প্রতিনিয়তই দেখা যায়। সময়ের অভাবে সবসময় পার্লারে গিয়ে ঠিকমত ত্বকের যত্ন নেওয়া হয়ে উঠে না। তাই বলে পার্টি তো মিস করা যাবে না। বিশেষ করে টিন এজারদের মধ্যে এগুলো অনেক বেশি দেখা যায়। ত্বক আমাদের শরীরের সব লেয়ারকে ঢেকে রাখে এবং এটা শরীরের সবচেয়ে পাতলা অংশ । এজন্য সূর্যের আলো, পরিবেশ দূষন এবং অন্য সব রোগ যেগুলো ত্বকের ক্ষতি করে সেগুলো থেকে ত্বককে রক্ষা করা উচিত। এসব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এবং দ্রুত ফর্সাভাব বাড়ানোর জন্য আমি কিছু প্রধান উপাদান নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি যার সাহায্যে আপনারা যেকোনো সময় সহজেই উজ্জ্বল স্কিন এবং ফর্সা ভাব পেতে পারেন। আজকাল বেশিরভাগ মানুষই বাইরে কাজ করে ফলে সারাদিনই তাদের বাইরে থাকতে হয়। ফলে অনেক সময় নিয়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু চাইলে পার্লারে না গিয়েও বাড়িতে বসেই হাতের কাছের কিছু উপকরণ দিয়ে চেহারায় নিয়ে আসতে পারেন তাৎক্ষনিক ফর্সাভাব।
১/ চালের গুঁড়া মুখের স্ক্রাব হিসেবে অনেক ভালো কাজ করে। এক কাপ চায়ের পানি ঠাণ্ডা করে নিন। এবার এর সাথে ২ টেবিল চামচ চালের গুঁড়া এবং আধা চামচ মধু মিশিয়ে পেস্ট করে মাস্ক এর মত করে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ২০ মিনিট পর হাত দিয়ে সার্কুলার ভাবে ম্যাসাজ করে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এতে ইন্সট্যান্ট ত্বকে ফর্সাভাব আসবে।
২/এক টেবিল চামচ ওটস পানিতে ভিজিয়ে ভালো ভাবে পেস্ট করে নিন। এবার এর সাথে এক টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। আপনার ত্বক যদি সেন্সিটিভ হয় তাহলে লেবুর রসের সাথে একটু পানি মিশিয়ে নিতে পারেন।
৩/২ টেবিল চামচ আটা, আধা চামচ হলুদ, ১ টেবিল চামচ লেবুর রস এবং একটু দুধ একসাথে ভালো ভাবে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এবার এটাকে ৫ মিনিট মুখে ঘষে ঘষে লাগিয়ে ২০ মিনিট শুকানোর জন্য অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এতে মুখের ময়লা কেটে গিয়ে মুখ উজ্জ্বল দেখাবে।
৪/যেকোনও ধরনের পার্টি তে যাওয়ার আগে একটা কলা চটকে, তার সাথে পাকা পেঁপে মিশিয়ে ভালো করে পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর সেটা পুরো মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন। তারপর মুখ ধুয়ে দেখুন আপনার কাঙ্ক্ষিত উজ্জ্বলতা।
৫/একটা টমেটোর রস এর সাথে একটু হলুদ মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এবার এটাকে মুখে লাগিয়ে অপেক্ষা করুন যতক্ষণ না এটি পুরোপুরি শুকিয়ে যায়। এরপর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এটি কিছুক্ষণের মধ্যে গায়ের রঙ উজ্জ্বল করার ক্ষেত্রে বহুল প্রচলিত একটি পদ্ধতি।
৬/কমলার খোসা রোদে শুকিয়ে নিন। এবার এটাকে গুঁড়ো করে এক কাপ ফ্রেশ টকদই এর সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর মুখ ধুয়ে নিন। এতে আপনার ত্বকের ইন্সট্যান্ট ফর্সাভাব এর সাথে সাথে ত্বকে উজ্জ্বলও হবে।
৭/এক চামচ কাঁচা দুধ এর সাথে এর চামচ মধু ও কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে পরিষ্কার মুখে লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন। দুধ এবং লেবুর রস ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করে দেয়। মুখে লেবু লাগানোর কারণ হল এটি ব্লীচের একটি প্রধান উপাদান। এটি মুখের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনবে।
৮/কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই সহজলভ্য কিছু উপাদান যেমন গ্লিসারিন, শশা, গোলাপজল আপনার ত্বককে খুব দ্রত উজ্জ্বল এবং সুন্দর করে দিতে পারে। কয়েক টুকরা শশার সাথে পরিমাণ মত গোলাপজল এবং গ্লিসারিন মিক্স করে পেস্ট করে ঘুমা্নোর আগে মুখে লাগিয়ে রাখতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন পেস্টটি খুব বেশি পাতলা না হয় অথবা ঘন না হয়। সকালে ঘুম থেকে উঠে তারপর মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।
৯/ত্বকে আলুর রস লাগালে মুখের পোড়াভাব দূর হয় এবং তাৎক্ষনিকভাবে মুখের উজ্জ্বলতা ফিরে আসে।
১০/তৈলাক্ত ত্বকের জন্য লেবুর রস এর সাথে পেঁপে মিক্স করে মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। রঙ পরিষ্কার হবে। এবং মুখের তেলতেলে ভাব কেটে যাবে। ফলে আপনাকে ফর্সা দেখাবে।
১১/ডিমের সাদা অংশ ভালো ভাবে ফেটে নিয়ে মুখে লাগান। এতে স্কিন অনেক নরম ও উজ্জ্বল হয়।
১২/জিঙ্ক এবং ল্যাক্টিকএসিড স্কিন এর জন্য অনেক ভালো। তাই টক দই ভালো ভাবে পেস্ট করে মুখে লাগিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পর মুখ ধুয়ে দেখুন ইন্সট্যান্ট ফর্সাভাব।
১৩/মুখের স্কিন এর ক্ষেত্রে গোলাপজল একটি গুরুত্বপুর্ন উপাদান। প্রতিদিন তুলায় গোলাপজল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। রঙ ফর্সা হবে তাৎক্ষণিকভাবে।
আমরা সবাই চাই নিজেদের সুন্দর দেখাতে কিন্তু আলসেমি হোক আর সময়ের অভাবেই হক না কেন নিজেদের পরিপূর্ণ যত্ন নিতে আমরা হই। তাই কয়েক মিনিটের ব্যবধানে নিজের চেহারায় চমক আনতে উপরের টিপসগুলোর জুড়ি নেই।