অর্থনীতি

চলতি বছরে চট্টগ্রাম বন্দরের সব সূচকে রেকর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: চট্টগ্রাম বন্দর চলতি বছরে সব সূচকের রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এ বন্দর কনটেইনার হ্যান্ডলিং, কার্গো হ্যান্ডলিং এবং জাহাজ খালাস বিগত বছরের চেয়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক করেছে। বছর শেষ হওয়ার চার দিন বাকি থাকতে গত সোমবার পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর ৩১ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৮ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে।

আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তা বেড়ে প্রায় ৩২ লাখ ১০ হাজারে দাঁড়াবে বলে জানা যায়। অথচ ২০২০ সালে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সংখ্যা ছিল ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭৭টি। ২০২১ সালে প্রায় ৩ লাখ কনটেইনার বেশি হ্যান্ডলিং হচ্ছে।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম বন্দর বাল্ক কার্গো (খোলা পণ্য) হ্যান্ডলিংয়েও রেকর্ড করেছে। চলতি বছরের ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ১১ কোটি ১৪ লাখ ৬৪ হাজার ৮৫৮ মেট্রিক টন। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তা প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টনে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অথচ গত ২০২০ সালে কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছিল ১০ কোটি ৩২ লাখ ৯ হাজার ৭২৪ টন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ বছর কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ প্রায় সোয়া কোটি টন বেড়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ খালাসের সংখ্যায়ও রেকর্ড হয়েছে। বন্দরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন জেটিতে জাহাজ এসেছিল ৪ হাজার ১৩৩টি। আগামী ৩১ ডিসেম্বর চার দিনে পর্যন্ত আরো ৪০-৫০টি জাহাজ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে, গত ২০২০ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ এসেছিল ৩ হাজার ৭২৮টি।

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার, কার্গো এবং জাহাজ সংখ্যা সর্বোচ্চ হলেও কোনো প্রকার জাহাজ জট কিংবা কনটেইনার জট তেমন একটা দেখা যায়নি। বিশ্বব্যাপী করোনা প্রাদুর্ভাব চরম অবস্থা কেটে ওঠার পর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনেক দেশের তুলনায় ভালো অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত। গত এক বছরের পরিসংখ্যানে বিগত সময়ের চেয়ে ব্যাংকে ঋণপত্র (এলসি) খোলার পরিমাণ শতকরা ৬৪ ভাগ বেড়েছে বলে জানা যায়। আমদানির সঙ্গে সঙ্গে রপ্তানির পরিমাণও শতকরা ২০ থেকে ২৫ ভাগ বেড়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সব সূচকে প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অনেকটা দিকনির্দেশনা পাওয়া যায় বলে বন্দরের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান।

করোনা মহামারির পূর্বাপর শ্রমিক-কর্মচারী এবং কর্মকর্তাগণ মোটামুটি স্বাভাবিক নিয়মে বন্দরের কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছেন। চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মো. শাহজাহান ইত্তেফাককে জানিয়েছেন, সব কর্মকাণ্ড সর্বস্তরের লোকজনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় সম্ভব হয়েছে। এখানে বন্দরের লোকজন ছাড়াও বন্দর ব্যবহারকারী লোকজনের সর্বাত্মক সহায়তায় রেকর্ড অতিক্রম করা সম্ভব হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সব সূচক সর্বোচ্চ পর্যায়ে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই পৌঁছায় বলে ব্যবসায়ীগণ সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন। জাহাজ ও কনটেইনার জট তেমন একটা না থাকায় আমদানি ও রপ্তানিকারকগণকে অতিরিক্ত চার্জ বা ডেমারেজ চার্জ দিতে হয়নি। যথাসময়ে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকগণের পণ্য গন্তব্যে পৌঁছেছে। ফলে দেশের বিশাল অঙ্কের অর্থের সাশ্রয় হয়েছে।

আরো পড়ুন:

১০০ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়াচ্ছে বৈশ্বিক অর্থনীতির আকার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *