https://youtu.be/cWNcHMHcFKo

আপনার চেহারার মাধ্যমে আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে অনেক কিছু বোঝা যায়।ফাটা ঠোঁট,শুষ্ক ত্বক ও বলিরেখার মত স্বভাবিক সমস্যাগুলো খুব সহজেই দূর করা সম্ভব। কিন্তু অনেক ক্ষেএে এই লক্ষণগুলো হতে পারে নীরব রোগের উপসর্গ। আর এর জন্য ত্বকের কোন সমস্যা বিশেষত চেহারায় প্রকাশিত হয় এমন কোন লক্ষণকে সৌন্দর্য সমস্যা ভেবে বা বয়সকে দোষ দিয়ে যাবেন না। ডাক্তার যখন কোন রোগীর চোখে চোখ রেখে কথা বলে থাকেন তখন শুধুমাত্র সংযোগ স্থাপনের জন্যই এমনটা করেন। চেহারার নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য সমস্যার সূত্র হিসেবে  প্রকাশিত  করা হয়। তাহলে আসুন জেনে নেই চেহারায় প্রকাশিত এমন কিছু উপসর্গের বিষয়ে।

স্বাস্থ্য সমস্যা নির্ণয়ে চেহারা

১। অসময়ের বলিরেখা

মুখের বলিরেখা কেউই পছন্দ করেনা। যদি বয়স হয় তাহলে এটা হওয়া অনিবার্য। কিন্তু অসময়ের বলিরেখা হওয়ার অর্থ হচ্ছে সঠিক ভাবে ত্বকের যত্ন না নেওয়া মহিলাদের ক্ষেত্রে অকালবার্ধক্যের বা বলিরেখা পড়ার প্রধান উপায় হল অস্টিওপোরোসিস। ফিনিক্স এর ক্রোনোস লঞ্জিভিটি রিসার্চ ইন্সটিটিউট এর এক গবেষণায় জানা যায় যে, অসময়ের বলিরেখা ও ত্রুটিপূর্ণ হাড়ের ঘনত্ব মহিলাদের আর্লি মেনোপোজ দশার সাথে খুবই ঘনিষ্ঠ ভাবে সম্পর্কযুক্ত। তাছাড়াও পানিশূন্যতার কারনেই ত্বকের ইলাস্টিসিটি কমে গেলেও অসময়ের বলিরেখা দেখা দিতে দিবে। ভিটামিন ডি এর ঘাটতির ফলেও এমন হতে পারে। ভিটামিন ডি এর মাত্রা অধিক হলেও ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে থাকে।

২। ফেসিয়াল হেয়ার

মহিলাদের মুখে অবাঞ্ছিত চুলের উপস্থিতি খুবই বিব্রতকর। এটা শুধু সৌন্দর্য সমস্যাই না, এটি হতে পারে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোমের জন্য।এর ফলে গর্ভধারণের সমস্যা, বন্ধ্যাত্ব অথবা অনিয়মিত পিরিওডের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। হরমোনের অসামঞ্জস্যতার কারণের ফলে ও চেহারায় লোমের উপস্থিতি দেখা যেতে পারে। কিছু মহিলার ক্ষেত্রে হিরসুটিজম এর কারণেও মুখের অবাঞ্ছিত লোমের আধিক্য দেখা যায়। স্টেরয়েডের অপব্যবহারের কারণেও এমন সৃষ্টি হতে পারে। আর এর জন্য মুখের অবাঞ্ছিত চুল থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ওয়াক্সিং, থ্রেডিং বা অন্য কোন বিউটি ট্রিটমেন্ট নেওয়ার আগে কোন স্বাস্থ্য সমস্যা আছে কিনা সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে।

৩। চূড়ান্ত শুষ্ক ও ফাটা ত্বক

জলবায়ু ও পরিবেশের পরিবর্তনের ফলে ত্বক অত্যন্ত শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে। ময়েশ্চারাইজিং রুটিন মেনে চলা, হাইড্রেটেড থাকা ও সঠিক খাদ্যগ্রহণ করার পর ও যদি আপনার সারা শরীর শুষ্ক থাকে তাহলে এটি হতে পারে হাইপোথাইরয়ডিজম বা ডায়াবেটিসের কারণ। এই সমস্যার কারণেই শরীর আর্দ্রতা হারায় ও ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যায়। ধমনীর সংকীর্ণতা বা হৃদরোগের মত লুকানো কারণের প্রতিও ইঙ্গিত করে এই লক্ষণ, বিশেষ করে আপনার হাত ও পায়ের ত্বক যদি মাত্রাতিরিক্ত ড্রাই হয়ে যায় তাহলে এটা হয়। ধমনীর সংকীর্ণ হয়ে গেলে রক্ত সরবরাহ কমে যায় এবং বাধাগ্রস্থ হয়। এর ফলে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয় এবং ত্বক নিস্তেজ ও ড্রাই হয় এবং ফেটে যায়। অ্যালার্জি বা সোরিয়াসিসের কারণেও এমন হইয়ে থাকে।

৪। মুখ লাল হয়ে যাওয়া, র‍্যাশ হওয়া

ক্লান্ত হয়ে গেলে, আবার ভয় পেলে বা বিব্রত হলে চেহারা লাল হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু আপনার গাল অথবা নাক লাল হয়ে যাওয়া সিস্টেমিক লুপাস ইরাইদিমেটোসাস (SLE) কে নির্দেশ করে থাকে। এটা একটি অটো ইমিউন অবস্থায়া সারা শরীরে প্রভাব ফেলে থাকে। মুখ লাল হওয়ার সাথে সাথে যদি ব্রণের প্রাদুর্ভাব হয় তাহলে তা রোসাসিয়ার লক্ষণ ও হতে পারে। রক্তনালীর বিবর্ধনের ফলে এই রোগ হয়ে থাকে। সেবোরোইক ডারমাটাইটিস এর কারণেও এমন হয় যা পার্কিনসন্স ডিজিজের সাথে সম্পর্কিত।

৫। ঠোঁট ফাটা

ঋতু পরিবর্তনের ফলে ঠোঁট ফাটা শুরু হয়। ভিটামিন বি এর ঘাটতি, ড্রাগ অ্যালার্জি, ডিহাইড্রেশন অথবা থাইরয়েডের কর্মহীনতার কারণেও এই সমস্যাটি সৃষ্টি হয়ে থাকে। যদি ঠোঁট ফাটার সাথে শুষ্ক চোখ, শুষ্ক মুখ, শুষ্ক ত্বক থাকে ও জয়েন্টে ব্যথা সৃষ্টি হয় তাহলে Sjogren Syndrome  এর কারণে হতে পারে। যা একটি ইমিউন সিস্টেমের সমস্যা।

৬। আঁচিল

আঁচিল অক্ষতিকর হয় এবং অনেকেরই জন্মগত জড়ুল থাকে। তবে এটি স্কিন ক্যান্সারের ও লক্ষণ হতে পারে। তাছাড়াও এটি লিভার সমস্যার লক্ষণও হতে পারে।

৭। ফোলা মুখ

হার্ট অথবা কিডনির সমস্যার ফলে এটি হতে পারে যাকে ইডিমা বলে।

তাছাড়া ও চোখের পাতার উপরে হালকা হলুদ দাগ দেখা গেলে তা হৃদরোগের কারণে অ সৃষ্টি হতে পারে, চেহারায় অসামঞ্জস্যতা দেখা দিলে স্ট্রোক এর লক্ষণ, ঠোঁট বা নখে নীলাভ আভা দেখা দিলে হার্ট বা ফুসফুসের সমস্যাকে নির্দেশ করে থাকে, এনেমিয়ার লক্ষণ বোঝা যায় চেহারা ম্লান দেখালে, মোটা ঘাড় ও ছোট চোয়াল দেখে নাগুমানোর লক্ষণ বোঝা যায়, মুখের কোণায় ঘা ভিটামিন বি এর ঘাটতি কারনেই সৃষ্টি হয় ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *