ব্যক্তিত্ব

এ পি জে আব্দুল কালামের জন্মদিন আজ | জেনে নিন জীবন বদলে দেয়া তাঁর বাণীগুলো

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: ভারতের প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি বৈজ্ঞানিক এ.পি.জে আব্দুল কালামের জন্মদিন আজ। তিনি ভারতের মিসাইল ম্যান হিসেবেও পরিচিত। অন্তরীক্ষ ও সুরক্ষার বিষয়ে তার অবদান অবিস্মরণীয়। ব্যালেস্টিক মিসাইল ও লংচিং টেকনোলজিতে দেশকে আত্মনির্ভর করার বিষয়ে তার অবদান অনস্বীকার্য, আর সেই কারণেই তিনি মিসাইল ম্যান নাম পরিচিত। তার পরিচালনার ওপর ভিত্তি করেই দেশের প্রথম মিসাইল গড়ে উঠেছিল।

একাধারে তিনি যেমন বিখ্যাত বিজ্ঞানী ছিলেন, অন্যদিকে সাহিত্যের অনুরাগী ছিলেন। বেশ কয়েকটি পুস্তকের রচনা করেছেন তিনি। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা কালাম নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য খবরের কাগজ পর্যন্ত বিক্রি করেছেন।

আরও পড়ুন: হুইলচেয়ারে বসে বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন বাস্কেটবল দলের অধিনায়ক মারজানার

২০০২ সালে তিনি তৎকালীন শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টি ও বিরোধী দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সমর্থনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। পাঁচ বছর এই পদে আসীন থাকার পর তিনি শিক্ষাবিদ, লেখক ও জনসেবকের সাধারণ জীবন বেছে নেন। ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ভারতরত্ন সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্মান ও পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে স্বপ্নের মহান এই ফেরিওয়ালা পরলোগ গমন করেন।

তার জীবন থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। এ মহান ব্যাক্তির জন্মদিনে তার দেওয়া কিছু বিখ্যাত ও গুরুত্বপূর্ণ উক্তি আমরা জেনে নিতে পারি। যা আমাদের জীবনে অনেক কিছুর শিক্ষা দিবে-

১) স্বপ্ন সেটা নয়, যেটা তুমি ঘুমিয়ে দেখো। স্বপ্ন সেটা যেটা তোমায় ঘুমোতে দেয় না।’

২) সূর্যের মতো দীপ্তিমান হতে হলে প্রথমে তোমাকে সূর্যের মতোই পুড়তে হবে।

৩) যারা হৃদয় দিয়ে কাজ করতে পারে না; তাদের অর্জন অন্ত:সারশূন্য, উৎসাহহীন সাফল্য চারদিকে তিক্ততার উদ্ভব ঘটায়।

৪) যদি তুমি তোমার কাজকে স্যালুট কর, দেখো তোমায় আর কাউকে স্যালুট করতে হবে না। কিন্তু তুমি যদি তোমার কাজকে অসম্মান কর, অমর্যাদা কর, ফাঁকি দাও, তাহলে সবাইকে তোমার স্যালুট করতে হবে।

৫) প্রতিদিন সকালে এই পাঁচটা কথা মনে মনে বলো :

  • আমি সেরা।
  • আমি করতে পারি।
  • সৃষ্টিকর্তা সব সময় আমার সঙ্গে আছে।
  • আমি জয়ী।
  • আজ দিনটা আমার।

৬) উৎকর্ষতা একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এটি কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়।

৭) আকাশের দিকে তাকাও। আমরা একা নই। পুরো মহাবিশ্ব আমাদের প্রতি বন্ধুত্বসুলভ। যারা স্বপ্ন দেখে এবং কাজ করে শুধু তাদেরকেই শ্রেষ্ঠটা দেওয়ার জন্য চক্রান্তে লিপ্ত এই বিশ্ব।

৮) জীবন একটি কঠিন খেলা। ব্যক্তি হিসেবে মৌলিক অধিকার ধরে রাখার মাধ্যমেই শুধু তুমি সেখানে জয়ী হতে পারবে।

৯) ভিন্নভাবে চিন্তা করার ও উদ্ভাবনের সাহস থাকতে হবে, অপরিচিত পথে চলার ও অসম্ভব জিনিস আবিষ্কারের সাহস থাকতে হবে এবং সমস্যাকে জয়

করে সফল হতে হবে। এ সকল মহানগুণের দ্বারা তরুণদের চালিত হতে হবে। তরুণ প্রজন্মের প্রতি এই আমার বার্তা।

১০) যদি একটি দেশকে দুর্নীতিমুক্ত এবং সুন্দর মনের মানুষের জাতি হতে হয়, তাহলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এ ক্ষেত্রে তিনজন সামাজিক সদস্য পার্থক্য এনে দিতে পারে। তারা হলেন বাবা, মা এবং শিক্ষক।

১১) সমস্যাকে কখনো এড়িয়ে যেতে চাইবে না। বরং সমস্যা এলে তার মুখোমুখি দাঁড়াবে। মনে রাখবে, সমস্যাবিহীন সাফল্যে কোনো আনন্দ নেই। সব সমস্যার সমাধান আছে।

১২) জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে মূলত চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি আমি আলোকপাত করি। সেগুলো হলো:

  • জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ,
  • জ্ঞান আহরণ,
  • অনেক বড় সমস্যায় পড়লেও লক্ষ্য থেকে সরে না আসা এবং
  • কোনো কাজে সাফল্য ও ব্যর্থতা দুটোকেই নেতৃত্বগুণে সামাল দিতে পারা।

১৩) হতাশ না হয়ে নিজেকে স্বপ্নপূরণের কতটা কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারছ, সেদিকে নজর রাখবে। কখনোই সাহস হারাবে না। নিজের একটি দিনও যাতে বৃথা মনে না হয়, সে চেষ্টা করো।

১৪) সমস্যাকে কখনো আমার ওপর চেপে বসতে দেব না। যত কঠিন সময়ই আসুক না কেন, কখনোই হাল ছেড়ে দেব না।

১৫) এখন থেকে সবকিছুতে দেশের কথা মাথায় রাখবে। কোনো স্বপ্ন দেখলে নিজের সঙ্গে দেশকে নিয়েও দেখবে, কোনো চিন্তা করলে দেশকে নিয়ে করবে আর কোনো কাজে মগ্ন হলে দেশের জন্য করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *