প্রচ্ছদ

প্রণোদনার অর্থ তুলতে দেড় কোটি কৃষককে দেয়া হবে স্মার্ট কার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: সারা দেশে ১ কোটি ৬২ লাখ কৃষককে স্মার্ট কার্ড দিতে যাচ্ছে সরকার। সরকারের কাছ থেকে প্রণোদনা নেওয়ার সময় কৃষককে এই কার্ড দেখাতে হবে। একই সঙ্গে কৃষিতে সরকারের সার, বীজসহ যত ধরনের সুবিধা আছে, স্মার্ট কার্ড দেখিয়ে সেসব সুবিধা নিতে হবে কৃষকদের। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের জন্য এ কার্ড তৈরি করবে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কৃষকদের হাতে এখন একটি কাগুজে কার্ড আছে। কিন্তু এই কার্ড ব্যবহার করতে গিয়ে কৃষকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সে জন্য কৃষকের ডিজিটাল পরিচিতি হিসেবে স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে ১ কোটি ৬২ লাখ কৃষকের ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরি করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে বাকি কৃষকদের কার্ড দেওয়ার পাশাপাশি তাদের প্রোফাইল তৈরি করা হবে।

পরীক্ষামূলকভাবে এ জন্য ৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এ-সংক্রান্ত একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতি কার্ড তৈরিতে খরচ হবে ৪৫ টাকা। গত বুধবার অনলাইনে এই প্রকল্প নিয়ে একটি আন্তমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় পরিকল্পনা কমিশন থেকে জানতে চাওয়া হয়, স্মার্ট কার্ডে যে ধরনের তথ্য থাকবে, জাতীয় পরিচয়পত্রেও কি একই ধরনের তথ্য আছে। জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার পরও নতুন করে আরেকটি কার্ডের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে কমিশন। তাই জাতীয় পরিচয়পত্রের মধ্যেই কৃষকদের সেবা অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না, সে প্রস্তাব দেওয়া হয়। জবাবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে বলা হয়, জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে কৃষককে কৃষি সেবা দিতে গেলে এনআইডি কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। একই সঙ্গে একটি সেবা নিতে প্রতিবার ১ টাকা ১৫ পয়সা করে দিতে হবে। এতে জটিলতা বাড়বে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম সচিব বলেন, কৃষকের স্বার্থে কৃষকদের স্মার্ট কার্ড দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এটি অনেক আগেই হওয়া দরকার ছিল।

এনআইডির মাধ্যমে কৃষি সেবা দেওয়া যায় কি না, আমরা প্রথমে সে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এতে জটিলতা বাড়বে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, এই প্রকল্পের আওতায় তারা চার হাজার ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ দিতে চায়। এর মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ২০০ জন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিসিএস (কৃষি) কর্মকর্তা, ১ হাজার ৯২০ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা। এ ছাড়া ৯০০ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ জন্য খরচ রাখা হয়েছে সোয়া চার কোটি টাকা।

স্মার্ট কার্ড বিতরণে এত কর্মকর্তার প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। কমিশনের আপত্তির মুখে প্রশিক্ষণের অংশ সংশোধন করা হয়েছে। এ ছাড়া করোনার মধ্যে জাতীয় কর্মশালা করতে এক কোটি টাকা রাখার প্রস্তাবও কাটছাঁট করা হয়েছে। চুক্তিভিত্তিক চারটি জিপ কেনার পাশাপাশি জিপের পেছনে জ্বালানি খরচের প্রস্তাবকেও যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার কথা জানিয়েছে কমিশন।

পরিকল্পনা কমিশনের অতিরিক্ত সচিব (কৃষি বিভাগ) মতিউর রহমান বলেন, ‘এনআইডির মাধ্যমে কৃষি সেবা দেওয়া যায় কি না, আমরা প্রথমে সে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এতে জটিলতা বাড়বে। কৃষককে সহজে সেবা দেওয়ার জন্য স্মার্ট কার্ড জরুরি বলে তারা জানিয়েছে।’

জানা গেছে, চলতি বছরের মধ্যেই স্মার্ট কার্ড তৈরির কাজ শুরু হবে। ২০২৪ সালের মধ্যেই প্রকল্পটির কাজ শেষ করতে চায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *