আইন আদালত

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব, অপপ্রচার রোধে আসছে নতুন আইন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: গুজব ও অপপ্রচার ছড়ানো বেড়ে যাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণে নতুন আইন প্রণয়নের চিন্তা করছে সরকার। বিভিন্ন দেশে হওয়া এ সংক্রান্ত আইনগুলো পর্যালোচনা করে বাংলাদেশেও তা প্রণয়ন হবে বলে জানা গেছে। প্রস্তাবিত আইনে বিদেশি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলোর ডাটা সেন্টার বা শাখা অফিস বাংলাদেশে স্থাপনের বাধ্যবাধকতার বিধান রাখা হচ্ছে। এটি করা গেলে অপপ্রচারকারীদের খুব সহজেই শনাক্ত ও বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হবে। বর্তমানে এমন কর্মকাণ্ড মনিটরিং করার সুযোগ থাকলেও প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্রায় নেই।

এদিকে বিদেশে বসে যারা রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত, তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে ২০০১ সালে প্রণীত বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। গত ২৪ জুন পর্যন্ত সংশোধনী নিয়ে গণমত নেয় টেলিযোগাযোগ বিভাগ। সংশোধিত আইনের ৩ নম্বর ধারা মতে, যদি কোনো ব্যক্তি বিদেশে বসে দেশের কোনো টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বা যন্ত্রপাতির সাহায্যে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটান, তাহলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইন এমনভাবে প্রয়োগ হবে যেন অপরাধের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া বাংলাদেশের ভেতরেই সংঘটিত হয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার গণমাধ্যমকে জানান, আপত্তিকর ও খারাপ উদ্দেশ্যমূলক কনটেন্ট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করে সরকার। কিন্তু খুব বেশি সাড়া মেলে না। সার্বিক বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও কিছু পরিবর্তন, সংযোজন প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট আইনগুলোতে সোশ্যাল মিডিয়ার অনেক কিছু অ্যাড্রেস করা নেই। সেগুলো করার কাজ চলছে। আইন সংশোধন করে সেই আইন মেনে চলার জন্য ওদের বাধ্য করতে হবে। চাপ সৃষ্টি করতে হবে।’

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন চক্র সরকারবিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় গুজব ও উসকানি ছড়ানো হয়। কিন্তু এদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগের সুযোগ বর্তমানে নেই। তাই তাদের নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়ে কাজ চলছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দেশের ভেতরে অবস্থানরত চক্রান্তকারীদের বিচারের মুখোমুখি করার সুযোগ থাকে। কিন্তু ডিজিটাল অপরাধের কোনো সীমারেখা নেই। বিভিন্ন দেশে বসে একটি ইস্যু তুলে ধরে সেটিকে বুস্ট করে ভাইরাল করার চেষ্টা করে। নতুন আইন পাস হলে বিদেশে বসে গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদেরও বিচারের আওতায় আনার সুযোগ থাকছে। বিশেষ করে ইউটিউব এবং ফেসবুক যাতে বাংলাদেশে তাদের সার্ভার ডেটা সেন্টার স্থাপন করে, এ জন্য নতুন আইন প্রণয়নের চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *