খেলাধুলা

দুই বছর আগে দল গঠন করে বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে নামিবিয়া

ক্রীড়া প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: ইতিহাস গড়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে পৌঁছে গেছে নামিবিয়া। তারা এখন ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে খেলবে। এ যেন মাত্র ২৫ লাখ মানুষের দেশটির স্বপ্নের মাঝে বাস করা। যাদেরকে এতদিন টেলিভিশনে দেখতো, সেই তাদের সঙ্গেই বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে লড়াই করবে।

আফ্রিকার সর্বশেষ অঞ্চল নামিবিয়া। যেখানে কেবল মুরুভূমি আর অব্যবহৃত ভূমি চোখে পড়ে। দেশটিতে এমনও জায়গা রয়েছে, যেখানে শতাধিক কিলোমিটার পথজুড়ে কোনো মানুষের দেখা মিলবে না। আর এখন সেই দেশটি নিয়ে বিশ্বমঞ্চে আলোচনা হচ্ছে।

পুরো নামিবিয়ায় মাত্র ৯টি ক্রিকেট মাঠ, পাঁচটি ক্রিকেট ক্লাব এবং ১৬ জন চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার আছে। তারাই এখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ বা মূল পর্বে খেলার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থান করছে। এর বাইরে বড় কোনো টুর্নামেন্টে ম্যাচ জয় এবং আইসিসির পূর্ণাঙ্গ একটি টিমকে পরাজিত করা। সবই গত এক সপ্তাহের মধ্যে হয়েছে। এগুলো স্বপ্ন নয়তো কী?

নামিবিয়ার কোচ পিয়েরে ডি ব্রুইন বলেন, ‘এটি স্বপ্ন যেটি সত্যি হয়েছে। এই খেলোয়াড়রা যখন ছয়-সাত বছর বয়সী তখন থেকেই ভারত-পাকিস্তানের মতো দলের বিপক্ষে খেলার স্বপ্ন দেখতো। এই স্বপ্নটিই এখন সত্যি।’

‘গত কয়েক বছর ধরে তাদের যা ছিল তা হলো- ওই খেলোয়াড়দের (বিরাট কোহলি ও বাবর আজমসহ ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটার) টেলিভিশনে দেখা এবং স্বপ্নের মাঝে বিচরণ করা। তারা ঘুম থেকে জাগ্রত হয় এবং জানতে পারে যে এটাই সত্যি। আমি তাদের জন্য খুবই গর্বিত। আমরা যে কতটা সীমাবদ্ধ, তা মানুষ জানে বলে আমার মনে হয় না। আমরা কোনো ক্রিকেট সংস্থা নয়, যাদের বিলাসবহুল উৎস রয়েছে’ যোগ করেন তিনি।

ঠিক দুই বছর আগে নামিবিয়ার জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলে মাত্র ৩ জন চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড় ছিল। এরপর ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে আইসিসির কাছ থেকে ওয়ানডে মর্যাদা পাওয়ার পর আরও ১৩ জনকে চুক্তিবদ্ধ করতে সক্ষম হয়। তাদের কাছে এখনো এমন কোনো স্টেডিয়াম নেই, যেগুলো খেলোয়াড়রা নিজেদের বলতে পারে। তাই ক্লাবের মাঠে জাতীয় দলের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হয়।

চলতি বছরের শুরু থেকে দলটিকে কোচিং করাচ্ছেন ডি ব্রুইন। কিন্তু তিনি এখনো দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরিয়ানে বসবাস করেন এবং সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দলে স্থায়ী কোনো ফিজিও, চুক্তিবদ্ধ কোচ কিংবা অন্যান্য কোচিং স্টাফ নেই। এমনকি ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তাদের অফিসিয়াল কোনো খেলার সূচি ছিল না।

এমতাবস্থায় বিশ্বকাপকে সামনে রেখে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক তারকা অলরাউন্ডার এলবি মরকেলকে নিয়ে আসে নামিবিয়া। এ প্রসঙ্গে ডি ব্রুইন বলেন, ‘সে এমন একজন, যাকে আমি শুরু থেকেই চেয়েছিলাম। ২০ বছরের বেশি সময় ধরে আমরা একে-অপরকে জানি। তার অভিজ্ঞতা আমরা কাজে লাগাতে পারবো।‘

পরবর্তী পদক্ষেপ ছিল- বিশ্বকাপ প্রস্তুতির জন্য কিছু ম্যাচ আয়োজন করা। সেই ধারাবাহিকতায় উগান্ডা জাতীয় দল, জিম্বাবুয়ের ইমার্জিং টিম, দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং টিম এবং দক্ষিণ আফ্রিকার দুইটি ঘরোয়া লিগের দলকে আমন্ত্রণ জানায় নামিবিয়া। সবার সঙ্গেই জয় পেয়েছে দেশটি। আর এখন তারা বিশ্ব ক্রিকেটের শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছে।

আরো পড়ুন:

বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে খেলতে কত রানে জিততে হবে টাইগারদের?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *