নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: সবখানেই সুনশান নীরবতা। যেদিকে চোখ যায় পটে আঁকা ছবির মতো সাজানো-গোছানো।
কোথাও আকাশছোঁয়া আকাশমণি, দেবদারু, কড়ই, সেগুন, কৃষ্ণচূড়া ছায়া দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। জারবেরা, বাগানবিলাস আর চেনা-অচেনা রকমারি পাতাবাহার, শোভাবর্ধনকারী বৃক্ষরাজি ও ফুলের গালিচা দেখলেই মন ভরে যাবে সবার।
কোথাও হিজল-জারুল-চম্পা, কোথাও সোনালী ফুলের গাছ উঁকি মারছে। মাঝে সারি সারি কবর। আবার সারি সারি বাহারি ফুলের মেলা। ফুটে আছে লাল, সাদা আর হলুদ ল্যান্টানা, ক্যারিওপসিস, রঙ্গন। ফুলের ভারে টইটুম্বুর গাছগুলো শোভা বাড়াচ্ছে। সৃষ্টি করেছে নৈসর্গিক পরিবেশ।
যেখানে সকাল, দুপুর আর বিকেলে আলো-ছায়ার খেলায় ঘন ঘন রুপ পাল্টে যায়। প্রজাপতি উড়ছে পাখনা মেলে। তরুণ-তরুণীরা জুটি বেঁধে হাতে হাত রেখে ঘুরছে। চোখে বিস্ময়, হৃদয়ে ময়ূরের পেখম খোলা আনন্দ। প্রকৃতি আর মানুষের অপার সৌন্দর্যের হাতছানি।
চোখ জুড়ানো এমন সৌন্দর্যের দেখা পাবেন পাহাড়-সাগর আর অরণ্যঘেরা চট্টগ্রামের ওয়ার সিমেট্রিতে। এখানে ঢুকতে কোনও টিকিট কাটার ঝক্কি নেই। বিনামূল্যে উপভোগ করবেন প্রকৃতির অনাবিল সান্নিধ্য। মন ভরে যাবে শুদ্ধতার পরশে।
তবে আপনাকে যেতে হবে সকাল ৮টা থেকে ১২টা বা বেলা ২টা থেকে ৫টার মধ্যে। নগরীর প্রাণকেন্দ্র জিইসি, প্রবর্তক, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, চারুকলা ইনস্টিটিউটের কাছেই ওয়ার সিমেট্রির অবস্থান। ঠিকানা: ১৯ বাদশা মিঞা চৌধুরী সড়ক।
পাহাড়ের কোলঘেঁষে কমনওয়েলথ যুদ্ধ সমাধি কমিশনের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রি। যেখানে আছে ৭৫১টি সমাধি। ওয়ার সিমেট্রি এলাকায় ঢুকতেই চোখে পড়বে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের সৌজন্যে একটি ফলক। সেখানে আছে চারটি নির্দেশিকা।
‘গেট বন্ধ থাকা অবস্থায় খোলার জন্য দয়া করে অনুরোধ করবেন না। এখানে সমাহিত ব্যক্তিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং নীরবতা পালন করার জন্য দর্শনার্থীদের প্রতি অনুরোধ রইল। দয়া করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। সিমেট্রি এলাকায় বসা নিষেধ, দয়া করে দেখে চলে যাবেন। ’
আপনার চোখে পড়বে- কর্মীরা কেউ মেশিন দিয়ে সবুজ ঘাস কাটছেন। কেউ পাতা কুড়িয়ে নিচ্ছেন আবার কেউ চারাগাছে পানি দিচ্ছেন। সযত্নে যে যার কাজে নিমগ্ন। প্রধান ফটক পেরিয়ে একটু এগোলেই চট্টগ্রাম স্মৃতিপীঠ, গির্জা আকৃতির ছোট্ট স্থাপনা। হাতের ডানপাশে রাখা আছে কাচের ঘেরার মধ্যে সুদৃশ্য বিশাল মেমোরিয়াল রেজিস্ট্রার।