নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: সরকারি কর্মচারীরা জুম প্ল্যাটফর্ম বা অনলাইনে কোনো বিষয়ভিত্তিক অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ নিলেও নগদ ভাতা পাবেন। তবে এখন থেকে সেই ভাতা মিলবে আগের চেয়ে অর্ধেক। কোর্স পরিচালক, কোর্স সমন্বয়ক ও সাপোর্ট স্টাফরাও পাবেন অর্ধেক হারে সম্মানী। যদিও প্রশিক্ষকেরা সম্মানী পাবেন আগের মতোই।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ৯ আগস্ট প্রশিক্ষণ কাজের সঙ্গে যুক্ত প্রশিক্ষক, প্রশিক্ষণার্থী, কোর্স পরিচালকসহ অন্যদের ভাতা ও সম্মানীর এ নতুন হার নির্ধারণ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) কার্যালয়সহ সব দপ্তরে পাঠিয়েছে।
এ–বিষয়ক চিঠিতে বলা হয়েছে, আপ্যায়ন বাবদ কেউ কোনো টাকা পাবেন না। আর ২০১৯ সালের ২২ মে যেসব শর্ত উল্লেখ করে প্রশিক্ষণ ভাতা ও সম্মানীর হার নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেগুলো অপরিবর্তিত থাকবে।
অর্থ বিভাগের করা এবারের নতুন হার অনুযায়ী, গ্রেড ৯ থেকে তার ওপরের পর্যায়ের সরকারি কর্মচারী প্রশিক্ষণার্থীরা ভাতা পাবেন দৈনিক জনপ্রতি ৩০০ টাকা হারে। আগে পেতেন ৬০০ টাকা হারে। আর গ্রেড ১০ থেকে তার নিচের পর্যায়ের কর্মচারীরা ভাতা পাবেন ২৫০ টাকা হারে। আগে এ হার ছিল ৫০০ টাকা।
এ ছাড়া কোর্স পরিচালকেরা সম্মানী পাবেন ৭৫০ টাকা করে। আগে এ হার ছিল ১ হাজার ৫০০ টাকা। এ ছাড়া কোর্স সমন্বয়কেরা ১ হাজার ২০০ টাকার পরিবর্তে পাবেন ৬০০ টাকা এবং সাপোর্ট স্টাফরা পাবেন ৫০০ টাকার পরিবর্তে ২৫০ টাকা।
প্রশিক্ষণার্থীরা এত দিন দৈনিক ৫০০ টাকা করে দুপুরের খাবার ভাতা এবং দুই বেলা চা-নাশতার ভাতা ৮০ টাকা করে পেয়ে আসছিলেন। জুম প্ল্যাটফর্মে প্রশিক্ষণ নিলে এ খাবার ভাতা ও চা-নাশতার ভাতা আর দেওয়া হবে না।
তবে প্রতি ঘণ্টার সেশনে যুগ্ম সচিব থেকে তার ওপরের পর্যায়ের কর্মচারীরা ২ হাজার ৫০০ টাকা করে এবং উপসচিব থেকে তার নিচের পর্যায়ের কর্মচারীরা দুই হাজার টাকা করে যে সম্মানী পেয়ে আসছিলেন, তা পরিবর্তন করা হয়নি। তাঁদের সম্মানী হার আগেরটাই বহাল রাখা হয়েছে।
প্রশিক্ষণের পাশাপাশি কোভিড-১৯–এর প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর জুম প্ল্যাটফর্মে সাধারণ বৈঠক করার প্রবণতাও বাড়ে। এসব বৈঠকে অংশগ্রহণ করেও সরকারি কর্মচারীরা ভাতা বাবদ নগদ টাকা নিচ্ছিলেন। গত বছরের জুলাইয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সব পর্যায়ের কর্মচারীরা যে এ ধরনের টাকা নিচ্ছিলেন, তা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে গত বছরের ১৩ আগস্ট আয়োজিত এক সভায় বলেছিলেন, ‘করোনাভাইরাসের মধ্যে অনলাইনে বৈঠক হয়েছে, তাহলে আবার শিঙাড়ার খরচ কেন। জুমের মাধ্যমে আমরা শিঙাড়া পাঠাব? বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।’
এম এ মান্নান সেদিন আরও বলেছিলেন, ‘করোনায় বাসায় বসে জুম বৈঠক করলেন, আপ্যায়ন ব্যয় করা লাগবে? প্রকল্পের আওতায় আপ্যায়ন ব্যয় আছে। তার মানে এই নয় যে অযৌক্তিকভাবে ব্যয় করতে হবে। প্রকল্পের আওতায় অযৌক্তিক আপ্যায়ন ব্যয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও উদ্বিগ্ন।’