নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদানকারী নারীদেরও করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ভ্যাকসিন নিতে হলে তাদের অবশ্যই সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মে নিবন্ধন করতে হবে। একইসঙ্গে ভ্যাকসিন নেওয়ার আগে কেন্দ্রে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের কাউন্সেলিংও নিতে হবে। পাশাপাশি কোন কোন ক্ষেত্রে অন্তঃসত্ত্বা নারীরা ভ্যাকসিন নিতে পারবেন না, এর জন্য কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
ভ্যাকসিন বিষয়ক জাতীয় কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্মারক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
নির্দেশনায় অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ভ্যাকসিন নেওয়ার আগে করণীয় হিসেবে বলা হয়েছে, তাদের অবশ্যই সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মে নিবন্ধন করতে হবে। ভ্যাকসিন নিতে হবে কেবল হাসপাতালবিশিষ্ট সরকারি ভ্যাকসিন কেন্দ্রগুলোতে।
কয়েকটি অবস্থায় অন্তঃসত্ত্বা নারীদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেওয়া যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশনা। এতে বলা হয়েছে, অন্তঃসত্ত্বা নারী ভ্যাকসিন গ্রহণের দিন অসুস্থ থাকলে তাকে ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে না। অনিয়ন্ত্রিত দীর্ঘমেয়াদি কোনো রোগে আক্রান্ত এবং ভ্যাকসিন সংক্রান্ত অ্যালার্জির ইতিহাস থাকলে তাদেরও এই ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে না।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোনো অন্তঃসত্ত্বা নারী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নেওয়ার পর এইএফআই কেস হিসেবে শনাক্ত হলে তাকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে না। একইসঙ্গে সম্মতিপত্রে ভ্যাকসিনগ্রহীতা বা আইনানুগ অভিভাবক ও কাউন্সেলিংক চিকিৎসকের সই না থাকলেও তাকে ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে না।
অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার আগে রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কাউন্সেলিং করার সময় কী কী বিষয় অবহিত করতেই হবে, সে বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছে অধিদফতর।
এতে বলা হয়েছে, অন্তঃসত্ত্বা নারীদের গর্ভাবস্থায় কোভিড-১৯ সংক্রমণের স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হলে নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্তান জন্মদানের (অপরিণত নবজাতক) ঝুঁকি ও নবজাতকের বাড়তি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয় বলে জানাতে বলা হয়েছে।
৩৫ বছরের বেশি বয়সী, উচ্চ বিএমআইসম্পন্ন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত নারী গর্ভাবস্থায় (বিশেষ করে প্রথম ও দ্বিতীয় ট্রিমেস্টারে) কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি; এবং সাধারণ নারীদের তুলনায় অন্তঃসত্ত্বা নারীদের কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হলে স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা অনেক বেশি— এমন তথ্যও অবহিত করতে বলা হয়েছে।
অন্তঃসত্ত্বা নারীরা ভ্যাকসিন নিলে কোভিড-১৯তে আক্রান্ত হওয়া ও এর ফলে সৃষ্ট জটিলতার ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত কমে যায় এবং অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ভ্যাকসিন নিলে কোভিডের গর্ভজনিত ঝুঁকির আশঙ্কা কম থাকে— এ বিষয়গুলোও ভ্যাকসিন প্রয়োগের আগেই অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অবহিত করতে বলা হয়েছে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির পক্ষ থেকে।