নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: গত ২৫ শে জুলাই, ২০২০ করোনা মহামারির ক্রান্তিলগ্নে মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী অপূর্ব চক্রবর্তী ও দীপম সাহার উদ্যোগে দেশব্যাপী বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে খাবার প্রদান কার্যক্রম চালু করা হয়। জাতির জনকের জন্মস্থান গোপালগঞ্জ জেলা থেকে তাদের এই কার্যক্রম শুরু হয়। জেলার কাশিয়ানী উপজেলায় অবস্থিত হাইশুর বৃদ্ধাশ্রম থেকে এ যাত্রা শুরু করে এখন পর্যন্ত ১২ মাসে দেশের ১২টি জেলায় অবস্থিত বৃদ্ধাশ্রমে তারা চাহিদামত ১৫-২০ দিনের খাদ্যসামগ্রী দিয়েছেন, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও প্রবীণদের জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র বিতরণ করেছেন এবং “মুজিববর্ষের স্লোগান, তিনটি করে গাছ লাগান” এই স্লোগানে উজ্জীবিত হয়ে প্রতিটি বৃদ্ধাশ্রমে ১০টি করে ফলজ ও বনজ গাছের চারা রোপণ করেছেন।
‘বঙ্গবন্ধু আনন্দ আশ্রম সেবা’-র উদ্যোগে বৃদ্ধদের অন্যতম দুটি মৌলিক অধিকার (খাদ্য ও চিকিৎসা) নিশ্চিত করতে সহায়তা, করোনা মহামারিতে বিভিন্ন বৃদ্ধাশ্রমে প্রবীণদের সাথে আনন্দপূর্ণ সময় কাটানোর মাধ্যমে তাদের একাকিত্বের জীবনে মানবিক সঙ্গ প্রদান এবং সাইকোলজিস্টের সাহায্য নিয়ে “টকিং কিউর” পদ্ধতিতে তাদের চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ কার্যক্রম বৃদ্ধদের সাথে সময় কাটানোর মাধ্যমে তাদের পারিবারিক বন্ধনের খোরাক মেটাচ্ছে। এছাড়া বৃদ্ধাশ্রমের সার্বিক উন্নয়ন এবং বৃদ্ধাশ্রমের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করেছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫শে জুলাই এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন কার্যক্রমের প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
তিনি বলেন, ‘গোপালগঞ্জ জেলা থেকে শুরু হয়ে এই কার্যক্রম ফরিদপুর, রাজবাড়ী, খুলনা, সাতক্ষীরা, দিনাজপুর, রংপুর, নীলফামারী, জামালপুর, গাইবান্ধা এবং বরিশালের বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে সেবা প্রদান করে আসছে। বিশ্ববিদ্যালযয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে তারা প্রতিটি জেলা ঘুরে ঘুরে সেবা প্রদানের মাধ্যমে এই অসাধ্য সাধন করছে। আমি এই কাজের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি এবং দেশের বিভিন্ন স্তরের সচেতন নাগরিকদের এই শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে বৃদ্ধাশ্রমগুলোর সেবার মান বাড়াতে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
বঙ্গবন্ধু আনন্দ আশ্রম সেবা কার্যক্রমের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশব্যাপী ১২টি বৃদ্ধাশ্রমে একবেলা বিশেষ খাবারের আয়োজন করেছে সংগঠনটি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও এই কার্যক্রমের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক অমিতাভ রায় বলেন, ‘বৃদ্ধ বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়ানোর, তাদের মুখে অন্ন তুলে দেবার, তাদের মুখে এক চিলতে হাসি ফোটানোর যে উদ্যোগ বঙ্গবন্ধু আনন্দ আশ্রম সেবা কার্যক্রমের সদস্যরা গ্রহণ করেছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। তাদের এই মহতী উদ্যোগের একজন ক্ষুদ্রতম অংশীদার হতে পেরে ভালো লাগছে। আসুন আমরা নিজ নিজ জায়গা থেকে এই সেবা কার্যক্রমের পাশে থাকি।’