স্বাস্থ্য

ভুয়া ডিগ্রী ব্যবহারকারী চিকিৎসকদের সতর্ক বার্তা দিয়েছে বিএমডিসি

নিখিল মানখিন, ধূমকেতু ডটকম: ভুয়া ডিগ্রী ব্যবহারকারী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আবার সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে মেডিক্যাল এ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ। তিনি বলেন, স্বীকৃত প্রোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রী না থাকা সত্ত্বেও তাদের কেউ কেউ নিজেকে ‘বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। যা বিএমডিসি আইনের পরিপন্থী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রীপ্রাপ্ত না হয়েও  অনেকে তাদের নামের পূর্বে ডাক্তার পদবী ব্যবহার করে যাচ্ছেন। এতে একদিকে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা হয়ে পড়ছে প্রশ্নবিদ্ধ, অন্যদিকে ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন অনেক রোগী। ভুয়া ডিগ্রী ব্যবহার বন্ধে চিকিৎসকদের জন্য চতুর্থবারের মতো সতর্কীকরণ বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযানে যাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বিএমডিসি আইনের কিছু অংশ উল্লেখ করে ইতোমধ্যে চিকিৎসকদের সতর্ক করে দিয়েছে বিএমডিসি। বিএমডিসি’র সতর্কিকরণ বার্তায় বলা হয়, স্বীকৃত ডিগ্রীপ্রাপ্ত অনেকে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের নিবন্ধন ব্যতীত চিকিৎসা কার্য পরিচালনা করছেন। কোনো কোনো নিবন্ধিত চিকিৎসক/দন্ত চিকিৎসক তাদের সাইনবোর্ড, প্রেসক্রিপশান প্যাড, ভিজিটিং কার্ড ইত্যাদিতে, পিজিটি, এফসিপিএস (পার্ট-১,২), এমডি (ইন কোর্স, পার্ট-১,২, থিসিস পর্ব), এম,এস (পার্ট-১,২, থিসিস পর্ব, সিসি) ইত্যাদি ব্যবহার করছেন, যা কোনো স্বীকৃতি অতিরিক্ত চিকিৎসা যোগ্যতা নয়। তাছাড়া স্বীকৃত পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রী না থাকা সত্ত্বেও কেউ কেউ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সার্জারি বিশেষজ্ঞ, গাইনী বিশেষজ্ঞ, শিশু বিশেষজ্ঞ, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ইত্যাদি ব্যবহার করছেন, যা বিএমডিসি আইনের পরিপন্থী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আবার কোনো কোনো চিকিৎসক তাদের ব্যবস্থাপত্রে এমন কিছু ওষুধ লিখছেন, যা সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ। নিবন্ধিত চিকিৎসকদেরকে উপরোল্লিখিত আইন পরিপন্থী কাজ হতে বিরত থেকে যথাযথভাবে চিকিৎসা কার্য পরিচালনা করার জন্য জানানো হয়েছে।

বিএমডিসি আইনের ২৯(১) ধারা উল্লেখ করে অধ্যাপক শহিদুল্লাহ ধূমকেতু ডটকমকে বলেন, এই ধারা অনুযায়ী ভুয়া পদবী, ইত্যাদি ব্যবহার নিষিদ্ধ। এই আইনের অধীন নিবন্ধনকৃত কোনো মেডিক্যাল চিকিৎসক বা ডেন্টাল চিকিৎসক এমন কোনো নাম, পদবী, বিবরণ বা প্রতীক এমনভাবে ব্যবহার বা প্রকাশ করবেন না, যার ফলে তার কোনো অতিরিক্ত পেশাগত যোগ্যতা আছে মর্মে কেউ মনে করতে পারে। যদি না তা কোনো স্বীকৃত মেডিক্যাল চিকিৎসা-শিক্ষা যোগ্যতা বা স্বীকৃতি ডেন্টাল চিকিৎসা শিক্ষা যোগ্যতা হয়ে থাকে। ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রীপ্রাপ্তরা ব্যাতীত অন্য কেউ তাদের নামের পূর্বে ডাক্তার পদবী ব্যবহার করতে পারবেন না। কোনো ব্যক্তি এই উপধারা লংঘন করলে উক্ত লংঘন হবে একটি অপরাধ এবং তার জন্য তিনি ৩ বছর কারাদণ্ড বা ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং উক্ত অপরাধ অব্যাহত থাকলে প্রত্যেকবার তার পুনরাবৃত্তির জন্য অন্যূন ৫০ হাজার টাকা অর্থ দণ্ডের অতিরিক্ত হিসাবে দণ্ডনীয় হবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *