স্বাস্থ্য

শিশুদের মানসিক চাপ কীভাবে দূর করবেন

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: হতাশা, স্ট্রেস ও উদ্বেগ— এগুলো যে শুধু বড়দের বেলায় ঘটে, সেটি কিন্তু ভুল ধারণা। বরং শিশুদের মাঝেও দেখা দিতে পারে এ রকম নেতিবাচক বিষয়গুলো। পরিবারের কারও কাছ থেকে আলাদা হওয়া, শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকা, পড়াশোনার চাপ, নতুন কিছু করার চেষ্টা বা চেষ্টা করে সফল না হওয়ার মতো কারণে শিশুরা স্ট্রেস ফিল করতে পারে। বাচ্চাদের মধ্যে স্ট্রেস এবং উদ্বেগ বেড়ে গেলে তা তাদের আচরণে ও স্বাস্থ্যে অত্যন্ত ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে।

শিশু-কিশোরদের মধ্যে স্ট্রেস কাজ করলে তার লক্ষণগুলো প্রাপ্তবয়স্কদের লক্ষণ থেকে কিছুটা আলাদা। তাই শিশুদের ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো শনাক্ত করতে মা-বাবার আরও সতর্ক হওয়া উচিত। 

১. দুঃস্বপ্ন

বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপ ও উদ্বেগের কারণে শিশুরা ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখতে পারে। তারা পড়াশোনার চাপে বা অন্য কোনো সমস্যায় পড়লেও এমন হতে পারে। শিশুর যদি ঘুম বারবার ভেঙে যায় অথবা ঘুমোতে না পারে, তবে সেটি স্ট্রেসের লক্ষণ হতে পারে।  বাচ্চার ঘন ঘন দুঃস্বপ্নের কথা বললে বাচ্চার মধ্যে কী চলছে তা বোঝার চেষ্টা করতে হবে এবং তাকে নিশ্চিত করতে হবে যে, তার অনুভূতি বুঝতে পারছেন এবং তার পাশে আছেন।

২. খাওয়ায় সমস্যা

মানসিক চাপ ও অস্থিরতা বাচ্চাদের খাওয়ার ওপরে অনেক প্রভাব ফেলতে পারে।  হঠাৎ করে বাচ্চার খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন যেমন, কম বা বেশি খেতে চাওয়া দুটোই স্ট্রেসের কারণে হতে পারে।  হঠাৎ এ ধরনের কোনো পরিবর্তন বাচ্চার মধ্যে লক্ষ্য করলে, তার সঙ্গে কথা বলতে হবে এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।  প্রয়োজনে গভীরভাবে সমস্যার সমাধানে যেতে হবে।

৩. মেজাজ খিটখিটে 

মানুষ যখন কোনো চাপের মাঝে থাকে, তখন স্বাভাবিকভাবেই মানুষ চিৎকার করে উঠে বা বিরক্ত প্রকাশ করে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা ঘটে।  কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে কঠিন মনে হলে বাচ্চারা অনেক সময় আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। সব কিছু এড়িয়ে যাওয়া অথবা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি চিৎকার করা চাপ ও উদ্বেগের লক্ষণ। এ রকম বিষয়গুলো সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।  যদি পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হয়ে যায়, তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের কাছে এই ব্যাপারে পরামর্শ নিতে হবে।

৪. অনাগ্রহতা

পড়াশোনার চাপ বা স্কুলের কাজ শেষ করতে অসুবিধা হওয়া অথবা বাইরের অন্যান্য কোনো কর্মকাণ্ডে আগ্রহ না থাকা হতে পারে স্ট্রেসের লক্ষণ।  বাচ্চাদের ওপর পড়াশোনা, খেলাধুলা বা অন্য কিছু আরও ভালো করে করার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হলে তাদের মানসিক চাপ বাড়তে পারে।  এ ধরনের কোনো বিষয় তাদের মাধ্যমে প্রকাশ পেলে বাচ্চার সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করতে হবে।

৫. শিশুর ওপর অতিরিক্ত চাপ দেওয়া

বাচ্চার ওপর কোনো ধরনের চাপ সৃষ্টি করা হলে অথবা বাচ্চারা যা বোঝাতে চায় তা যদি না বুঝতে পারা যায় এবং সেটি বোঝার জন্য যদি তাদের যথেষ্ট সময় দেওয়া না হয়, তা হলে এটি তাদের মনে গভীর প্রভাব ফেল। ফলে বাচ্চারা নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে।  এমন হলে তারা একসময় বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়স্বজনের থেকেও নিজেকে আলাদা করে রাখে।  এ ধরনের কোনো লক্ষণ বুঝতে পারলে অবশ্যই বাচ্চার সঙ্গে সে বিষয়ে খোলামেলা কথা বলতে হবে। এতে বাচ্চার মনোবল ও আত্মবিশ্বাস বেড়ে উঠতে কার্যকরী হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *