খাদ্য-পুষ্টি

দারুচিনির ইতিকথা || শত ঔষধি গুণে ভরা সুগন্ধি এই মসলা (ভিডিও)

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: দারুচিনি এই গ্রহের সবচেয়ে বেশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ভেষজ। এর মিষ্টি স্বাদ এবং সুন্দর সুবাসের জন্য শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মসলাটি সম্মানিত হয়ে আসছে। দারুচিনিতে রক্তের শর্করার রোধক-সহ উন্নত অসাধারণ ঔষধি গুণাবলী রয়েছে, যা প্রদাহ কমাতে এবং স্নায়বিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে। এছাড়াও সুগন্ধি মসলা হিসেবে দারুচিনি ব্যপকভাবে পরিচিত। শুধু রান্নায় গন্ধ বৃদ্ধি নয়, শরীর ও ত্বক উভয়ের জন্যই দারুচিনির ব্যবহার করা যায়। এর অনেক উপকারিতা রয়েছে। চলুন জেনে নিই দারুচিনি আমাদের শরীরের কী কী উপকার করে থাকে।

১। শরীরের ব্যথা উপশমেঃ অনেকেই জয়েন্টের সমস্যায় ভুগছেন। এক্ষেত্রে দারুচিনিকে জয়েন্টের ব্যথা কমানোর ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। উষ্ণ গরম পানির মধ্যে এক চামচ মধু আর দারুচিনি গুড়ো ভালভাবে মিশিয়ে নিন, এরপর শরীরের ব্যথা স্থানে আস্তে আস্তে মালিশ করুন। ২-৩ দিন মালিশ করুন। কিছুদিন পর দেখবেন ব্যথা কমে যাবে।

আরও পড়ুন: মধু প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে ওষুধ ও খাদ্য হিসেবে

২। অ্যাসিডিটির সমস্যা দূরঃ দারুচিনি পেটের জন্য ভীষণ উপকারি। এটি অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করে ও পেটের ব্যথা উপশম করে। পেট পরিষ্কার করতে, রাতে শোবার আগে, দারুচিনির সঙ্গে হরিতকীর গুঁড়া মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এসিডিটি রোধ করতে, মধুর সাথে দারুচিনি মিশিয়ে খেলে এসিডিটি ভালো হয়ে যায়।

৩। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেঃ প্রতিদিন আধা চা চামচ দারুচিনির গুড়ো রক্তে খারাপ কোলস্টেরল এলডিএল এর মাত্রা কমায়। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।

৪। ছত্রাক ঘটিত ইফেকশন প্রতিরোধেঃ ঈস্ট ছত্রাক ঘটিত ইফেকশন প্রতিরোধ করতে দারুচিনির গুণাবলী চমৎকারভাবে কাজ করে। হৃদরোগীদের জন্যও দারুচিনি খুব উপকারী। এটি রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে।

৫। রক্ত জমাট না বাঁধা রোধেঃ দারুচিনি মারণব্যাধি লিম্ফোসাইটিক লিউকোমিয়ার বিস্তার রোধ করে। রক্ত জমাট না বাঁধার অসুখ হিমোফিলিয়া প্রতিরোধ করতে দারুচিনি বিশেষ ভূমিকা রাখে।

৬। বাতের ব্যথা রোধেঃ বাতের ব্যাথা ও শরীরের হাড়ের ব্যথায় আধা চামচ দারুচিনির গুঁড়ো এক চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে ব্যথা দূর হয়। তাছাড়া, দারুচিনি মিশ্রিত সরিষার তেল গায়ে মালিশ করলে ব্যথা ভালো হয়।

৭। কাশি বা ঠান্ডার সমস্যাঃ ঠাণ্ডায় গলা ব্যথা বা খুশখুশে কাশিতে মধু চায়ের সাথে দারুচিনি মিশালে আরাম পাওয়া যায়।

৮। ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধিতেঃ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে দারুচিনি, দূর্বাঘাস ও হলুদ সমপরিমাণে বেটে মিশিয়ে ত্বকে লাগালে ভালো। তৈলাক্ত ত্বকে ব্রন রোধ করতে দারুচিনি উপকারী।

৯। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেঃ নিয়মিত দারুচিনি খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।

১০। আর্থারাইটিসের সমস্যায় যারা ভুগছেন তারা এক কাপ গরম জলের মধ্যে দু’চামচ মধু আর দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে সকাল-সন্ধ্যা খেতে পারেন।

সতর্কতা:
দারুচিনির যেমন উপকারিতা আছে তেমন অপকারিতাও আছে। অতিরিক্ত দারুচিনি গ্রহণ বা সাইড এফেক্টের কারণে লিভারের সমস্যা হতে পারে, ত্বকের ক্ষতি করতে পারে, গর্ভবতী মহিলাদের সময়ের আগে প্রসব হয়ে যেতে পারে, নিম্ন রক্তচাপ-সহ নানা সমস্যা হতে পারে।

ভিডিও : সৌজন্যে- স্টোরিটেলার কমিউনিকেশন

https://www.youtube.com/watch?v=1JBT0bjJ82c&t=71s

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *