নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: প্রাণঘাতী করোনার অভিঘাতে দেশের অর্থনীতির যে টুকু ক্ষতি হয়েছে তা ক্রমেই কাটিয়ে উঠার চেষ্টা চলছে। লকডাউনের মধ্যেও চলছে সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। গ্রামাঞ্চলে ও কৃষি খাতে করোনার তেমন কোনো প্রভাব নেই বললেই চলে। চলতি বোরো মৌসুমেও ধানের ভালো ফলন হয়েছে। শুরু হয়েছে ধান কাটা। রেমিট্যান্স ও রিজার্ভে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেকর্ড।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “অভ্যন্তরীণ উৎপাদন, চাহিদা ও সরবরাহ চেইন স্বাভাবিক থাকায় অর্থনীতিতে করোনার ক্ষতি ক্রমেই কেটে যাচ্ছে। খরা কাটছে রপ্তানি খাতের। তবে সামনের দিনগুলোয় চিন্তা বাড়ছে কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ ও বেকারত্ব নিয়ে।”
আরও পড়ুন: ১৪ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট আসছে বাজারে
“গত বছরের এ সময় দেশের অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির ছিল। পরে সরকারি খাতের নানা প্রণোদনা ও বেসরকারি খাতের সার্বিক প্রচেষ্টায় অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়। এরই মধ্যে আবার শুরু হয়ে যায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। এ সংক্রমণ ঠেকাতে বর্তমানে চলছে লকডাউন। কিন্তু গত বছরের মতো সবকিছু বন্ধ করে না দিয়ে শিল্পকারখানা খোলা রাখা হয়েছে। এতে একদিকে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, অন্যদিকে অর্থনীতিও রয়েছে সচল।”
“এ দেশের বেশির ভাগ মানুষই অপ্রাতিষ্ঠানিক ও বেসরকারি খাতের সঙ্গে জড়িত। ফলে সবকিছু বন্ধ করে দিলে কার্যত মানুষের জীবনই অচল হয়ে যাবে বলে মনে করে সরকার। আর শিল্পকারখানাসহ অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চালু রেখে অন্যান্য ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করায় অর্থনীতিতে দ্বিতীয় দফা আঘাতের চাপটা কমেছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।”
এ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, “গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরে দ্বিতীয় দফায় শুরু হওয়া করোনা সংক্রমণকালে দেশের অর্থনীতি কিছুটা হলেও গতিশীল রয়েছে। তবে করোনা মহামারী সরকারের দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি ওলটপালট করে দিয়েছে। আগে প্রতি বছর যেখানে ১ শতাংশ হারে দারিদ্র্য বিমোচন হতো সেখানে করোনার কারণে এখন বছরে ৪ শতাংশ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হচ্ছে।”
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, “দেশের অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য এখনো বিপর্যস্ত। তবে গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের অভিঘাতটা কম হওয়ায় আমাদের অর্থনীতিটা মোটামুটি গতিশীল রয়েছে। করোনার নাজুক পরিস্থিতির মধ্যেও ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে হচ্ছে। তবে সংক্রমণটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা হলেও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।”