উন্নয়ন

এলডিসি থেকে উত্তরণ : বাংলাদেশ জাতিসংঘের সুপারিশ পেতে যাচ্ছে আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বের হয়ে পূর্ণ উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার জন্য সুপারিশ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) ত্রিবার্ষিক মূল্যায়নের পর আজ শুক্রবার রাতে এই ঘোষণা দিতে পারে। ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে পাঁচ দিনব্যাপী ভার্চ্যুয়াল বৈঠক শেষে সিডিপি বাংলাদেশকে এই সুপারিশ করতে যাচ্ছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।

তবে এলডিসি থেকে বের হয়ে পূর্ণ উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার চূড়ান্ত স্বীকৃতি মিলতে বাংলাদেশকে আরও পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে। সাধারণত সিডিপির সুপারিশের তিন বছর পর চূড়ান্ত স্বীকৃতি মেলে। কিন্তু গত ১৫ জানুয়ারি সিডিপির সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ আরও দুই বছর সময় চেয়েছে। সিডিপি বাংলাদেশের সেই অনুরোধ রেখে সুপারিশ করলে ২০২৬ সালে চূড়ান্ত স্বীকৃতি মিলবে। ওই বছর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে এই চূড়ান্ত স্বীকৃতি দেবে।

এলডিসি থেকে কোন দেশ বের হবে— সেই বিষয়ে সুপারিশ করে থাকে জাতিসংঘের সিডিপি। এ জন্য প্রতি তিন বছর পরপর এলডিসিগুলোর ত্রিবার্ষিক মূল্যায়ন করা হয়। মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ, জলবায়ু ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা—এই তিনটি সূচক দিয়ে একটি দেশ উন্নয়নশীল দেশ হতে পারবে কি না, সেই যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়। যেকোনো দুটি সূচকে যোগ্যতা অর্জন করতে হয় কিংবা মাথাপিছু আয় নির্দিষ্ট সীমার দ্বিগুণ করতে হয়। সিডিপির পরপর দুই মূল্যায়নে এসব মান অর্জন করলেই এলডিসি থেকে বের হওয়ার চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়।

২০১৮ সালের সিডিপির মূল্যায়নে তিনটি সূচকেই বাংলাদেশ নির্দিষ্ট মান অর্জন করেছিল। এবার ২০২১ সালের মূল্যায়নেও তিনটি সূচকেই তিনটি সূচকে মান অর্জন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের বাড়তি দুই বছরের অনুরোধ মেনে সিডিপি জাতিসংঘের ইকোসকে সুপারিশ করলে বাংলাদেশ সব মিলিয়ে আরও পাঁচ বছর সময় পাবে। এই সময়টিকে প্রস্তুতিকাল হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। এলডিসি থেকে বের হলে অনেক বাণিজ্য সুবিধা থাকবে না। এলডিসি থেকে বের হলে বাণিজ্য প্রতিযোগিতা সক্ষমতার ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়বে, তা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে হবে।

ষাটের দশকে স্বল্পোন্নত দেশের ধারণাটি আসে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে উন্নয়নশীল ও উন্নত—এই দুই শ্রেণিতে সব দেশকে ভাগ করে থাকে জাতিসংঘ। তবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে যে দেশগুলো তুলনামূলক বেশি পিছিয়ে আছে, তাদের নিয়ে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বিবেচনা করে থাকে জাতিসংঘ। ১৯৭১ সালে প্রথম স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা করা হয়।

বর্তমানে ৪৭টি স্বল্পোন্নত দেশ আছে। এই পর্যন্ত মালদ্বীপসহ মোট পাঁচটি দেশ এলডিসি থেকে বের হয়েছে। ওই পাঁচটি দেশের মধ্যে বতসোয়ানা ও ইকোইটোরিয়াল গিনি শুধু মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ করে এলডিসি থেকে বের হয়েছে। অন্য দুটি সূচকে কখনোই নির্ধারিত মান অর্জন করতে পারেনি। আবার মালদ্বীপ, সামোয়া ও কেইপ ভার্দে—এই তিনটি দেশ অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে মান অর্জন করতে পারেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *