নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: শুটিং বন্ধ, সিনেমা হলে দর্শক নেই, মুক্তি পাচ্ছে না ছবি, সিনেমা হল বন্ধ হওয়ার জোগাড়,
নতুন ছবিরও খবর নেই—করোনার প্রথম ঢেউয়ে এই ছিল ঢালিউডের চিত্র। কিন্তু বছরের
শুরুতে টিকা যেমন ধূমকেতু এনেছে জনজীবনে, তেমনি ধূমকেতু বইছে সিনেমাপাড়ায়ও। নতুন
ছবি মুক্তির ঘোষণা আসছে, আসছে ছবি তৈরির ঘোষণাও।
ঢালিউডে এই মুহূর্তে ‘যাও পাখি বলো তারে’, ‘বীরত্ব’, ‘লাইভ’, ‘কসাই’, ‘গ্যাংস্টার’ ‘ছায়াবৃক্ষ’,
‘কানামাছি’, ‘চোখ’সহ প্রায় একডজন ছবির শুটিং চলছে। চলতি মাস ও আগামী মাসে
‘লিডার, আমিই বাংলাদেশ’, ‘অন্তরাত্মা’, ‘মাসুদ রানা’, ‘ঈশা খাঁ’, ‘রিভেঞ্জ’সহ বড় বাজেটের প্রায়
এক ডজন ছবির শুটিং শুরু হচ্ছে। এদিকে চলতি মাসে আরও একশ ছবি তৈরির ঘোষণা
দেওয়া হয়েছে। যদিও এ নিয়ে আছে আলোচনা–সমালোচনা। তবে চলচ্চিত্র–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা
বলছেন, বেশি বেশি ছবি তৈরি হওয়া ইন্ডাস্ট্রির জন্য ইতিবাচক। তবে মানের ক্ষেত্রে কোনো
ছাড় দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান
বলেন, ‘বেশি ছবি তৈরি ভালো। তবে ছবির মান ঠিক রাখতে হবে। মুক্তির পর ছবির মান
নিয়ে যেন দর্শকের মধ্যে কোনোভাবেই খারাপ ধারণা তৈরি না হয়। এমনিতেই আমরা এখন
একেবারে তলানিতে আছি।’
আরও পড়ুন: মিমির জন্য পাত্র খুঁজছেন নুসরাত, পায়েল, তনুশ্রীরা!
একশ ছবি নির্মাণের সমন্বয়ক পরিচালক শাহিন সুমনের মতে, কম বাজেটের ছবিগুলো নিয়ে
সমালোচনার কিছু নেই। দীর্ঘদিন বসে থাকা অনেক পরিচালক কাজ পাচ্ছেন। পাশাপাশি বেকার
ও নিম্ন আয়ের শিল্পীরাও কাজের সুযোগ পাচ্ছেন। সরকারি অনুদানের কারণে আগামী দিনে হল
বাড়বে। তখন সিনেমা লাগবে। এ জন্য এটি আগাম প্রস্তুতি। তিনি বলেন, ‘আমরা গুণগত
মান ঠিক রেখেই ছবি তৈরি করব। বাজেট কম কি বেশি, তা গুরুত্বপূর্ণ নয়।’
তবে পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘সিনেমা তৈরির হিড়িক পড়লে
ভালো–মন্দ বাছবিচার থাকে না। ছবির মান খারাপ হতে বাধ্য। আর ওই সব ছবি প্রেক্ষাগৃহে
মুক্তির পর দর্শককে হতাশ করে। পরবর্তীকালে সেই প্রভাব ভালো ছবির ওপরও পড়ে।’
একশ ছবি তৈরির সমন্বয়ক ও পরিচালক সমিতির এবারের নির্বাচনে মহাসচিব প্রার্থী
পরিচালক শাহিন সুমন বলেন, ‘আমি পরিচালক সমিতির নির্বাচনে মহাসচিব প্রার্থী। ছবিগুলোর
প্রযোজক আমার বন্ধু মানুষ। তিনি আমাকে যথেষ্ট ভালোবাসেন। তিনি চাইতেই পারেন আমি
নির্বাচনে জয়ী হই। তিনি চাইতেই পারেন, যেসব পরিচালকের ভোট আছে, তাদের ভোটগুলো
যেন আমি পাই। আর সে জন্যই সম্মানিত করার জন্য তাদেরকে কাজ দিতে পারেন। আমার
বন্ধু হিসেবে এভাবে আমার পাশে দাঁড়াতেই পারেন।’
যাহোক, নতুন একশ ছবি তৈরি কিংবা নতুন নতুন ছবি তৈরির ঘোষণা, করোনাকালে
এফডিসিকে চাঙা করছে—এ কথা বলছেন চলচ্চিত্র–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তবে দেখার বিষয়, ছবি
তৈরির এই হিড়িক কতটা ফলপ্রসূ হয় ঢালিউডের জন্য।