প্রচ্ছদ

চীনকে ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় জোট গঠন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ধূমকেতু বাংলা: ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বা টিপিপি চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র আগেই নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কিন্তু এর ফলে যে অর্থনৈতিক শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা পূরণ করতে নতুন ইন্দো-প্যাসিফিক অংশীদারি সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে তারা। বিশ্লেষকেরা বলছেন, মূলত চীনের উত্থান ঠেকাতে এ উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক বা ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক কাঠামোর পরিকল্পনা নিয়ে কিছুদিন আগেই এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী গিনা রাইমন্ডো ও বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্যাথরিন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও চলতি মাসের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফরে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের একরকম মহড়া দিয়ে গেছেন।

এশিয়ার দেশগুলোর জন্য বিদেশি বিনিয়োগ সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে এবারও যদি যুক্তরাষ্ট্র অবকাঠামো, টেলিযোগাযোগসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে, তাহলে অংশীদারত্বে সমস্যা হবে না বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।

তবে নতুন এই ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অংশীদারির কাঠামো কেমন হবে, তা নিয়ে এখন জল্পনাকল্পনা তুঙ্গে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী বলছেন, নতুন এই কাঠামোর সঙ্গে প্রথাগত বাণিজ্য চুক্তির বিশেষ মিল থাকবে না। প্রকৃতপক্ষে এটি কেমন হবে, তার বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি। যেমন এ চুক্তির আইনি বাধ্যবাধকতা থাকবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। তবে জাপান সরকারের একজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেছেন, এ অংশীদারত্বের চিন্তা এখনো পরিপূর্ণভাবে কাঠামো পায়নি। এখন কেবল প্রস্তুতি চলছে। নিক্কি এশিয়ার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বলা বাহুল্য, যুক্তরাষ্ট্রের এসব উদ্যোগের মূল লক্ষ্য চীনকে কড়া জবাব দেওয়া। বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থা তারা চীনের প্রভাবমুক্ত রাখতে চায়। সেটা যে পুরোপুরি সম্ভব হবে না, যুক্তরাষ্ট্র তা জানে; তবে যতটুকু পারা যায়, সেই চেষ্টাই তারা করবে। মার্কিন পরিকল্পনা অনুযায়ী, নতুন অংশীদারত্বের কাঠামোয় তথ্য ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের সাধারণ কিছু নিয়ম থাকবে। সাম্প্রতিক মালয়েশিয়া সফরে গিনা রাইমন্ডো মহামারিতে বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি চিপ কারখানা পরিদর্শন করেছেন। তখন তিনি সরবরাহব্যবস্থার সুরক্ষায় একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি অবকাঠামোগত সহায়তার বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে বলে জানান তিনি। এই খাতে চীন দারুণ অগ্রগতি করেছে।

চীন এখন কার্যত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে প্রভুত্ব করছে। দ্রুতই বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠছে তারা। এই বাস্তবতায় কর্তৃত্ব পুনরুদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত কিছু করতে চায়। পৃথিবীকে দেখাতে চায়, তাদের হাতেও তুরুপের তাস আছে। আর সে জন্য বেশ তাড়াহুড়ো করছে দেশটি।

অন্যদিকে নিরাপত্তা-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গঠিত জোট কোয়াডের চার দেশ, অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত, অস্ট্রেলিয়া এর মধ্যে চিপসহ অন্যান্য পণ্যের সরবরাহব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে কাজ শুরু করেছে। এ ছাড়া সিঙ্গাপুর, চিলি ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে ডিজিটাল অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি হয়েছে। অবকাঠামো খাতে জি-৭ জোটের দেশগুলো একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটনের প্রস্তাবিত নতুন কাঠামোর উদ্দেশ্য মূলত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকাজুড়ে কাজ করা বিভিন্ন আঞ্চলিক উদ্যোগ একত্র করা।

আরো পড়ুন:

নববর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠান বাতিল করছে লন্ডন

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *