বিনোদন প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: শনিবার বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিট। ফার্মগেটে অবস্থতি আনন্দ হলের সামনে লেগে যায় জটলা। দুপুরের শো ভাঙতেই শুরু হয় এই জটলা। দীর্ঘদিন ধরে হলের সামনে এমন জটলা দেখা যায়নি। কাছে যেতেই আওয়াজ আসে- ‘পয়সা উসুল, পয়সা উসুল’। আরও কাছে গিয়ে বের হয়ে আসা দর্শকদের জিজ্ঞেস করা হয়- কেমন দেখলেন? একদল তরুণ উচ্চ আওয়াজ করেই বলে উঠলেন- ‘শুভ আর ভিলেনটা দারুণ দেখাইছে,পয়সা উসুল হইছে।’

শনিবার স্টার সিনেপ্লেক্সের মিডিয়া ও মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ জানালেন, মুক্তির প্রথম দিন স্টার সিনেপ্লেক্সের সব শাখাতেই হাউজফুল ছিলো ‘মিশন এক্সট্রিম’। দর্শকরাও সিনেমা দেখে প্রশংসা করছেন। আমাদের ধারণা- পুরো সপ্তাহ ভালো চলবে ছবিটি।

তিনি আরও বললেন, স্টার সিনেপ্লেক্সে যেসব বাংলা সিনেমা চালানো হয় সেগুলো প্রায় অফ ট্র্যাক। সেই হিসেবে চলতি বছর আমরা যেসব বাংলা সিনেমা চালিয়েছি তার মধ্যে ‘মিশন এক্সট্রিম’ টিকিট বিক্রির দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে।

ঢাকার ঐতিহ্যবাহী হল মধুমিতার মালিক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ অনেক প্রত্যাশা নিয়ে ‘মিশন এক্সট্রিম’ তার হলে নিয়েছেন। কারণ, হল খোলার পর থেকে কোনো ছবি হলে দর্শক টানতে পারেনি। কিন্তু শুক্রবার মধুমিতায় বিকেল আর রাতের শো তাকে আস্বস্ত করেছে। বাংলা ছবির দর্শক এখনও আছে। ভালো বাংলা ছবি হলে দর্শক হলে এসেই দেখতে চান।

সরেজমিনে মানিকগঞ্জের নবীন হলে শুক্রবার বিকেলের শো’তে দর্শকদের ভিড়। হলের ৮০ ভাগ সিটেই দর্শক ছিলেন। যদিও নবীন হল কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবারের বিকেলের শো’তে সব ছবির বেলাতেই দর্শক মোটামুটি ভালো থাকে হলটিতে। তবে এই শুক্রবার অন্যান্য শুক্রবারের চেয়ে দর্শক বেশি ছিলো।

অন্যদিকে সাভার সেনা অডিটোরিয়াম হলে শুক্রবারের দুপুর ও বিকেলের শো’গুলো হাউজফুলের খবর পাওয়া গেছে।

বহুল প্রতীক্ষিত ছবি ‘মিশন এক্সট্রিম’র মুক্তির প্রথম দিন ও দ্বিতীয় দিন ঢাকার ও তার আশপাশের হলগুলোর চিত্র কর্তৃপক্ষের কথায় যা পাওয়া গেলো তা হচ্ছে- করোনা মহামরির পর এই ছবিটি দেখতে দর্শক হলে আসছেন। মাসলম্যান খ্যাত অভিনেতা আরিফিন শুভর এই ছবিটি মুক্তিতেই ইতিহাস সৃষ্টি করেছে যেনো।

বাংলাদেশের বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে ‘মিশন এক্সট্রিম’ দেশের সর্বোচ্চ সংখ্যক ৫০ হলে মুক্তি পায়। একইসঙ্গে মুক্তি পায় বিশ্বের অন্যান্য ৫টি দেশে। ধাপে ধাপে আরও প্রায় ৮ থেকে ১০টি দেশ যোগ হবে।

এই সিনেমায় আরফিন শুভ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আরও রয়েছেন- তাসকিন রহমান, সাদিয়া নাবিলা, ঐশী, রাইসুল ইসলাম আসাদ, ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, ইরেশ যাকের, মনোজ প্রামাণিক, আরেফ সৈয়দ, রাশেদ মামুন অপু, এহসানুল রহমানসহ অনেকে।

মুক্তির প্রথম দিন থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন হল ঘুরে দেখছেন আরিফিন শুভ, ঐশী সহ নির্মাতা ও কলাকুশলীরা। সবখানেই শুভকে ঘিরে ধরতে দেখা গেছে দর্শক অনুরাগীদের।

ছবিটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন ফয়সাল আহমেদ ও সানী সানোয়ার। শনিবার সানী সানোয়ার বলেন,  আমরা যে টার্গেট নিয়ে ছবিটি মুক্তি দিয়েছি, প্রথম দিনের দর্শক সাড়া যেন সেই সফলতার পথই দেখাচ্ছে। শুধু ঢাকা নয়, ঢাকার বাইরেও সার্বক্ষণিক খবর রাখছি। হল মালিকদের প্রায় সবাই দারুণ খুশি। তারা আমাদের জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালের শোতে খুব বেশি দর্শক না থাকলেও দুপুর ও সন্ধ্যার শোতে বেশ ভালো দর্শক পেয়েছেন।

ছবিটির আরেক পরিচালক ফয়সাল আহমেদ বললেন, ছবিটির জন্য নতুন করে বিশটি হল চালু হয়েছে। তারা ফোন করে জানিয়েছেন- হলগুলোতে দর্শক ভালো আসছে। তবে ভালো সিনেমা মুক্তির এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। না হলে হলগুলো আবার বন্ধ হয়ে যাবে।

আরো পড়ুন:

বলিউডে ডেব্যু করলেন সুনীল শেঠির ছেলে

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *