নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: চলতি অর্থবছরের পাঁচ (জুলাই-নভেম্বর) মাসে তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি বেড়েছে ২২ দশমিক ৯ শতাংশ। এর মধ্যে শুধু নভেম্বর মাসে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৩২ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
তবে পোশাক পণ্যের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হলেও রপ্তানিকারকদের দাবি, আপাত যা বৃদ্ধি হয়েছে তা মূলত কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি জনিত ব্যয়কে সমন্বয় করেছে। যে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি আমরা দেখতে পাচ্ছি তা কোনোভাবেই প্রকৃত প্রবৃদ্ধি নয়।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ তথ্য বলছে, গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরের পাঁচ মাসের (জুলাই-নভেম্বর) তুলনায় চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২ দশমিক ৯ শতাংশ।
তবে ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে পোশাক রপ্তানি ৩২ দশমিক ৩৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে নিটওয়্যার খাতে প্রবৃদ্ধি ৩৩ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ এবং ওভেন খাতে প্রবৃদ্ধি ৩১ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
চলতি বছরের নভেম্বর মাসে তিন দশমিক ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। ২০২০ সালের একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিল দুই দশমিক ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ফলে আলোচ্য সময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। তবে চলতি বছরের অক্টোবরে তিন দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি হয়েছে, যা নভেম্বরে তিন দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। ফলে এক মাসের ব্যবধানে রপ্তানি কমেছে।
রপ্তানিকারকরা বলছেন, গত তিন মাসের প্রবৃদ্ধির ধারা ইতিবাচক হলেও এটা স্থায়ী নাও হতে পারে। তাদের মতে, কোভিডজনিত লকডাউন শিথিল করার কারণে বিগত মাসগুলোতে পোশাকের ব্যবহার ও চাহিদা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ বিষয়ে বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, টেক্সটাইল, ডাইস ও রাসায়নিকসহ অন্যান্য কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া দরকার। ফ্রেইট খরচ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। এটা স্পষ্ট যে রপ্তানিমূল্যের যে আপাত বৃদ্ধি হয়েছে তা মূলত কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি জনিত ব্যয়কে সমন্বয় করেছে। সুতরাং যে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি আমরা দেখতে পাচ্ছি তা কোনোভাবেই প্রকৃত প্রবৃদ্ধি নয়।
তিনি বলেন, বিগত কয়েক মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। তবে এটি ভুলে গেলে চলবে না যে আমাদের কারখানাগুলো অতিমারির ক্ষয়ক্ষতি এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের খবরে বৈশ্বিক অর্থনীতি ইতোমধ্যেই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। করোনার প্রথম ঢেউ থেকেই ক্রেতারা সতর্ক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে। এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই কড়াকড়ি আরও বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলো তাদের খুচরা বাজারের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বেশ ভালো সময় নিবে, যা আমাদের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ। গত বছরের মত এই বছরেও বড়দিনের বিক্রি ক্ষতিগ্রস্ত হলে কারখানাগুলো তাদের উৎপাদন চালিয়ে নিতে হুমকির মধ্যে পড়বে।
এই পোশাকশিল্প উদ্যোক্তা আরও জানান, এসবের মধ্যে অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে, বিগত কয়েক মাসে আমরা রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু কোনোভাবেই প্রকৃত অবস্থার ভুল ব্যাখ্যার কোনো সুযোগ নেই। বরং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সামনের দিনগুলোতে যেকোনো ধরনের ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আমাদের সতর্ক হতে হবে।
আরো পড়ুন:
অভিবাসীর সংখ্যায় ষষ্ঠ এবং রেমিট্যান্স গ্রহণে ৮ম বাংলাদেশ