নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: বিআরটির প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় গাজীপুরসহ টঙ্গীতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে আগে থেকে যানজট লেগে থাকতো। এর মধ্যে তুরাগ নদের ওপর সেতুর স্লাব ভেঙ্গে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
গাজীপুরসহ বেশ কয়েকটি জেলার ঢাকামুখী হাজারো লোকজন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কটি দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। মহাসড়কে গত দুইদিন ধরে তীব্র যানজটে হাজার হাজার যাত্রী সাধারণকে প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। যাত্রার শুরুতেই যানজটে নাকাল অনাহুত ভোগান্তিতে মানুষের চোখেমুখে এক রাশ বিরক্তি আর এতে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বয়স্ক ও শিশুরা।
গাজীপুরে নিত্যদিনের যানজট ও সেতু ভাঙ্গার কারণে যানজট যেন সীমাহীন পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে।
ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী বাজার থেকে ভোগড়া বাইপাস, কামাড়পাড়া সড়ক ও টঙ্গী কালীগঞ্জ সড়কের নিমতলী এলাকা পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটারেরও বেশি সড়ক ও মহাসড়ক জুড়ে তীব্র যানজট দেখা দেয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টঙ্গীর প্রায় সব শাখা সড়কগুলোতেও যানজট বাড়তে থাকে। টঙ্গী বাজার ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের ওপর দিয়ে হাজার হাজার যাত্রী ও পথচারীদের পায়ে হেটে পার হতে দেখা গেছে। এতে ভোগান্তিতে যেন শেষ নেই।
কাপাসিয়া থেকে আসা মাইনুল হোসেন শাহবাগ যাওয়ার জন্য বাসে উঠেন। যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে পৌঁছান টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায়। সে সময় কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, বিকল্প সড়কে ভোগান্তি বেড়েছে, সেই সঙ্গে সঠিক সময়ে নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়া এবং কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনায় এমন ভোগান্তি কারণ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
অনাবিল পরিবহনের চালক ইউছুব মিয়া বলেন, সকাল সাড়ে ৭টা থেকে গাড়ি নিয়ে বড়বাড়ি এলাকায় বসে আছি। প্রতি কিলোমিটার পথ যেতে সময় লাগছে দেড় ঘণ্টারও বেশি। যানজটের কারণে বাসের অধিকাংশ যাত্রী বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটে রওনা দিয়েছেন।
কোনাবাড়ি থেকে আসা আব্দুল করিম বলেন, গত তিন দিন আগে কুমিল্লা থেকে কোনাবাড়ি এলাকায় ছেলের শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে এসেছেন। বাড়িতে জরুরি কাজ থাকায় চলে তাকে যেতে হচ্ছে। ভোরে গাড়িতে উঠার পর ৫ থেকে ৭ মিনিট গাড়ি চলেছে। এর পর থেকে গাড়ি এদিকও যায় না ওদিকও যায় না। গাড়িতে এক ঘণ্টার মতো বসে থেকে নেমে হাঁটতে থাকেন তিনি। হাঁটতে হাঁটতে চৌরাস্তা এসে কিছুক্ষণ একটি চায়ের দোকানে বসে বিশ্রাম নিয়ে নিলেন। বিকাল সাড়ে ৩টায় টঙ্গী হোসেন মার্কেটে এসে খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়েন তিনি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ থাকায় মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। তবে শুক্রবার দুপুর থেকে যানবাহনের মোড় পরিবর্তন করা হয়েছে। গাজীপুর থেকে ঢাকায় ঢুকবে তুরাগ নদের ওপর বেইলি ব্রিজ দিয়ে আর ঢাকা থেকে গাজীপুরের ঢুকবে আব্দুল্লাপুর হয়ে কামাড়পাড়া ব্রিজ দিয়ে। তবে যানজট কিছুটা কমেছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (সেতু অংশ) প্রকল্প পরিচালক মো. মহিরুল ইসলাম খান জানান, ব্রিজটির সংস্কারের কাজ শুরু হয়ে গেছে। আগামী ১৪ দিনের মধ্যে সংস্কারের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন তিনি।
আরো পড়ুন: