নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় নৌবাহিনী এবং মুক্তিবাহিনীর যৌথ নৌ-কমান্ডো অভিযানের ঘটনা নিয়ে লেখা ‘অপারেশন এক্স’ বইটির বাংলা সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন এ তথ্য জানিয়েছে।
‘অপারেশন এক্স’ বইটি লিখেছেন ক্যাপ্টেন এমএনআর সামন্ত এবং সন্দীপ উন্নিথান। অপারেশনটির পরিকল্পনা করেছিলেন তৎকালীন ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এসএম নন্দা ও ক্যাপ্টেন (পরবর্তীতে ভাইস অ্যাডমিরাল) মিহির কে রায়। যাকে বাস্তবে রূপদান করেছিলেন ক্যাপ্টেন এমএনআর সামন্ত।
৪৫০ জনেরও বেশি নৌ-কমান্ডোকে প্রশিক্ষণ দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানে অনুপ্রবেশ করানো হয়েছিল যাতে নৌযান, জেটি এবং সামুদ্রিক অবকাঠামো ধ্বংস করে পাকিস্তানি সামরিক ও খাদ্য সরবরাহ লাইনগুলোকে ব্যাহত করে দেওয়া হয়। যাতে পাকিস্তানি বাহিনী নিজেদের জন্য পুনরায় রসদ যোগান দিতে না পারে। ফলে শেষ পর্যন্ত ১৩ দিনের মধ্যেই তাদের দ্রুত আত্মসমর্পণ করতে হয়। কমান্ডো অপারেশনের পাশাপাশি, বইটিতে গানবোট পদ্মা এবং পলাশ দিয়ে মোংলা বন্দরে অভিযানের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর দেওয়া গানবোট দু’ টিতে ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশেরই নাবিক ছিলেন।
নেভাল কমান্ডো অপারেশন এক্স বা এনসিও(এক্স) ছিল ‘অপারেশন জ্যাকপট’- এর অংশ, যার অধীনে মুক্তিবাহিনীর গোপন প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র সরবরাহ করা হয়। সামগ্রিকভাবে ১৯৭১ সালের আগস্ট থেকে নভেম্বরের মধ্যে কমান্ডোরা এক লাখ টনের শত্রু নৌযান ডুবিয়ে ও বিকল করে দেন। একই সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের বন্দরগুলো সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ করেন। প্রকৃতপক্ষে এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বিশ্বে পরিচালিত বৃহত্তম গোপন অভিযান। ৪৮ বছর ধরে অপ্রকাশিত থাকা এই গল্পটি প্রথম ইংরেজিতে প্রকাশিত হয় ২০১৯ সালে। ক্যাপ্টেন এমএনআর সামন্তের ব্যক্তিগত নোট এবং অপারেশনে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় নৌ সেনাদের এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার আলোকে সংকলিত হয়েছে। প্রখ্যাত লেখক এবং সাংবাদিক সন্দীপ উন্নিথান একটি পাঠযোগ্য উত্তেজনাপূর্ণ গতিময় ভাষায় বইটি লিখেছেন।
এ অসাধারণ বইটির বাংলা সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাই স্বামী। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন এ বীরত্বপূর্ণ অভিযানে অংশ নেওয়া ভারতীয় ও বাংলাদেশি প্রবীণ সৈন্যরা ও লেখক সন্দীপ উন্নিথান।
আরো পড়ুন:
শীঘ্রই মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে: শাজাহান খান