প্রচ্ছদ

বন্যার পানিই যে রেস্তোরাঁর মূল আকর্ষণ

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: খেতে খেতে সমুদ্রদর্শন বা বিশাল নদীর বুকে নৌযানের রেস্তোরাঁয় বসে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করা অথবা সুন্দর কোনো লেককে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা রেস্তোরাঁ পর্যটনশিল্পে হরহামেশাই দেখা যায়। তাই বলে খোলা আকাশের নিচে বন্যার পানিতে বসে রেস্তোরাঁয় খাওয়ার আয়োজন! এমনটাই ঘটেছে থাইল্যান্ডে।

সম্প্রতি দিয়ানমু নামের ক্রান্তীয় ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতে থাইল্যান্ডের ৩৩টি প্রদেশে ব্যাপক বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে ৩ লাখ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও ৯ জন মারা গেছে। অথচ সেই বন্যাই আশীর্বাদ হয়ে এসেছে ননথাবুড়ির চাওপ্রায়া অ্যানটিক ক্যাফের জন্য। এটি ব্যাংককের প্রাণকেন্দ্র থেকে একটু দূরে নদীতীরবর্তী এলাকায় অবস্থিত।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী সপ্তাহেও থাইল্যান্ডে ঝড় ও ভারী বর্ষণ হতে পারে।

বৃষ্টি ও বন্যার মধ্যেই বিকেল ও সন্ধ্যায় খাদ্যরসিকদের ভিড়ে জমজমাট হয়ে ওঠে সেই রেস্তোরাঁ। চেয়ার-টেবিলে গ্রাহকেরা বসতে পারলেও তাঁদের পা ডুবে থাকে পানিতে। আর তখন পাশেই নদীর ওপর দিয়ে যদি কোনো নৌযান চলে যায়, ঢেউ এসে লাগে খাবার টেবিলে। কখনো কখনো ঘোলা, নোংরা পানি থেকে কাপড় বাঁচাতে চেয়ারের ওপর চড়ে বসতে হয় গ্রাহকদের।

যখন বন্যা শুরু হয়েছিল, তখন রেস্তোরাঁর মালিক তিতিপর্ন জুটিম্যানন প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করবেন বলেই ভাবছিলেন। আচমকা তাঁর মাথায় আসে পানির মধ্যে বসে খেতে নিশ্চয়ই গ্রাহকদের আপত্তি থাকবে না। যেই কথা সেই কাজ। পানির মধ্যেই শুরু করলেন গ্রাহকসেবা।

এএফপিকে তিনি বলেন, ‘গ্রাহকদের মুখে মুখে এ রেস্তোরাঁর কথা ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি পোস্ট করেন। ফলে যাঁরা একটু ভিন্ন আয়োজন পছন্দ করেন, তাঁদের কাছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে এটি জনপ্রিয়তা পায়।

করোনা পরিস্থিতির কারণে ব্যাংককে দীর্ঘদিন রেস্তোরাঁ ও পানশালাগুলো বন্ধ ছিল। থাই রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, গত মাসে দেশটির কর্তৃপক্ষ রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়ার অনুমতি দেয়।

বন্যার মধ্যে রেস্তোরাঁ চালানো অনেক কঠিন। তিনি বলেন, পানি ভেঙে গ্রাহকদের খাবার টেবিল পর্যন্ত নিয়ে যেতে বেশ বেগ পেতে হয়। দিনশেষে এখানকার কর্মীদের গা থেকে কাদামাটি পরিষ্কার করতে হয়।

রেস্তোরাঁটির ৪৯ বছর বয়সী এক ভোজনরসিক গ্রাহক বলেন, ‘ইদানীং অর্থনৈতিক অবস্থা খুব বেশি ভালো না…আমি মনে করি, এটা খুব ভালো পরিকল্পনা। রেস্তোরাঁর মালিক প্রাকৃতিক দুর্যোগকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়েছেন।’

তবে বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ লোকজনকে বন্যার পানিতে না নামতে বা সাঁতার না কাটার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ, বন্যার পানির সঙ্গে ভেসে আসে পয়োনিষ্কাশনের ময়লা, রাসায়নিক ও শিল্পকারখানার বর্জ্য। এতে ত্বকে সংক্রমণ হতে পারে।

আরো পড়ুন:

শত বিলিয়ন ডলার ক্লাবে মুকেশ আম্বানি

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *