আন্তর্জাতিক

কাবুল বিমানবন্দরের কাছে রকেট হামলা

তিন দিন আগে ১৭০ জনের প্রাণ কেড়ে নেওয়া আত্মঘাতী বোমা হামলার ক্ষত শুকাতে না শুকাতে আবারও আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বিস্ফোরণ ঘটেছে। বিদেশি সৈন্যদের আফগান ছাড়ার শেষ ধাপে পৌঁছানোর আগ মুহূর্তে রোববার বিমানবন্দরের কাছে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে খবর দিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম তোলো নিউজ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায়, বিমানবন্দরের পাশের বিস্ফোরণ স্থানের আশপাশের আকাশে  প্রচুর ধোঁয়া উড়ছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ওই এলাকায় বিস্ফোরণের তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে খবর দিয়েছে বিবিসি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বলেছে, বিস্ফোরণে এক শিশু মারা গেছে বলে আফগান পুলিশের একজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। তবে অসমর্থিত সূত্র কাবুলের এই বিস্ফোরণে এক শিশুসহ দুজনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানিয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠী রোববারের এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অবশ্য শনিবার কাবুল বিমানবন্দরে সম্ভাব্য হামলার শঙ্কার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কমান্ডাররা কাবুল বিমানবন্দরে আরেকটি হামলার আশঙ্কা করছেন। ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে এ হামলা হতে পারে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে বিমানবন্দরের কাছের খাজা বাগরা এলাকার কাছের একটি বাড়িতে রকেট আঘাত হানার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে বলে তোলো নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, কাবুল বিমানবন্দরের কাছে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। স্থানীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে বিস্ফোরণের পরপরই ওই এলাকার আকাশে কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়।
দু’জন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, রকেটের আঘাতের কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিমানবন্দরের উত্তর পাশের এলাকার এক বাড়িতে রকেটটি আঘাত হেনেছে।
এদিকে, কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে রোববার সন্ধ্যায় রকেট হামলার পরপরই কাবুলে পাল্টা সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রয়টার্স যুক্তরাষ্ট্রের দু’জন সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়েছে।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী এক হামলাকারী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দেন। এতে মার্কিন ১৩ সৈন্যসহ অন্তত ১৭০ জনের প্রাণহানি ঘটে। পরে এই হামলার দায় স্বীকার করে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আফগান অনুসারী ইসলামিক স্টেট ইন খোরাসান প্রভিন্স-আইএসকেপি (আইএসআইএস-কে)।
গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুলে তালেবান ঢুকে পড়ার পর যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত সরকার এবং পশ্চিমা সামরিক বাহিনীর পতন ঘটে। যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক বাহিনী তালেবানের তড়িৎগতির অভিযানে দেশ দখলের মুখে আফগান ছাড়তে শুরু করেছে।
আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে বিদেশি সৈন্যদের পুরোপুরি প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া প্রায় শেষের দিকে রয়েছে। রোববার যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরাও কাবুলের বিমানবন্দর ছাড়তে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।

/জেড এইচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *