খোকন কুমার রায়:
ভাবতে অবাক লাগে, এমন এক সময়ে অকোষীয় করোনা ভাইরাস সমগ্র বিশ্বকে স্তব্ধ করে রেখেছে, যখন অতি আধুনিক দেশগুলো নিজেদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি ও শক্তি সামর্থ্য প্রদর্শনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত ছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণের পর থেকে কারো কোনো আওয়াজ পাচ্ছি না। যুদ্ধ-যুদ্ধ ভাবটাও নেই। সকলেই ব্যস্ত, করোনা বিরোধী যুদ্ধে।
অতি আধুনিক কালের বর্তমান বিশ্বকে করোনা কী শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে? অকোষীয় একটা অদৃশ্য প্রাণীও তোমাদের কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত যুদ্ধজাহাজ, মিসাইল, মিগ-এর চেয়েও শক্তিশালী। তোমরা একটি অদৃশ্য প্রাণী হতে নিজেদের সুরক্ষার ব্যবস্থা না করে অন্য মানুষকে মারার জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে যুদ্ধাস্ত্র বানাচ্ছ এবং মানুষও মারছ। এইবার বোঝ, তোমাদের বিলিয়ন ডলারের যুদ্ধাস্ত্রের চেয়ে একটি অকোষীয় প্রাণী অনেক বেশি শক্তিশালী। কাজেই কোনো কিছুকে তুচ্ছ বা অবহেলা করা ঠিক নয়।
আশ্চর্য বিষয়, করোনা সংক্রমণের পর হতে সন্ত্রাসবাদ, আক্রমণাত্মক কর্মকান্ড প্রভৃতি ব্যাপকভাবে কমে গেছে। বিশ্বে এখন একটা শান্তি-শান্তি ভাব এসেছে, যদিও মানুষের মন এখন অশান্ত, ভবিষ্যত অনিশ্চয়তায়।
করোনা আমাদের শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের প্রাণঘাতী যুদ্ধাস্ত্রের চেয়ে মানুষের খাদ্য ও সুরক্ষা সামগ্রীর গুরুত্ব বেশি।
কাজেই, নীতিনির্ধারকগণের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক, আর মানুষের ন্যূনতম অত্যাবশ্যকীয় চাহিদা যথা- খাদ্য, চিকিৎসা প্রভৃতির যথাযথভাবে পূরণ করার ব্যবস্থা হোক।
প্রাণঘাতী অস্ত্রের চেয়ে মানুষের বেঁচে থাকার পুষ্টি ও চিকিৎসা সর্বাধিক গুরুত্ব পাক- এটাই প্রত্যাশা।
লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক, ধূমকেতু.কম।