খোকন কুমার রায়:
ঐতিহ্যময় অতীত থেকে আমরা দেখেছি, যে কোনো রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সংকটে বাংলার মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে ত্রাতা হিসেবে এবং অনাহারীর মুখে অন্ন তুলে দেয়। এটি আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য। বর্তমান করোনা সংকটেও সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ ত্রাণ বিতরণ করে চলেছেন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত প্রচারিত হচ্ছে এবং ফেসবুক ভরপুর ত্রাণ বিতরণের ছবিতে।
অত্যন্ত শান্তি লাগে যখন এই খবরগুলো পাই এবং ছবিগুলো দেখি। বর্তমান সংকটে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত- বিভিন্ন সামাজিক শ্রেণীর পাশে দাঁড়িয়েছেন সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সুহৃদ ব্যক্তিবর্গ। তাদের প্রত্যেককে সাধুবাদ জানাই।
বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে দেখতে পাই, এ সংকট অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও দীর্ঘমেয়াদী সংকটের সৃষ্টি করতে পারে এবং হয়তো আরো অনেকদিন লকডাউন অবস্থায় থাকতে হতে পারে। যে কারণে ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়ের বিষয়টি বর্তমান প্রেক্ষাপটে অতি গুরুত্বপূর্ণ।
দেখা যাচ্ছে সবাই মিলে সমন্বয়হীনভাবে ত্রাণ বিতরণ করছেন। এ অবস্থায় অনেক পরিবার একাধিক ব্যবস্থায় অধিক ত্রাণ পাচ্ছে আর অন্যদিকে হয়তো কোনো কোনো পরিবার বঞ্চিত হচ্ছে। তাই যাদের ত্রাণ প্রয়োজন তারা যেন সকলেই সমানুপাতিক হারে পায় এ বিষয়টি বিবেচনায় রাখা জরুরি হয়ে পড়েছে। নতুবা দীর্ঘমেয়াদে সংকট আরো ঘনীভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন যে, যারা ত্রাণ বিতরণ করতে চান তারা যেন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে সমন্বিতভাবে ত্রাণ বিতরণে অংশীদার হন।
এ অবস্থায় আসুন আমরা সবাই প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে সমন্বিতভাবে ত্রাণ বিতরণ করে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হই এবং দীর্ঘমেয়াদী ত্রাণের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সুশৃঙ্খলভাবে সমাজের উপকার করি ও গর্বিত নাগরিক হই।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ত্রাণ বিতরণ করি এবং অন্যদের উৎসাহিত করি। তাহলে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাপী চলমান এই যুদ্ধে জয় আমাদের সুনিশ্চিত।
লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক, ধূমকেতু.কম।