৪৪তম বিসিএস পরীক্ষার আসন বিন্যাস প্রকাশিত
৪৪তম বিসিএস পরীক্ষার আসন বিন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পূর্বনির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী আগামী ২৭ মে (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত হবে। রোববার (২২ মে) পরীক্ষার আসন বিন্যাস প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৪৪তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আগামী শুক্রবার ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
পরীক্ষা সংক্রান্ত জরুরি নির্দেশনা
১. প্রার্থীদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৮ (আট) ডিজিট সংবলিত হতে হবে। রেজিস্ট্রেশন নম্বরের ডিজিটগুলো উত্তরপত্রের প্রযোজ্য ঘরে কালো কালির বল পয়েন্ট কলম দিয়ে লিখে প্রযোজ্য বৃত্ত ভরাট করতে হবে।
২. প্রতিটি উত্তরপত্রে সেট নম্বরের নির্ধারিত স্থানে সেট নম্বর এবং সেট নম্বরের জন্য নিচের সংশ্লিষ্ট বৃত্তটি মুদ্রিত থাকবে। প্রার্থীদের উত্তরপত্রে সেট নম্বর লেখা এবং সেট নম্বরের বৃত্ত ভরাট করার প্রয়োজন হবে না। সকাল ১০টায় প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর প্রার্থী তার প্রশ্নপত্রের সেট নম্বর এবং উত্তরপত্রের সেট নম্বর অভিন্ন কি না, তা চেক করে নিশ্চিত হবে। প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্রের সেট নম্বর অভিন্ন না হলে সঙ্গে সঙ্গে পরিদর্শককে জানাবে।
৩. প্রশ্নপত্র দেওয়ার পর (সকাল ১০টা) কোনো প্রার্থীকে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। প্রশ্নপত্র নেওয়ার পর পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত (দুপুর ১২টা পর্যন্ত) কোনো প্রার্থী পরীক্ষা কক্ষ ত্যাগ করতেও পারবেন না।
৪. কোনো প্রার্থীর ছবি, স্বাক্ষর, প্রবেশপত্র এবং উত্তরপত্রের নাম ও রেজিস্ট্রেশন নম্বরের গরমিলসহ কোনো ধরনের অনিয়ম ধরা পড়লে ওই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৫. পরীক্ষা কেন্দ্রে বই-পুস্তক, সব ধরনের ঘড়ি, মোবাইল ফোন, ক্যালকুলেটর, সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যাংক কার্ড/ক্রেডিট কার্ড সদৃশ কোনো ডিভাইস, গহনা ও ব্যাগ আনা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
৬. পরীক্ষা হলের গেটে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশের উপস্থিতিতে প্রবেশপত্র এবং মেটাল ডিটেক্টরের সাহায্যে মোবাইল ফোন, ঘড়ি, ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ নিষিদ্ধ সামগ্রী তল্লাশির মধ্য দিয়ে প্রার্থীদের পরীক্ষা হলে প্রবেশ করতে হবে।
৭. পরীক্ষার সময় প্রার্থীরা কানের ওপর কোনো আবরণ রাখবেন না, কান খোলা রাখতে হবে। কানে কোনো ধরনের হিয়ারিং এইড ব্যবহারের প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শপত্রসহ কমিশনের অনুমোদন নিতে হবে।
৮. কোনো প্রার্থী পরীক্ষায় নকল করলে বা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে অসদুপায় অবলম্বন করলে কিংবা কোনো অসদাচরণের জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৯. প্রার্থীদের কেন্দ্র পরিবর্তনের কোনো আবেদন বিবেচনা করা হবে না।
১০. প্রার্থীর আবেদনপত্রে গুরুতর ত্রুটি ধরা পড়লে পরীক্ষার আগে বা পরে যেকোনো পর্যায়ে উক্ত প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হবে।
৪৪তম বিসিএসে মোট আবেদন করেছেন ৩ লাখ ৫০ হাজার ৭১৬ জন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ না হওয়ার কারণে এ বিসিএসে আবেদনের সময় এক মাস বাড়ানো হয়েছিল। প্রথম দফায় আবেদনের শেষ সময় ছিল ৩১ জানুয়ারি। পরে তা বাড়িয়ে ২ মার্চ নির্ধারণ করে পিএসসি।
গত বছরের ৩০ নভেম্বর ৪৪তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। এ বিসিএস হবে সাধারণ (জেনারেল)। এ বিসিএসে নেওয়া হবে ১ হাজার ৭১০ জনকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষা ক্যাডারে নেওয়া হবে ৭৭৬ জন। এ ছাড়া প্রশাসন ক্যাডারে ২৫০ জন, পুলিশ ক্যাডারে ৫০, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ১০, আনসার ক্যাডারে ১৪, নিরীক্ষা ও হিসাবে ৩০, করে ১১, সমবায়ে ৮, রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিকে ৭, তথ্যে ১০, ডাক ২৩, বাণিজ্যে ৬, পরিবার পরিকল্পনায় ২৭, খাদ্যে ৩ ও টেকনিক্যাল ক্যাডারে ৪৮৫ জনকে নেওয়া হবে।
পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছিল ৪১তম বিসিএসে। ওই বিসিএসে ৪ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি প্রার্থী আবেদন করেছিলেন। ৪৩তম বিসিএসে আবেদন পড়েছিল ৪ লাখ ৩৫ হাজার ১৯০টি। ৪০তম বিসিএসে আবেদন পড়েছিল ৪ লাখ ১২ হাজার। আবেদনের হিসাবে ৪৩তম বিসিএস দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
প্রিলিমিনারি পরীক্ষার বিষয় ও নম্বর বণ্টন: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ৩৫, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য ৩৫, বাংলাদেশ বিষয়াবলি ৩০, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি ২০, ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ১০, সাধারণ বিজ্ঞান ১৫, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি ১৫, গাণিতিক যুক্তি ১৫, মানসিক দক্ষতা ১৫, নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসনের ওপর ১০ নম্বরের পরীক্ষা হবে।
লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর বণ্টন: সাধারণ ক্যাডারের জন্য লিখিত পরীক্ষায় বাংলা ২০০, ইংরেজি ২০০, বাংলাদেশ বিষয়াবলি ২০০, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি ১০০, গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা ১০০ (মানসিক দক্ষতা পরীক্ষার এমসিকিউ ৫০টি প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটি শুদ্ধ উত্তরের জন্য ১ নম্বর পাবেন এবং প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য দশমিক ৫০ নম্বর কাটা যাবে) এবং সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ১০০। আর মৌখিক পরীক্ষা হবে ২০০ নম্বরের। তবে প্রফেশনাল/টেকনিক্যাল ক্যাডারের প্রার্থীদের বাংলায় ২০০ নম্বরের পরিবর্তে ১০০ নম্বর, সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ের বদলে সংশ্লিষ্ট পদের প্রাসঙ্গিক বিষয়ে ২০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে।
প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার সিলেবাসপ্রাপ্তি: প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ও লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক সিলেবাস পিএসসির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। আগ্রহী প্রার্থীরা কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে তাদের প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস ডাউনলোড করতে পারবেন।