নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: গর্ভে নষ্ট হয়ে যাওয়া ভ্রুণ গর্ভপাত ঘটানোর পর তীব্র যন্ত্রনা শুরু হয় সোমার। ঘরে প্রবেশের জন্য একমাত্র রাস্তা স্বামীর দোকানের ভেতরে। দোকান বন্ধ করে স্বামী প্রথম স্ত্রীর কাছে চলে যাওয়ায় ভেতরে আটকা পড়েন তিনি। যন্ত্রণায় ছটফক করা সোমার অবস্থা বেগতিক দেখে প্রতিবেশী এক যুবক জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন।

পরে মধ্যরাতে পুলিশ বাসাটির দেয়াল ভেঙে নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এমন ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের পাটগুদাম এলাকায়। ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ কামাল আকন্দ এ তথ্য জানিয়েছেন।

ব্যাটারি ব্যবসায়ী মো. আবদুল হাকিম তার দ্বিতীয় স্ত্রী সোমা আক্তারকে নিয়ে পাটগুদাম জে.সি গুহ রোডে বসবাস করেন।

কিছুদিন আগে গর্ভধারন করেন সোমা। গর্ভকাল ৫ মাস হয়ে এলে শারীরিক জটিলতা নিয়ে গত রোববার পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন গর্ভে অন্তত ২ মাস পূর্বে ভ্রুণের মৃত্যু হয়েছে। ওই অবস্থায় গর্ভপাত ঘটানো হয় সোমার। এর পর শরীরে রক্ত দেওয়ার কথা থাকলেও তা না করে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। গত সোমবার রাত দেড়টার দিকে সোমার অসম্ভব যন্ত্রনা শুরু হয়। তার চিৎকারে আশপাশের মানুষ জেগে যান। ওই সময় মেয়ের পাশে ছিলেন মা রাহিমা খাতুন।

মেয়ের যন্ত্রণা হলেও বাসা থেকে বের হওয়ার কোনো রাস্তা খুঁজে পাচ্ছিলেন না মা রাহিমা। ওই বাসার ভেতরে প্রবেশ বা বাহির হবার জন্য কোনো রাস্তা রাখা হয়নি। ‘মেরাজ এন্টারপ্রাইজ’ নামে আবদুল হাকিমের দোকানের ভেতর দিয়েই যাওয়া আসা করতে হয়।

সোমবার রাতে হাকিম প্রথম পক্ষের স্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে মুঠোফোন বন্ধ করে দেন। দ্বিতীয় স্ত্রী সোমা যন্ত্রনায় ছটফক করলেও মুঠোফোন বন্ধ থাকায় স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি।

এমন অবস্থায় সোমার প্রতিবেশী এক যুবক সোমবার রাত ২টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন বিস্তারিত জানিয়ে।

কোতোয়ালী মডেল থানার এসআই শুভ্র সাহা ঘটনাস্থলে গিয়ে পড়েন বেকায়দায়। বাসাটিতে প্রবেশের কোনো রাস্তা না পেয়ে পেছন দিকের দেয়াল ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়। আশপাশের লোকজনের সহায়তায় দেয়াল ভেঙে নারীটিকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

৫ বছরের সংসারে আবু হোরাইরা নামে আড়াই বছরের একটি সন্তান রয়েছে সোমার। সোমা আক্তার আজ মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, ‘এখন অনেকটাই সুস্থবোধ করছি।’

আরো পড়ুন:

বান্দরবানে উদযাপিত হচ্ছে শুভ মধুপূর্ণিমা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *