বিনোদন প্রতিবেদন, ধূমকেতু ডটকম: সুরের ইন্দ্রজালে উপমহাদেশের মানুষের হৃদয় জয় নেওয়া কিংবদন্তী সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর। ২৮ সেপ্টেম্বর ছিল তার জন্মদিন। ৯২ বছরে পা দিলেন ভারতীয় এই সুর-সম্রাজ্ঞী।
তবে এবারের জন্মদিন উদযাপন করতে চাননি গানের পাখি লতাজি। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘উদযাপনের কী আছে? করোনাভাইরাস আসার পরে এটি আমার দ্বিতীয় জন্মদিন। আমাদের জীবন বদলে গেছে। পরিবার ও প্রিয় মানুষেরা আমার সঙ্গে আছেন, এটাই সেরা উপহার। প্রিয়জনদের সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তই খুব দামী। ’
প্রখ্যাত এ কণ্ঠশিল্পীর জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ভাগ্যবতী। আমি চাই ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা আমাকে ভালবাসতে থাকুক। তাদের শুভকামনাতেই এতদূর আসতে পেরেছি। ’
১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মধ্যবিত্ত মারাঠি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন লতা মঙ্গেশকর। তার তিনবোন আশা ভোঁসলে, ঊষা মঙ্গেশকর, মীনা মঙ্গেশকর এবং ছোট ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর।
লতা মঙ্গেশকরের বাবা দীননাথ মঙ্গেশকর ছিলেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী এবং মঞ্চাভিনেতা। বাবার কাছে হাতেখড়ি হওয়ার পর ওস্তাদ আমানত আলী খাঁ সাহেবের কাছে তালিম নিয়েছেন তিনি।
১৯৪৮ সালে ‘মজবুর’ সিনেমায় গান গাওয়ার সুযোগ পান লতা। সিনেমাটিতে ‘দিল মেরা তোড়া’ শিরোনামের গান গেয়েছিলেন তিনি। তবে আলোচনায় আসেন এর পরের বছর ‘মহল’ সিনেমায় ‘আয়েগা আনেওয়ালা’ গানটি দিয়ে। প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেত্রী মধুবালার লিপে গানটি জনপ্রিয়তা লাভ করে।
লতা মঙ্গেশকরের গান পঞ্চাশের দশকে বলিউডে অপরিহার্য হয়ে ওঠে। এরপর থেকে একের পর এক কালজয়ী গান উপহার দিয়েছেন তিনি। ‘পরিচয়’ সিনেমার ‘বীতি না বিতাই’ গানটির জন্য ১৯৭৩ সালে সেরা গায়িকা হিসেবে প্রথমবার ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি।
লতা মঙ্গেশকর প্রায় ৩৬টি ভাষায় গান গেয়েছেন। তার গাওয়া কালজয়ী বাংলা গানের মধ্যে রয়েছে ‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন’, ‘প্রেম একবার এসেছিল নীরবে’, ‘ও মোর ময়না গো’, ‘ও পলাশ ও শিমুল’, ‘আকাশ প্রদীপ জ্বেলে’সহ আরো অনেক গান।
দীর্ঘ সংগীত জীবনে লতা মঙ্গেশকর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, পদ্মভূষণ, দাদাসাহেব ফালকে অ্যাওয়ার্ড, ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কার, এনটিআর জাতীয় পুরস্কার ছাড়াও ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘ভারতরত্ন’ লাভ করেছেন।
১৯৭৪ সালে সবচেয়ে বেশি গানের শিল্পী হিসেবে গিনেস বুকে স্থান পান লতা মঙ্গেশকর। এছাড়া ফ্রান্সের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘অফিসার দে লা দি’ অনারসহ দেশি-বিদেশি অসংখ্য পুরস্কার-সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তিনি।
আরো পড়ুন: